ব্যাটিংয়ে বাড়তি মনোযোগ দিতে অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন মুমিনুল হক। তবুও হতাশার বৃত্ত ভাঙতে পারছেন না, রানের দেখা পাচ্ছে না এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। অ্যান্টিগা টেস্টেও নিষ্প্রাণ মুমিনুলের ব্যাট। সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্তউইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে দুইজনই শূন্য রানে ফিরেছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে মুমিনুল ৪ আর শান্ত করেন ১৭ রান।

মুমিনুল-শান্তসহ টেস্ট দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভুগছেন বলে জানালেন বাংলাদেশ দলের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে এক ভিডিও বার্তায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

ডমিঙ্গো বলেন, ‘এই মুহূর্তে ছেলেদের আত্মবিশ্বাস একেবারে তলানিতে। আমাদের বড় কিছু খেলোয়াড়; মুমিনুল, শান্তসহ কিছু ছেলে আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভুগছে। ক্রিকেটে আত্মবিশ্বাস অনেক বড় একটা ব্যাপার। কিন্তু এই মুহূর্তে তাদের ব্যাটিংয়ে সেটা নেই।’

দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের তিন দিনের খেলা শেষ হয়েছে। যেখানে হারের প্রহর গুনছে সফরকারীরা। প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। পরে উইন্ডিজকে অলআউট করে ২৬৫ রানে। এতে মাথায় ওপর ১৬২ রানের লিড দাঁড়ায়। এই রান শোধ দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৩ রানের লিড সাকিব আল হাসানের দলের। তাতে ক্যারিবীয়দের সামনে ৮৪ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায়।

দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৯ রান তুলেছে স্বাগতিকরা। জয়ের জন্য বাংলাদেশ দলের প্রয়োজন আর ৭ উইকেট। উইন্ডিজের দরকার ৩৫ রান। এমন অবস্থায় জয়ের পাল্লা ভারি ক্যারিবীয়দের দিকেই। দলের এমন পরিস্থিতির জন্য ব্যাটসম্যানদের কাঠগড়ায় তুললেন ডমিঙ্গো। তামিম ইকবাল, লিটন দাস, মাহমুদুল হাসান জয়দের উইকেট বিলিয়ে দেওয়ায় প্রক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ কোচ।

ডমিঙ্গো বলেন, ‘দুই ইনিংসেই অনেকগুলো সফট ডিসমিসাল হয়েছে। ব্যাটিংয়ের সময় অনেকগুলো ভুল সিদ্ধান্তও ছিল। প্রথম ইনিংসে ১০৩ রান, এটা আরো বেশি হতে পারতো। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৫ রান, এটাও আরো বেশি হওয়া দরকার ছিল। সারমর্ম করতে গেলে বলতে হয়, এক টেস্টে এতগুলো সফট ডিসমিসালই নির্দিষ্ট করে দায়ী।’

সাকিব ছাড়া প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ প্রায় সকলেই। ৬ ব্যাটসম্যান শূন্য রানে আউট হন। দ্বিতীয় ইনিংসে সাকিব, সোহানের সঙ্গে জয় রান করেছেন। বাকিরা আবারও ব্যর্থ। ডমিঙ্গো জানালেন, সব রকমের বাড়তি আওয়াজ, সমালোচনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে ক্রিকেট বল খেলার দিকেই নজর দিতে হবে তাদের।

ডমিঙ্গো বললেন, ‘দিনের শেষে ব্যাটসম্যানদের এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ফর্মে আসতে গেলে মানসিক দিক দিয়ে শক্ত হতে হবে। এ ম্যাচে এবং পরেরটির মধ্যে টেকনিক্যাল পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই। সব রকমের বাড়তি আওয়াজ, সমালোচনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে ক্রিকেট বল খেলার দিকেই নজর দিতে হবে।’

সঙ্গে যোগ করেন ডমিঙ্গো, ‘হ্যাঁ, এগুলো করার চেয়ে বলা সহজ। তবে সেরা খেলোয়াড়েরা এ সব করার সামর্থ্য রাখে। টেকনিক্যাল পরিবর্তনের সুযোগ নেই, মানসিক দিক দিয়ে প্রস্তুতিই আসল। আমরা জানি তারা ভালো খেলোয়াড়, এর আগে রান করতে দেখেছি তাদের। ফলে আত্মবিশ্বাসটা ফিরে পেতে হবে, এ জন্য কাজ করতে হবে।’

টিআইএস/এনইউ