ধারাভাষ্যকার আতহার আলী খানের সঙ্গে পেসার শরিফুল ইসলাম/ফেসবুক

বাংলাদেশে রাত নামলেও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে সকাল হয়ে গেছে। বাংলাদেশ দল এখন যেখানে অবস্থান করছে, সেই ডমিনিকার অবস্থা একই। ফেরি কাণ্ডের ১২ ঘণ্টার বেশি সময় পার করে ফেলেছে টাইগার ক্রিকেটাররা। সেই যাত্রার দুঃসহ অভিজ্ঞতা ভুলে এবার টি-টোয়েন্টির প্রস্তুতিতে নামছে বাংলাদেশ।

সেন্ট লুসিয়া থেকে ডোমিনিকা, টেস্টের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাঠে নামার প্রস্তুতি। এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে যেতে ভয়ঙ্কর ফেরি যাত্রায় রীতিমত বিধ্বস্ত জাতীয় দলের কয়েকজন ক্রিকেটারসহ বেশ কয়েকজন সদস্য। ডমিনিকায় যাত্রা পথে সমুদ্রের বড় বড় ঢেউ আর ‘মোশন সিকনেসে’ শরিফুল ইসলাম, নুরুল হাসানদের নুইয়ে পড়ার ঘটনা সমর্থকদের মনে বেশ দাগ কেটেছে।

সেই ঘটনার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট শেয়ার করছেন বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং পরামর্শক জেমি সিডন্স। যেখানে সিডন্স জানিয়েছেন, সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার পর হোটেলে পৌঁছে ঘুম থেকে উঠে সেখানকার দারুণ এক চিত্র দেখলেন ক্রিকেটাররা।

সিডন্স লেখেন, ‘আপনাদের প্রায় সবাই সেন্ট লুসিয়া থেকে ডোমিনিকার পথে আমাদের ফেরি ভ্রমণের কথা শুনেছেন অথবা ফুটেজ দেখেছেন। আমাদের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ের জন্য এটা ভয়ংকর এক যাত্রা ছিল। তবে এখন সবাই ঘুম থেকে উঠে হোটেল থেকে এই সুন্দর দৃশ্য দেখছে, বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়ে এবং ফেরি যাত্রা ছাড়া অন্যান্য সব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরে কৃতজ্ঞ।’ 

ডোমিনিকায় ৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ২ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। প্রথমটি ২ ও দ্বিতীয়টি ৩ জুলাই। এই ভয়ঙ্কর যাত্রার মাত্র একদিনের পরেই মাঠের লড়াই। সে জন্য ফেরি কাণ্ড ভুলে আজ শুক্রবার অনুশীলনে নামতে হচ্ছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।

সিডন্স লিখেছেন, ‘আজ সকালে সবাই ভালো আছে এবং কালকের টি-টোয়েন্টি ম্যাচের জন্য অনুশীলনে যাচ্ছে। আমাদের সেরাটা দিতে হবে এবং স্মার্ট ক্রিকেট খেলতে হবে, কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই ফরম্যাটে অনেক বড় ও শক্তিশালী দল।’

সেন্ট লুসিয়া থেকে মার্টিনিক হয়ে ডোমিনিকা। সব মিলিয়ে দীর্ঘ ৫ ঘণ্টার জার্নি। সমুদ্রে ফেরিতে এর আগে এতো সময় কখনোই যাত্রা অভিজ্ঞতা নেই বাংলাদেশ দলের কোনো সদস্যের। যাত্রার আগে দলে ছিল দ্বিধাবিভক্ত, অনেকেই এই যাত্রার পক্ষে ছিলেন না। তবে উপায় ছিল না হাতে। বিমান যাত্রার খরচ আর ঝক্কি ছিল তুলনামূলক বেশি। ফেরি যাত্রা যেমন বাড়তি সময় বাঁচায়, তেমন খরচও।

কিন্তু বিপত্তি বাঁধে দুই দিন আগের সাইক্লোনে। যার কারণে সমুদ্রে ঢেউয়ের তোড়ও বেশি ছিল। এই ঢেউয়ের মধ্যে জার্নি আর ‘মোশন সিকনেসে’, সব মিলিয়ে বিভীষিকাময় এক অভিজ্ঞতাই হয়েছে ক্রিকেটারদের।

ফেরির আকার খুব বড় নয়। এর সঙ্গে ৭-১০ ফুট উচ্চতার ঢেউ মনে ভয় ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। ঢেউয়ের ধাক্কায় ফেরি যেভাবে দুলছিল, তাতে দলের কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাঁহাতি পেসার শরিফুল, উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান, অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ম্যানেজার নাফীস ইকবাল এবং সাপোর্ট স্টাফের এক সদস্য ‘মোশন সিকনেসে’ আক্রান্ত হন। তাদের কয়েকজন বমিও করেন এসময়।

টিআইএস/এনইউ