ভারতের তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে বেশ প্রতিভাবান ও নিজের সামর্থ্য জানান দেওয়া ব্যাটার লোকেশ রাহুল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অফ-ফর্মের কারণে তাকে দলে রাখা না রাখা নিয়ে বেশ আলোচনা তৈরি হয়েছিল। সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও প্রথম দুই টেস্টে রান না পাওয়ায় একাদশ থেকে ছিটকে যান তিনি। রানখরার দায়ে সমালোচিত এই ব্যাটারই ওয়ানডে সিরিজে এসে দেশকে লিড এনে দিয়েছেন। রাহুলের অপরাজিত ৭৫ রানে ভর করে প্রথম ওয়ানডেতে অজিদের ৫ উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকরা।

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয় দু’দল। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শেষদিকে টপাটপ উইকেট হারিয়ে ৩৫.৪ ওভারে ১৮৮ রানে অলআউট হয় অজিরা। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯১ রান তুলে জয় তুলে নেয় হার্দিক পান্ডিয়ার নেতৃত্বাধীন দল। অথচ তখনও বাকি ছিল ইনিংসের ৬১ বল।

মার্শের বিস্ফোরক ইনিংসে বড় রানের স্বপ্ন দেখছিল সফরকারীরা

আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ট্র্যাভিস হেডের উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। মাত্র ৫ রানেই তাকে বোল্ড করে ফেরান মোহাম্মদ সিরাজ। ধাক্কা সামলে আরেক ওপেনার মার্শ জুটি বাঁধেন অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে। ওভারপ্রতি গড়ে ছয়ের চেয়ে বেশি গতিতে রান আনতে থাকেন তারা। সেখানে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় ছিলেন মার্শ। তার টি-টোয়েন্টিসুলভ বিস্ফোরক ইনিংসের পরও বজায় থাকেনি অস্ট্রেলিয়ার মজবুত ভিত। তবে ৬৩ বলে ৭২ রানের জুটি ভাঙে স্মিথের বিদায়ে। হার্দিক পান্ডিয়ার বল কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি।

এরপর মার্শ হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন ৫১ বলে। এরপর তার ব্যাট ওঠে জোয়ার। ফলে ১৭তম ওভারেই অজিদের সংগ্রহ স্পর্শ করে তিন অঙ্ক। তরতর করে রান বাড়াতে বাড়াতে সেঞ্চুরির আভাস দেন মার্শ। তবে তার তাণ্ডবের অবসান ঘটিয়ে ভারতকে জরুরি ব্রেক থ্রু দেন জাদেজা। ৬৫ বলে ৮১ রান করে থামেন মার্শ। তিনি ১০ চারের সঙ্গে মারেন ৫ চার। নির্বিষ এক ডেলিভারিতে আউটসাইড এজ হয়ে শর্ট থার্ড ম্যানে মার্শ ধরা পড়েন। ১২৯ রানে তৃতীয় উইকেটের পতনের পরই অস্ট্রেলিয়ার পথ হারানো শুরু।

মার্শের সঙ্গে ৪৩ বলে ৫২ রানের জুটির পর মারনাস লাবুশানে ফেরেন থিতু হওয়ার আগে। জস ইংলিস ও ক্যামেরন গ্রিনকে আগে বাড়তে দেননি শামি। নিজের পরপর দুই ওভারে দুজনেরই স্টাম্প উপড়ে নেন তিনি। তাদের ৩০ রানের জুটি ভাঙলে হুড়মুড়িয়ে অলআউট হয়ে যায় সফরকারীরা। ১৯ রানে পড়ে তাদের শেষ ৬ উইকেট।

প্রথম ইনিংসে গতির ঝড় তুলেন শামি ও সিরাজ

ভারতের হয়ে শামি ও সিরাজ ৩টি, জাদেজা ২টি এবং পান্ডিয়া ও কুলদীপ একটি করে উইকেট নেন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে টপাটপ ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে রাহুল দ্রাবিড়ের শিষ্যরা। ব্যক্তিগত ৩ রানে ইশান কিশান, ৪ রানে বিরাট কোহলি ও শূন্য রানে সূর্যকুমার যাদব প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ওপেনার শুভমান গিল ২০ ও অধিনায়ক পান্ডিয়া করেন ২৫ রান। ৮৩ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর রাহুল ও জাদেজা মিলে ১০৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে তোলেন। তাতেই জয় পেয়ে যায় স্বাগতিক শিবির। শেষ পর্যন্ত ৯২ বলে ৭ চার ও এক ছয়ে রাহুল করেন ৭৫ রান। ৬৯ বলে ৫ চারে ৪৫ রান করেন জাদেজা।

অজি বোলারদের মধ্যে মিচেল স্টার্ক ৩টি এবং স্টয়নিস নেন ২টি উইকেট।

এএইচএস