ঈদের দিনটা বাকি সবার মতো ক্রিকেটারদের জন্যও স্পেশাল। তবে সবসময় ঈদের আনন্দ উপভোগের সুযোগ হয়ে ওঠে না বাইশগজে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া খেলোয়াড়দের। জাতীয় দলের ব্যস্ততা ও বিদেশ সফরে থাকলে তখন পরিবারহীন ঈদ করতে হয়। যে কারণে আনন্দের দিনটা কখনো কখনো রূপ নেয় বিষাদে। ঈদ নিয়ে ঢাকা পোস্টের বিশেষ আয়োজনে এবার সহযাত্রী জাতীয় দলের সাবেক দুই অধিনায়ক আকরাম খান এবং হাবিবুল বাশার সুমন। করলেন একাল-সেকালের ঈদ নিয়ে স্মৃতিচারণা। প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন ক্রীড়া প্রতিবেদক সাকিব শাওন। 

দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর মুসলমানরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করে। তাই ঈদে আনন্দটাও একটু বেশি-ই হয়। কেমন ছিল আকরাম-বাশারদের শৈশবের ঈদ? একালেই বা কাটছে কিভাবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক। 

জাতীয় দল থেকে অবসর নেওয়ার পর আকরাম দায়িত্বে ছিলেন নির্বাচকের। এরপর সামলেছেন বিসিবির গুরুত্বপূর্ণ পদ ক্রিকেট অপরারেশন্স বিভাগ। বর্তমানে সামলাচ্ছেন ফ্যাসিলিটিজ বিভাগ। সাবেক এই অধিনায়ক শৈশবের ঈদের স্মৃতিচারণা করে বলছিলেন, 'সে সময়ের ঈদকে খুব মিস করি। এরপর যখন ক্রিকেটার হলাম তখনতো অনেক ব্যস্ততা ছিল, অনেক সময় দেশের বাইরে ঈদ করতে হয়েছে পরিবার ছাড়া। তখন ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ততা ছিল এখন বাচ্ছাদের নিয়ে। যদিও পরিবারের সবাই মিলে ঈদ করার একটা আলাদা আনন্দ আছে। তবে শৈশবে ঈদে খুবই মজা করতাম, ইনজয় করতাম। এখন দায়িত্ব বেশি।'

ঈদের সময়টা কিভাবে কাটে জানতে চাইলে আকরাম বলেন,  'আমি ছোট থাকতেই বাবা মারা গেছেন, এরপর দুই ভাইও চলে গেছে। আমরা তো যৌথ পরিবার। চাচা-ভাতিজা যারা আছে সবাই একসঙ্গে সময় কাটাই। সবাই একসঙ্গে খেলাধুলা করি। আজও (গতকাল) খেলার জন্য মাঠ বুক করা রয়েছে। নাফিস-তামিম অন্য যারা আছে সবাই খেলবে। সিনিয়র-জুনিয়র খেলা, আমার বড় ভাই থাকতেই এই খেলার রীতি চালু হয়েছে ২৫ বছর ধরে। ফুটবল ক্রিকেট সবই খেলি। একসঙ্গে ইফতার করা যদিও এখন আসলে খুব কম হয়। সে কারণে মিস করি।'

আরও পড়ুন: এখনও মিরাজ-জাকিরের মনে সতেজ ‘ছোট বেলার ঈদ’

দেশের বাইরের ঈদ করার স্মৃতিচারণায় আকরাম, 'ঈদ কুয়েতে করেছি, শারজাহতে করেছি। ওয়েস্ট-ইন্ডিজে করেছি। ওরকম ইনজয় করতে পারতাম না দেশের মতো। বাংলাদেশের ঈদটা বাইরে থাকলে সবসময় মিস করতাম তখন।'

এদিকে, জাতীয় দল থেকে অবসরে যাওয়ার পরে বাশার যোগ দিয়েছেন বিসিবির নির্বাচক প্যানেলে। দায়িত্ব সামলাচ্ছেন সহকারী নির্বাচকের। ঈদ নিয়ে বাশার বলছিলেন, 'ঈদ তো ঈদই, ঈদের আনন্দের সঙ্গে আলাদা কোনো কিছু আমি খুঁজে পাই না। ডিপেন্ড করে যে তখনো খেলাধুলা নিয়ে ছিলাম এখনো খেলাধুলার সঙ্গেই আছি। আলাদা কিছু নেই তবে ঈদের সময় খেলা থাকলে একটু তো বোঝা যায় পার্থক্য। ঈদের সময় খেলা আছে ছুটি পাচ্ছি কি না।'

দেশের বাইরে ঈদ করেছেন অনেক বার কেমন লাগে তখন আসলে, 'ক্রিকেটার হিসেবে দেশের বাইরে ঈদ করেছি, এরপর অফিসিয়াল হিসেবেও ঈদ করেছি বাইরে। দেশের বাইরে ঈদ করাটা আসলে তেমন তো আর হয় না। কেননা কাজের ক্ষেত্রে থাকলে তো সেই মজাটা হয় না। তবে বাংলাদেশে থাকলে তো আবহাওয়ায় অন্যরকম থাকে। পরিবারের সবাই মিলে একত্রে ঈদ করা।'

আরও পড়ুন: ঈদ শুভেচ্ছায় মুখর ক্রীড়াঙ্গন

ছোট বেলার ঈদের দিনগুলো মিস করলেও এখনো আনন্দ খুঁজে পান বাশার। বলেন, 'মিস করি কিন্তু আমি এখনো ঈদকে ইনজয় করি। এখনো আমরা পরিবারের সবাই একসঙ্গে নামায আদায় করতে যাই। আমাদের যেহেতু বড় পরিবার। ১০-১২ জন মিলে একসঙ্গে যাই। ভাই বোনদের বাচ্চারা থাকে একসঙ্গে ঈদ করি। জয়েন্ট পরিবারের যে বন্ডিং সেটা এখনো আমাদের রয়ে গেছে। সো আমি এখনো আলাদা কোনো কিছু পাই না। এখনো আত্মীয় স্বজনরা আসে বাড়িতে ঈদের দিন।'

এসএইচ/এফআই