নাজমুল হোসেন শান্ত কিছুতেই মাঠ ছাড়তে চাইছেন না। ড্রেসিংরুম থেকে তামিম ইকবাল দুই হাত ওপরে তুলে হতাশা প্রকাশ করেন। হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও আম্পায়ারের দেওয়া সিদ্ধান্তে বিরক্ত। কিন্তু আইনের মারপ্যাঁচে এর বেশি প্রতিবাদ করার সুযোগ নেই বাংলাদেশ দলের। আগের ওভারেই ‘আম্পায়ার্স কল’ এর শিকার হয়ে ফেরেন এনামুল হক বিজয়। এরপর সাজঘরে শান্ত।

২ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ৭৭ রান তুলে মধ্যাহ্নভোজ বিরতিতে যায় সফরকারীরা। শান্ত ১৬ ও বিজয় ৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরু করেন। এই সেশনে বাংলাদেশ দল ৮২ রান তুলতে হারিয়েছে আরও ৪ উইকেট। সাকুল্য ৬ উইকেটে স্কোর বোর্ডে ১৪৯ রান নিয়ে চা বিরতিতে গেছে টাইগাররা। লিটন দাস ৩৪ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ৫ রান নিয়ে দিনের তৃতীয় ও শেষ সেশনের খেলা শুরু করবেন।

আগের সেশনে দুইবার আম্পায়ারদের দেওয়া সিদ্ধান্তে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জিতলেও দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশ দল মূল্য চুকিয়েছে আম্পায়ার্স কলে। শান্ত-বিজয়ের আউট দুটো আম্পায়াররা আউট না দিলে পক্ষে আসতে পার‍ত বাংলাদেশ দলের। বলা যায় দুই আম্পায়ার জোয়েল উইলসন আর রিচার্ড ইলিংওয়ার্থে নেওয়া সিদ্ধান্তের জন্য দ্বিতীয় সেশন শেষে অল আউটের শঙ্কায় টাইগাররা।

সেন্ট লুসিয়া টেস্ট একাদশে জায়গা পাওয়া নিয়েই দোটানা ছিল শান্তর। মুমিনুল হককে খেলালে বাদ পড়তে হতো তাকে। তবে মুমিনুলকেই থাকতে হলো একাদশের বাইরে। সেই সুযোগে প্রায় ৮ বছর পর টেস্টে প্রত্যাবর্তন বিজয়ের। দুই জনের ওপরেই নিজেকে প্রমাণ করার চাপ। 

সেই চাপ ভালোভাবেই সামলাচ্ছিলেন তারা। তবে বিপত্তি বাধে ইনিংসের ৩৪তম ওভারে। অভিষিক্ত ফিলিপের নিচু হয়ে আসা বল অফ সাইডে খেলতে গিয়ে লাগে বিজয়ের পায়ে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। শেষ মুহূর্তে রিভিউ নেন বিজয়। কিন্তু লাভ হয়নি। আম্পায়ার্স কলে ফিরতে হয় তাকে। ৩৩ বলে ২৩ রানে সাজঘরে বিজয়।

পরের ওভারেই কাইল মায়ার্সের শিকার শান্ত। লেগ স্ট্যাম্পের বল অনসাইডে খেলতে চেয়েছিলেন এই বাঁহাতি। কিন্তু বল ব্যাট মিস করে লাগে প্যাডে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। নাখোশ শান্ত রিভিউ নেন। দেখা যায় বল লেগ স্ট্যাম্পের একদম উপরে লেগে বেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আম্পায়ার্স কলের কারণে মাঠ ছাড়তে হয় শান্তকে। ৪ চারে ৭৩ বলে ২৬ রান করেন তিনি। 

নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে আসেন সাকিব আল হাসান। যোগ দেন লিটন দাসের সঙ্গে। তবে আগের দুই ইনিংসে ফিফটি করা সাকিব এবার ফিরলেন ৮ রানে। অথচ এই বাঁহাতি রানের খাতা খোলেন দারুণ চারে। সিলসের আউট সাইড অফের বল পয়েন্টে খেলতে গিয়ে ইনসাইড এজ হন। বল ব্যাট হয়ে আঘাত করে উইকেটে। ২০ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ দল।

সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন লিটন আর নুরুল হাসান সোহান। তবে লিটন সাবলীল ব্যাটিং করলেও সুবিধা করতে পারেননি সোহান। আলজারি জোসেফের শরীর তাক করে তেড়ে আসা বলকে পুল করতে চেয়েছিলেন সোহান। ব্যাটের লাইন মিস করা বল লাগে সোহানের গ্লাভসে। সেটি উইকেটের পিছনে লুফে নেন জসুয়া ডি সিলভা। সোহান ফেরেন ১৯ বলে ৭ রানে।

এরপর অবশ্য দলকে আর বিপদে পড়তে দেননি লিটন। মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় সেশনের বাকি আধাঘণ্টা পার করে দেন তিনি। সপ্তম উইকেটে তাদের অবিচ্ছেদ্য পার্টনারশিপ থেকে এসেছে ২২ রান।

মজার ব্যাপার হলো দুই সেশনে শেষ হয়েছে ৫১ ওভারের খেলা। যেখানে উইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র‍্যাথওয়েট ৬ জন বোলার ব্যবহার করলেও কোনো স্পিনার আনেননি।

টিআইএস