ছোটবেলা থেকেই ব্যাট-বলের সঙ্গে বেশ শখ্যতা রাহাতের। তার ভাবনা জুড়ে যেন শুধু ক্রিকেটের বসবাস। পাড়ায় খেলে ক্রিকেটের শুরু। ভালো ক্রিকেট খেলোয়াড় হিসেবে পরিচয়টা তখনই। তারপর কোচ হিসেবেও সফল। 

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কর্তৃক (২০২১-২০২২) গেম ডেভেলপমেন্টের বর্ষসেরা কোচ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রোকনুজ্জামান রাহাত। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাহাতকে এক লাখ টাকা ও বর্ষসেরা অ্যাওয়ার্ডটি তুলে দেয় বিসিবি। 

ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের আশ্রমপাড়ার বাসিন্দা রোকনুজ্জামান রাহাত। সাত ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি। বর্তমানে তিনি ঠাকুরগাঁও ক্রিকেট একাডেমিতে কোচ হিসেবে কর্মরত। 

রোকনুজ্জামান রাহাতের এমন অর্জন সারা ফেলেছে ক্রিকেট অঙ্গনে। তার সফলতা যেন নতুন সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে। তার হাত ধরেই ঠাকুরগাঁও থেকে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখছেন ক্ষুদে খেলোয়াড়রা। ক্ষুদে ক্রিকেটার মাহফুজুর রহমান আপন বলেন, রাহাত স্যার আমাদের খুব ভালো ক্রিকেট শেখান। তিনি আমাদের সাথে বন্ধু সুলভ আচরণ করে থাকেন। যার মাধ্যমে আমরা খুব সহজে ক্রিকেট রপ্ত করতে পারছি৷ আর যেগুলো ভুল করি তিনি সেগুলো সুন্দর করে বুঝিয়ে দেন৷ আজকে স্যার এ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন আমরা গর্বিত। 

বর্ষসেরা এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত কোচ রোকনুজ্জামান রাহাত বলেন, ‘পাড়ায় আমাদের একটি ক্লাব ছিল। যে ক্লাবটির নাম ছিল হার্ট অ্যাটাক। ক্লাবের মাধ্যমের আমার ক্রিকেট খেলার যাত্রা শুরু হয়। তারপর মোটামুটি ভাবে ক্রিকেট ভালো খেলার কারনে এলাকার বড় ভাইয়েরা উৎসাহ জাগাতেন৷ পরে রাশেদ ইকবাল ভাইয়ের হাত ধরে ক্রিকেটের অগ্রযাত্রা শুরু হয় আমার৷ সপ্তম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় আমার পথচলার অগ্রগতি হওয়া শুরু করে৷ যা এখনো চলমান রয়েছে৷ আর পারিবারিক ভাবে আমাদের খেলার প্রতি আলাদা এক আসক্তি ছিল। আমার বড় ভাইয়েরা বেশ ভালো খেলতেন। তাদের খেলার কারনেও আমার খেলার প্রতি আসক্তি বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারন৷ আমি খেলোয়াড় থেকে কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। সবার জীবনে চলার পথে একজন অনুপ্রেরণা কাজ করে। আমার জীবনেও একজন আছেন। যার নাম রাশেদ ইকবাল। তিনি আমার শিক্ষক ও অনুপ্রেরণা। যার মাধ্যমেই আমার এত পথ পাড়ি দেওয়া।’ 

বর্ষসেরা কোচ হওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমন একটি দিন আসবে এত দ্রুত এটা ভাবিনি৷ অ্যাওয়ার্ডটি নেওয়ার সময় আমার মা-বাবার কথা খুব মনে পড়ছিল৷ সম্প্রতি নয় মাসের ব্যবধানে আমার মা-বাবাকে হারিয়েছি আমরা। আমি অ্যাওয়ার্ডটি নেওয়ার সময় কোনভাবেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলাম না। এতদূর আসার পিছনে মা-বাবার  যে কি পরিমাণ অবদান তা এখন বেশী উপলব্ধি হচ্ছে৷ আজকে আমার এ সফলতা দেখলে মা-বাবা অনেক খুশি হতেন।’

ঠাকুরগাঁও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমান বাবুও এই খবরে খুশি। তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। রাহাতের পরিশ্রম স্বার্থক হয়েছে। আমরা আশা রাখছি তার হাত ধরেই জেলার ক্রিকেট একাডেমি আরো বেগবান ও গতিশীল হবে। আমরা তার পাশে সবসময় আছি।’

এম এ সামাদ/এটি