ভারতের মাটিতে ২০০৫ সালের পর আর কোনো টেস্ট সিরিজ জিততে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ জিতলেও স্পিন-স্বর্গে গড়া সেসব পিচে অজি ব্যাটারদের সেঞ্চুরির আক্ষেপ ছিল দীর্ঘ ১২ বছর। যেন সেঞ্চুরি না পাওয়ার একটি বৃত্তে আটকে ছিলেন তারা। অবশ্য তাদের মাটিতে সর্বশেষ ২০০৭ সালে পাকিস্তানের মিসবাহ-উল-হক টেস্টে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। এরপর প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটাররা শতকের দেখা পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে।

আহমেদাবাদে চতুর্থ টেস্টে খাজার সেঞ্চুরিতে আরও একটি রেকর্ড হয়েছে। গত ১৩ বছর ভারতে প্রতিপক্ষের কোনো বাঁ-হাতি ব্যাটার শতক পূর্ণ করতে পারেননি। সেই খরাও কাটিয়েছেন উসমান খাজা। 

খাজার অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ভারতের মাটিতে চলমান সিরিজে হারিয়ে যাওয়া টেস্ট মেজাজও ফিরে এসেছে। টেস্টে এটি খাজার ১৪তম সেঞ্চুরি। তাকে সঙ্গ দিয়েছেন আরেক অজি ব্যাটার ক্যামেরন গ্রিন। এদিন গ্রিনের ব্যাটে এসেছে ৪৯ রান। প্রথম দিন শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৪ উইকেট হারিয়ে ২৫৫ রান। অপরাজিত থাকা খাজা-গ্রিন দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন।

এর আগে টস জিতে সিরিজের শেষ টেস্টে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। টেস্ট চ্যাম্পিয়ন্সশিপের ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে ম্যাচটি স্বাগতিকদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যদিও প্রথম দুই টেস্ট জিতে সিরিজে এগিয়ে ছিলেন রোহিত শর্মারা। কিন্তু তৃতীয় টেস্টে অজিদের দাপুটে জয়ে ভারতের টেস্ট চ্যাম্পিয়ন্সশিপের ফাইনাল খেলা কঠিন হয়ে যায়। তাদের লড়তে হচ্ছে বর্তমানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ব্যস্ত থাকা লঙ্কানদের সঙ্গে।   

এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই গোছানো খেলা উপহার দেয় অজি ওপেনাররা। ট্র‌্যাভিস হেডের সঙ্গে দারুণ শুরু এনে দেন খাজা। দুজনের প্রথম উইকেট জুটিতে আসে ৬১ রান। তবে ব্যক্তিগত ৩২ রানে হেডকে ফেরান রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তবে মাত্র ১১ রানের ব্যবধানে সফরকারীরা নতুন ব্যাটার মার্নাস লাবুশানেকে হারায়। তাকে বোল্ড করে ফেরান পেসার মোহাম্মদ শামি।

দিনের মাঝামাঝি পর্যন্ত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল স্বাগতিক বোলারদের হাতে

এরপর ক্রিজে এসে খাজাকে সঙ্গ দিতে থাকেন প্যাট কামিন্সের অনুপস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বে থাকা স্টিভ স্মিথ। বেশ সাবলীলভাবেই খেলতে থাকেন দুজন। কিন্তু ব্যক্তিগত ৩৮ রান করা স্মিথকে বোল্ড করেন রবীন্দ্র জাদেজা। এর আগে দুজনের জুটিতে ৭৯ রান আসে। এরপর ছন্দপতন হয় অজিদের ব্যাটিংয়ে। স্কোরবোর্ডে আর মাত্র ১৯ রান যোগ হতেই ফেরেন পিটার হ্যান্ডসকম্বও। দুর্দান্ত গতির এক বলে তার স্টাম্প উড়িয়ে দেন শামি।

খাজার সঙ্গে এরপর তাল মিলিয়ে খেলতে থাকেন ক্যামরুন গ্রিন। টেস্ট মেজাজে খেলা খাজাকে তিনি যোগ্য সঙ্গ দেন। তবে সেট হওয়ার চেয়ে মাঝেমধ্যে বাউন্ডারি হাঁকানোয় মনোযোগ দেন গ্রিন। ফলটাও ভালোই পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তাদের জুটিতেই দলীয় সংগ্রহে যোগ হয়েছে ৮৫ রান। পুরো দিনে আর উইকেট হারায়নি সফরকারীরা। 

ভারতের হয়ে শামি ২টি এবং অশ্বিন ও জাদেজা একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

এএইচএস