অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তী রিকি পন্টিং নিজের ভবিষ্যতবাণী নিয়ে কি আরেকবার ভাববেন? আসন্ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে ভারত আর স্বাগতিক অজিদের ফাইনালে দেখছেন তিনি। যেখানে সম্প্রতি পন্টিং মন্তব্য করেছেন, রোহিত শর্মার দলকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার শিরোপা জিতবে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে ইংল্যান্ড যে ছন্দে আছে, তা নিয়ে চাইলে আরেকবার ভাবতেই পারেন পন্টিং। ইংলিশদের সেই ঝলক আরো একবার দেখা গেল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।

ব্রিস্টলে বুধবার প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ২৩৪ রানের সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড। স্বাগতিকদের হয়ে ব্যাট হাতে বিধ্বংসী ছিলেন মঈন আলি ও জনি বেয়ারস্টো। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দুইজন অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন। কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে এই ২৩৪ রান থ্রি লায়ন্সদের দ্বিতীয় দলীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ, ঘরের মাঠে সর্বোচ্চ। টার্গেট টপকাতে নেমে ত্রিস্টান স্টাবস ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালিয়েও অবশ্য পরাজয় এড়াতে পারেননি। ৪১ রানে জেতে ইংল্যান্ড।

স্বাগতিকদের বড় সংগ্রহের সুরটা অবশ্য বেধে দিয়েছিলেন অধিনায়ক জস বাটলার। স্রেফ ৭ বলের এক ইনিংসে সমান ২টি করে চার-ছয়ে করেন ২২ রান। আরেক ওপেনার জেসন রয় অবশ্য ফেরেন ৮ রান করে। এরপর মারমুখী হয়ে ওঠেন ডেভিড মালান ও বেয়ারস্টো। তারা দুজন ১১ ওভার ৫ বলে পার্টনারশিপে তুলে ফেলেন ১১২ রান। মালান ১ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৩ রান করে আউট হলে ভাঙ্গে এই পার্টনারশিপ।

এরপর বেয়ারস্টোকে সঙ্গে নিয়ে ধ্বংসলীলা চালান মঈন। ১৬ বলে ফিফটি ছুঁয়ে ফেরেন ৫২ রানে। গড়েন ইংল‍্যান্ডের হয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। গত বছর জুলাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৭ বলে ফিফটি করে আগের রেকর্ডটি গড়েছিলেন লিয়াম লিভিংস্টোন। মঈনের আউটে ভাঙে মাত্র ৩৭ বলে ১০৬ রানের জুটি। এই জোট ভাঙার আগে অবশ্য আন্দিলে ফেলুকওয়ায়োর এক ওভার ৫ ছক্কায় ৩৩ রান নেন বেয়ারস্টো-মইন।

৩৬ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর শতকের দিকেই ছুটছিলেন বেয়ারস্টো। তবে ইনিংসের শেষ ওভারে লুঙ্গি এনগিদির শিকার হয়ে ৫৩ বলে ৯০ রান করে সাজঘরে এই ডানহাতি। যেখানে ৩টি চার ও ছক্কা মারেন ৮টি। বেয়ারস্টোকে ফিরিয়ে ৫ উইকেটের স্বাদ পান এনগিদি। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ২৩৪ রানের সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড।

২৩৫ রানের পাহাড় টপকাতে নেমে ৩ রানে প্রথম ও ৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু দলের বিপর্যয় সামাল দেন রেজা হেনড্রিকস ও হেনরিক ক্লাসেন। তৃতীয় উইকেটে ৬৫ রানের জুটি গড়েন দুইজন। ক্লাসেন ২০ রানে আউট হল ভাঙে তাদের এই পার্টনারশিপ। দশম ওভারে হেনড্রিকসকে বিদায় করেন মঈন। প্রোটিয়া ওপেনার ৩৩ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় করেন ৫৭ রান।

এরপর প্রায় একাই প্রতিরোধ গড়েন স্টাবস। ১৯ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে দলকে লড়াইয়ে রাখেন তিনি। তবে তাকে খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি এই সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া ডেভিড মিলার। ১৮৪ রানের মাথায় স্টাবস ২৮ বলে ২টি চার ও ৮ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৭২ রান করে আউট হন। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রানের বেশি করতে পারেনি সফরকারীরা। এতে ৪১ রানে জয় নিয়ে ৩ ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড।

টিআইএস