সপ্তাহ পেরিয়ে যাচ্ছে, ঘরের চুলায় আগুনই জ্বলেনি। খাবার তো নেই, জ্বালানি আর ওষুধের সংকটও উঠেছে চরমে। এমন দুঃসময়ে ক্রিকেটই তাদের দিচ্ছে কিছুটা সান্ত্বনা। এমনটাই পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মানুষের।

দেশের অর্থনৈতিক সংকট এখন চরমে। হাজার সমস্যায় জেরবার হয়ে আছে দেশটি। জ্বালানি ও রান্নার গ্যাস কিনতে দীর্ঘ লাইন। গণপরিবহনও বন্ধ হয়ে আছে বেশ ক’দিন ধরেই। এমন পরিস্থিতিতে স্কুল আর অফিস করতে হচ্ছে বাড়ি থেকে। কবে এই পরিস্থিতির শেষ, কেউ জানে না।

এমন কঠিন সময়েই শ্রীলঙ্কার মাটিতে খেলছে অস্ট্রেলিয়া। টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে জেতার পর ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে শ্রীলঙ্কা। এরপর চলছে টেস্ট সিরিজের লড়াই। প্রথম টেস্ট দেখতে এসেছিলেন উজিত নীলান্ত।

সেখানেই তিনি জানালেন দেশের দুরবস্থার কথা, জানালেন ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসার কথাও। বললেন, ‘দেশে এখন হাজার সমস্যা রয়েছে। মানুষ সব রকমের সমস্যার মুখে। গরিব মানুষ আরও অসহায় হয়ে পড়েছে। সমস্যার শেষ নেই শ্রীলঙ্কায়। আমরা একঘেয়ে জীবনযাপন করছি। কখনও কখনও ৫, ৬ বা ৭ দিন বাড়িতে রান্না হচ্ছে না। জ্বালানি নেই। বাচ্চারা আর হাসে না।’

এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও যখন ক্রিকেট খেলা দেখতে বসেন, তখন কিছুটা ভালো বোধ করেন নীলান্ত। বললেন, ‘শিশুদের মন ভাল নেই। আমরা শিশুদের তাদের যা প্রয়োজন তা দিতে পারছি না। আমরা যখন ক্রিকেট দেখি, তখন এত খারাপ পরিস্থিতিতেও মানসিকভাবে কিছুটা ভাল বোধ করি।’

মাতারা থেকে ট্রেনে চেপে গলে ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন ১৬ বছর বয়সী নেথুমাকসিলা। চলতি বছর গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় বসার কথা ছিল তার। তবে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে প্রস্তুতিতেও ঘাটতি পড়ে গেছে তার। তবে এমন দুঃসময়ে তিনিও ক্রিকেটকেই মন শান্ত করার উপায় হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। বললেন, 'দুঃখের সময়ে আমাদের শুধুই ক্রিকেটটাই আছে। মনটাকে কিছুক্ষণ শান্ত করার জন্য আমরা এখানে ক্রিকেট দেখতে এসেছি।'

এনইউ/এটি