ওয়ানডে সংস্করণে ফিরেই যেন নিজেদের খুঁজে পেয়েছে বাংলাদেশ দল। উইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিধ্বস্ত হয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া টাইগাররা হিংস্র রূপ নিয়ে ফিরেছে পঞ্চাশ ওভারের ফরম্যাটে। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে জয় ৬ উইকেটের। আজ বুধবার দ্বিতীয় ম্যাচে আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে অধিনায়ক তামিম ইকবালের দল। উইন্ডিজকে বেধে ফেলেছে ১০৮ রানেই। এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জিততে সফরকারীদের প্রয়োজন ১০৯ রান।

এদিন ঠিক যেন আগের ম্যাচে উইন্ডিজের ইনিংসের পুনরাবৃত্তি হলো। টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নিয়ে বোলারদের অসাধারণ নৈপুণ্যে স্বাগতিকদের চেপে ধরে বাংলাদেশ। এরপর উইন্ডিজ একশর কোটা ছুঁয়েছে বটে, কিন্তু এগোতে পারেনি বেশি দূর। ৩৩ ওভারে ১০৮ রানেই উইন্ডিজকে গুড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি  উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। নাসুম নেন ৩টি। এর ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জিততে তামিমদের করতে হবে ১০৯ রান। 

গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে আজ উইনিং কম্বিনেশন ভেঙে একাদশে একটি পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে অনবদ্য বোলিং করা পেসার তাসকিন আহমেদকে বাইরে রেখে প্রায় এক বছর পর ফেরানো হয় অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেনকে। সেই মোসাদ্দেকের অফ স্পিন দিয়েই ইনিংস শুরু করেন টাইগার দলপতি। তবে ইনিংসের শুরুটা বেশ দেখেশুনেই করে স্বাগতিক শিবির। 

পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে কোনো উইকেট হারাতে দেননি দুই ওপেনার শাই হোপ আর কাইল মায়ার্স। এ সময় ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে স্কোর বোর্ডে ২৬ রান তোলে তারা। যদিও একাধিক সুযোগ মিসের আক্ষেপে পুড়তে হয় সফরকারীদের। সেই আক্ষেপে প্রলেপ পড়ে ১১তম ওভারে। শুরুতে সাফল্যে এনে দেন মোসাদ্দেক। একটু টেনে দেওয়া বল আগেভাগে ব্যাট চালিয়ে মিস করে বোল্ড হন ১৭ রান করা মায়ার্স।

এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইন্ডিজের উইকেট তুলে নেন টাইগার বোলাররা। এবার দৃশ্যপটে নাসুম আহমেদ। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করেও উইকেট পাননি এই বাঁহাতি স্পিনার। আজ সেই আক্ষেপে ঘোচালেন শুরুতে শামার ব্রুকসকে বোল্ড করে। বাঁহাতি স্পিনারের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে ইনসাইড এজ হয়ে ৫ রানে ফেরেন ব্রুকস।

ইনিংসের ১৮তম ওভারে জোড়া শিকার নাসুমের। আউট করেন ওপেনার হোপ আর অধিনায়ক নিকোলাস পুরানকে। নাসুমকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিড উইকেটে মোসাদ্দেকের হাতে ক্যাচ দেন ডানহাতি হোপ। ফেরেন ৪৫ বলে ১৮ রানে। ওই ওভারের শেষ বলে পুরান রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হন। এদিন রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।

ক্রিজে এসে জ্বলে ওঠার আগেই আউট হন হার্ডহিটার রভম্যান পাওয়েল। এলোমেলো শটে উইকেট উপহার দিয়ে যান তিনি। শরিফুল ইসলামের লেন্থ বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ দেন রভম্যান। ১৯ বলে ১৩ রান করে সাজঘরে পথ ধরেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

২৬ ওভারে ৬৯ রানে ৫ উইকেট হারানো দলটিকে আরো বিপর্যয়ের মুখে ফেলেন মিরাজ। তিন ওভারের ব্যবধানে একে একে ফেরান ব্রেন্ডন কিং (১১), শেফার্ড (৩) ও আলজারি জোসেফকে (০)। মাঝে ২ রান করে আউটে কাটা পড়েন আকিল হোসাইন। এতে ৮৬ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে একশর আগে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে উইন্ডিজ। তবে শেষ উইকেটে কিমো পল আর গুদাকেশ মটির ২২ রানের পার্টনারশিপে ১০৮ রানে থামে ক্যারিবীয়দের ইনিংস।

৬ রানে থাকা মটিকে মিরাজ ফেরালে অলআউট হয় স্বাগতিকরা। ইনিংস সর্বোচ্চ ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন পল। এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জিততে বাংলাদেশ দলের প্রয়োজন ১০৯ রান।

টিআইএস/এনইউ