ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়া। এদিকে, নিজেদের মাঠে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভূমিকম্প ছোটালেন রবিন্দ্র জাদেজা। তার বিধ্বংসী বোলিং স্পেলের পর ব্যাট হাতেও ভালো শুরু পেল ভারত। প্রথম ইনিংসে প্যাট কামিন্সরা ১৭৭ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর প্রথম দিন শেষে ১ উইকেটে রোহিতদের সংগ্রহ ৭৭ রান। টিম ইন্ডিয়া এখনো ১০০ রানে পিছিয়ে আছে। 

ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার অ্যালান বোর্ডার-সুনীল গাভাস্কার সিরিজ শুরুর আগে থেকেই স্পিন পিচ নিয়ে গণমাধ্যমে সরব ছিলেন অজি বোর্ড ও ক্রিকেটাররা। তাদের অভিযোগ ছিল- স্পিনাররা যাতে বেশি সুবিধা পান সে জন্য পিচ শুকনো রাখা হচ্ছে। ম্যাচেও দেখা গেল স্পিনারদের আধিপত্য। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৭৭ রানেই অলআউট হয়ে গেছে সফরকারীরা। দশ উইকেটের ৮টি ভাগাভাগি করে নিয়েছেন ভারতের দুই স্পিনার। সর্বোচ্চ পাঁচটি উইকেট শিকার করেছেন রবীন্দ্র জাদেজা। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট রবিচন্দন অশ্বিনের দখলে। 

অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পেয়েছে স্বাগতিকরা। যদিও দিনের শেষ দিকে ২০ রান করে আউট হন রাহুল। তবে ৫৬ রান করে অপরাজিত রয়েছেন রোহিত। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের দেখে মনে হচ্ছিল, এই পিচে ব্যাট করতে সমস্যায় পড়তে পারে ভারতও। কিন্তু আদতে সেটা দেখা যায়নি। সাবলীল ব্যাটিং করে গেছেন দুই ওপেনার। বেশি আক্রমণাত্মক খেললেন রোহিত। 
প্রথম বল থেকেই বড় শট খেলা শুরু করেন রোহিত। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের প্রথম ওভারেই ১৩ রান করেন তিনি। সেই যে শুরু হলো, রানের গতি কমল না। মাঝেমধ্যে দু’একটা বল ব্যাটের কাছ দিয়ে বের হলেও খুব বেশি সমস্যা হলো না দুই ওপেনারের। 

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই পেসার মোহাম্মদ সিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন উসমান খাজা। এরপর আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসেন মার্নাস লাবুশানে। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে বোল্ড হন ওয়ার্নার। মোহাম্মদ শামির করা দ্রুতগতির বল তিনি সামলাতে পারেননি।

শুরুতেই জোড়া আঘাতের পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা চালান দুই অজি ব্যাটার লাবুশানে ও স্টিভ স্মিথ। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়াকে টানছিলেন তাঁরা। কিন্তু বিরতির পরই ফের জোড়া ধাক্কা। পরপর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নেন রবীন্দ্র জাদেজা।

তাঁর স্পিন ভেল্কিতে খেলায় ফেরে ভারত। প্রথমে আউট হন লাবুশেন। ইনিংসের শুরু থেকেই উইকেট থেকে বেরিয়ে খেলছিলেন। সেখানেই লাবুশেনকে ফাঁদে ফেলেন জাদেজা। অফস্টাম্পের বাইরে কিছুটা মন্থর গতিতে করা বল মারতে গিয়ে মিস করেন লাবুশেন। বল ঘুরে চলে যায় উইকেটরক্ষক শ্রীকর ভরতের হাতে। তখন ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন লাবুশেন। আর ফিরতে পারলেন না তিনি। ৪৯ রানের মাথায় স্টাম্পিং হয়ে মাঠছাড়া হন। 

পরের বলে শিকার বাঁহাতি ম্যাট রেনশ। বলের লাইনই ধরতে পারেননি রেনশ। বল প্যাডে লাগলে আম্পায়ার আউট দেন। রেনশ রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি।

অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডারকে ধসিয়ে দেন জাদেজা। অশ্বিন অনেক আগে থেকে বল করলেও সেভাবে সাফল্য পাচ্ছিলেন না। তাকে বরং অনেক সহজেই খেলে দিচ্ছিলেন অসি ব্যাটাররা। সেই সুযোগ এলো শেষদিকে। অশ্বিনের সোজা বল রিভার্স সুইপ করতে গেলেন অ্যালেক্স ক্যারি। বল ব্যাটে লেগে সোজা স্টাম্পে। তার দুই ওভার পরে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে ফেরান অশ্বিন। স্লিপে দারুণ ক্যাচ নেন কোহলি। টড মারফি ফিরে যান জাদেজার বলে।

ক্যারিকে ফেরানোর সঙ্গে সঙ্গেই নজির গড়ে ফেলেন অশ্বিন। ৮৯তম টেস্টে ৪৫০ উইকেট নিলেন অশ্বিন। টপকে গেলেন অনিল কুম্বলেকে। যিনি ৯৩তম ম্যাচে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। সবার আগে রয়েছেন শ্রীলঙ্কার মুত্তিয়া মুরালিধরন। তিনি ৮০ তম ম্যাচে ৪৫০ উইকেট পেয়েছিলেন।

শেষদিকে হ্যান্ডসকম্ব কিছুটা চেষ্টা করলেও বড় রান করতে পারেননি তিনি। তাকে ৩১ রানের মাথায় আউট করার সঙ্গেই এই ইনিংসে ৫ উইকেট হয় জাদেজার। অস্ট্রেলিয়ার শেষ উইকেট নেন অশ্বিন।

এফআই