চলতি আইপিএলে ধারাবাহিকভাবে রান করে চলেছেন তরুণ ভারতীয় ব্যাটার শুভমান গিল। টুর্নামেন্টটির ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটান্স এবারও রয়েছে সবার ওপরে। যেখানে গিলের অবদান অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। আগের ম্যাচে ৯৪ রানে অপরাজিত থাকার পর তিনি আর দ্বিতীয় সুযোগটা হাতছাড়া করলেন না। আইপিএলের প্রথম ম্যাজিক ফিগার পেয়েছেন তিনি। তার আলো ছড়ানোর আরেকটি রাতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ৩৪ রানে হারিয়েছে গুজরাট। একইসঙ্গে সবার আগে তারা কোয়ালিফায়ারে ওঠে গেছে।

সোমবার (১৫ মে) রাতে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা গিলের সেঞ্চুরিতে ১৮৯ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় গুজরাট। এটি কেবল গিলেরই নয়, গুজরাটের কোনো খেলোয়াড়েরও আইপিএলে এটাই প্রথম সেঞ্চুরি। এদিন রানের খাতা খোলার আগেই উইকেটরক্ষক ব্যাটার ঋদ্ধিমান সাহাকে ফেরান হায়দরাবাদের ভুবনেশ্বর কুমার। হায়দরাবাদের এই পেসার ৫ উইকেট নিয়েছেন। তবে তার এমন দাপটও গুজরাটের রানের চাকা বন্ধ করে দিতে পারেনি।

শুরুতেই উইকেট হারালেও ওয়ানডাউনে নামা সাই সুদর্শনের সঙ্গে বড় জুটি গড়েন গিল। দুজনের জুটিতেই গুজরাট ১৪৭ রানের শক্ত ভিত পেয়ে যায়। তখন মাত্র ১৫তম ওভার শুরু হয়। ফলে অনায়াসেই মনে হয়েছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা দুইশ’র কোঠা সহজেই পার করবে। কিন্তু সুদর্শন ৩৬ বলে ৪৭ রান করে আউট হওয়ার পর ধসে পড়ে গুজরাটের মিডল অর্ডার লাইনআপ। এরপর অল্প রানের ব্যবধানেই প্যাভিলিয়নে ফিরতে থাকেন অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া, ডেভিড মিলার ও রাহুল তেওয়াতিয়া।

তবে একপ্রান্ত আগলে রাখা গিল ১ ছক্কা ও ১৩ চারে ৫৮ বলে ১০১ রান করেন। তার ব্যাটেই মূলত বেশ লড়াকু পুঁজি পেয়ে যায় গুজরাট। গিল ও সুদর্শন ছাড়া দলটির কোন ব্যাটারই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। ফলে নির্ধারিত ওভার শেষে ৯ উইকেটে ১৮৮ রান সংগ্রহ করে পান্ডিয়ার দল।

ভুবনেশ্বরের ৫ শিকারের কল্যাণেই মূলত ২০০’র আগে পান্ডিয়াদের বেধে ফেলে হায়দরাবাদ। এছাড়া দলটির হয়ে মার্কো জানসেন, ফজলহক ফারুকি ও টি নাতারাজন একটি করে উইকেট নেন।

রান তাড়ায় ব্যাট করতে নামা হায়দরাবাদ আরও ভঙ্গুর ব্যাটিং প্রদর্শনী উপহার দেয়। ৯ ওভারের মধ্যেই তারা ৫৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বসে। যা তাদের সামনে পরাজয় একপ্রকার সহজ করে তোলে। টপ অর্ডারদের ব্যাটরদের সঙ্গে এদিনও ব্যর্থ হয়েছেন হায়দরাবাদ অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। তিনি করেন মাত্র ১০ বলে ১০ রান।

হায়দরাবাদের এমন বাজের দশার পেছনে মূলত গুজরাট পেসার মোহাম্মদ শামি ও মোহিত শর্মার অবদান রয়েছে। এই দুজনের তোপেই বালির বাধে পরিণত হয় তাদের ব্যাটিং লাইনআপ। দুজনেই পেয়েছেন ৪টি করে উইকেট। তবে এরপর সানরাইজার্সের হয়ে লড়াই করেছেন হেইনরিখ ক্লাসেন। এই প্রোটিয়া ব্যাটারের কারণে কিছুটা সম্মান নিয়ে হার দেখেছে দলটি। ৪৪ বলে ৬৪ করে হারের ব্যবধান কমিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এ ব্যাটার। 

শেষ দিকে ভুবনেশ্বর কুমার ২৬ বলে ২৭ এবং মায়াঙ্ক মারকান্ডে ৯ বলে ১৮ না করলে সংগ্রহটা ভদ্রস্থ হতো না সানরাইজার্সের। ৯ উইকেটে ১৫৪ রানে থেমেছে তাদের ইনিংস। সানরাইজার্সের পুরো ২০ ওভার ব্যাটিংয়ের পেছনে বড় ভূমিকা ভুবনেশ্বর কুমার ও ক্লাসেনের ৬৮ রানের জুটির।

এই জয়ে ১৩ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে গুজরাট। ১২ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে সানরাইজার্স রয়েছে নয় নম্বরে।

এএইচএস