ভারতের সঙ্গে ম্যাচ মানেই যেন নতুন বিতর্কের রসদ! মাঠের ক্রিকেটের ঘটনার সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া-সব জায়গাতেই অন্যরকম একটা উন্মাদনা ছুঁয়ে যায়। অ্যাডিলেড ওভালে বুধবারের ম্যাচের পরও দেখা মিলল সেই একই দৃশ্যের! বিশেষ করে ভারতের ফেক ফিল্ডিং আর বৃষ্টির পর ভেজা মাঠে খেলা শুরু নিয়ে উত্তাল চারপাশ। কিন্তু সেই পালে হাওয়া দিতে রাজি নয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। অন্তত খালেদ মাহমুদ সুজন তেমনটাই বললেন।

জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক এখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টিম ডিরেক্টর। জাতীয় দলের সঙ্গে রয়েছেন বিশ্বকাপ মিশনে অস্ট্রেলিয়ায়। মাঠে থেকেই বুধবার সাক্ষী হয়েছে আলোচিত সব ঘটনার। যেখানে বৃষ্টি আইনে ভারতের কাছে ৫ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।

এই ম্যাচের পর বৃহস্পতিবার দিনটা বিশ্রামেই কাটছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। এদিন অনুশীলনেরও ছুটি ছিল ক্রিকেট দলের। আর এই সুযোগে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খালেদ মাহমুদ সুজন বেড়িয়েছিলেন শপিংয়ে। টিম হোটেল সোফিটেল অ্যাডিলেডের পাশেই রোন্ডাল মল, সেখানে দুই সন্তান আর স্ত্রী-কে নিয়ে শপিংয়ে দেখা গেল সুজনকে। তখনই এক ফাঁকে ঢাকা পোস্টের প্রশ্নের জবাবে বুধবারের ম্যাচ নিয়ে মুখ খুললেন জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর।

তিনি অবশ্য ফেইক ফিল্ডিংয়ের চেয়ে ভেজা মাঠ পরিচর্যার প্রসঙ্গটাও সামনে এনেছেন সুজন। বলছিলেন, ‘দেখুন, আইসিসির যে নিয়ম যতোক্ষণ বৃষ্টি হবে ততোক্ষণ সাকার দিয়ে মাঠ পরিচর্যা করা যাবে না। কিন্তু আইসিসির নিয়ম না মেনে সেই সময় পানি নিষ্কাষন করা হয়েছে, মাঠ শুকানোর জন্য। বৃষ্টি পুরোপুরি বন্ধ হলে সেই চেষ্টা করার কথা। এখানে নিয়ম মানা হয়নি।’ 

মাঠ ভেজা থাকায় লিটন দাস দুইবার পা পিছলে পড়ে যান বলেও মনে করেন সুজন। তবে এই ব্যাপারগুলো এখন আর বড় করার পক্ষপাতি নন তিনি। 

ম্যাচে শেষ হতেই খবর ছড়িয়ে পড়ে, এমন ভেজা মাঠে খেলতে চায় নি বাংলাদেশ। এ নিয়ে নাকি আপত্তিও করেও ফল পাননি সাকিব আল হাসান। মিক্সড জোনে নুরুল হাসান সোহান এ নিয়ে হতাশার কথাও জানিয়েছিলেন। তবে সাকিব খেলতে চাননি এই খবরটা মিথ্যে বলেই উড়িয়ে দিলেন সুজন। স্পষ্ট করেই বললেন, ‘দেখুন, এটা সত্য নয়। সাকিবের খেলতে অস্বীকৃতি জানানোর বিষয় না এটি। আম্পায়াররের কথা মানতেই হবে। আমরা জানিয়েছিলাম মাঠ ভেজা, কিন্তু উপায় ছিল না। আম্পায়ার খেলা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা মাঠে নেমেছি।’

সুজন প্রসঙ্গটা অনেকটা এড়িয়ে গেলেও বৃহস্পতিবার এনিয়ে কথা বললেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন। অ্যাডিলেডে সাংবাদিকদের তিনি বললেন, ‘ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ভেজা মাঠ, ফেইক ফিল্ডিং ও আম্পায়ারিং নিয়ে আইসিসির পরবর্তী সভায় আলোচনা তুলতে চায় বাংলাদেশ। কিন্তু জানেন এই অস্ট্রেলিয়াতেই মিটিং রয়েছে সামনে। তবে একটা জিনিস, দিন শেষে আম্পায়ার এবং ম্যাচ রেফরির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। মানুষ মাত্রই ভুল হয়।’

বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ টিটুও এখন আছেন অস্ট্রেলিয়ায়। তিনি গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি নিজেদের মধ্যে। অভিযোগ করার সুযোগ আছে কি না দেখছি। বর্তমান যে নিয়ম তাতে এই ব্যবস্থা এখন সম্ভবত নেই। তারপরও বিষয়টি আমরা দেখছি।’

তবে বোর্ড কর্তাদের এসব কথা কতোটা বাস্তবতার ছোঁয়া পাবে সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। এর আগেও ভারতের সঙ্গে ম্যাচে এমন অনেক অনেক বিতর্ক উঠলেও শেষ অব্দি নিশ্চুপই থেকেছে বোর্ড!

এটি/এনইউ