আর মাত্র দুদিন পরই মাঠে গড়াবে অ্যাশেজ সিরিজ। যার জন্য জোর কদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে দুই প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়া বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ টেস্ট দিয়ে নিজেদের ভালোভাবেই প্রস্তুত করে নিয়েছে। অন্যদিকে ইংল্যান্ডও খেলেছে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। তবে তাদের মূল চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল ক্রিকেটারদের চোট। সেই যাত্রায় ফের সাদা পোশাকে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মঈন আলীকে ফিরিয়ে ইংলিশরা কিছুটা হাফ ছেড়ে বেঁচেছে। তবে প্রথমদিকে প্রস্তাব পাওয়ার পর তিনি উড়িয়ে দিয়েছিলেন ‘লল’ বলে।

আগামী ১৬ জুন থেকে এজবাস্টনে শুরু হচ্ছে পাঁচ ম্যাচ অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্ট। এখন পর্যন্ত প্রথম দুই ম্যাচের জন্য ইংল্যান্ড দল ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এরপরই সাদা পোশাকে দলের নিয়মিত মুখ ও বাঁ-হাতি স্পিনার জ্যাক লিচ চোটের কারণে অ্যাশেজ থেকে ছিটকে যান। ফলে খাদে পড়ে যায় ইংলিশরা। সেখান থেকে তাদের বাঁচাতে অভিজ্ঞ কোনো স্পিনারের প্রয়োজন ছিল। ফলে বিকল্প হিসেবে আসে ২০২১ সালে টেস্টকে বিদায় বলা মঈন আলীর নাম।

এরপরই অধিনায়ক বেন স্টোকস মঈনকে দলে ফেরার প্রস্তাব দিয়ে মেসেজ করেন। কিন্তু অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার সেটিকে মজা ধরে নিয়ে জবাব দেন ‘লল’ বলে। পরবর্তীতে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডও আনুষ্ঠানিকভাবে মঈনকে প্রস্তাব দেয়। শেষমেষ দলের বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছেন এই অলরাউন্ডার। অবসর ভেঙে তাকে আসন্ন অ্যাশেজ সিরিজে খেলতে দেখা যাবে।

নতুন করে দলে ফেরার বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন মঈন। সেখানে ‍তিনি বলেন, ‘লিচি (লিচ) চোট পেয়েছে, তার জন্য ব্যাপারটি দুঃখের। স্টোকসি (স্টোকস) আমাকে প্রশ্নবোধক চিহ্নসহ মেসেজ দেয়—“অ্যাশেজ?” আমি তখনো লিচির সংবাদটা শুনিনি। ফলে স্রেফ বলেছিলাম, “এলওএল (লল)।” ভেবেছিলাম সে মজা করছে। তবে এরপরই খবরটি জানতে পারি। তার সঙ্গে কথা হয়। এই আরকি।’

আরও পড়ুন >> ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ অ্যাশেজেও প্রতিপক্ষের বন্ধু হতে নারাজ অ্যান্ডারসন

তবে মঈনের টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা নিয়ে তার স্ত্রী খুব একটা উচ্ছ্বসিত ছিলেন না। তবে আশপাশের সবার প্রতিক্রিয়া ইতিবাচকই ছিল, ‘আমার স্ত্রী খুব একটা আগ্রহী ছিল না, তবে বাকি সবাই ছিল। আমি স্টোকসির সঙ্গে এ নিয়েও কথা বলেছি, সে কীভাবে ব্যাটারদের সঙ্গে কথা বলে। সে শুধু বলেছে, “তুমি যেভাবে খেলো, সেটি খেললেই হবে।” যে শটই খেলুন না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন নেই। আমার ধারণা, এর মাধ্যমে আমি আরও কিছু শট খেলার লাইসেন্স পাব।’

স্টোকস বাদে অন্য কোনো ক্রিকেটার দলে ফিরতে বললে মানতেন কিনা—এই প্রশ্নের জবাবে মঈন বলছেন, ‘না, সম্ভবত না বলে দিতাম। বিষয়টি হচ্ছে, এটা অ্যাশেজ, বড় একটি সিরিজ এবং ছেলেরা রোমাঞ্চকর ক্রিকেট খেলছে। যখন খেলতাম এই প্রজন্মকে পছন্দ করতাম। অ্যাশেজের অংশ হতে পারা হবে দারুণ ব্যাপার।’

আবারও টেস্ট ক্রিকেটে খেলার সুযোগ পাওয়ার বিষয়টিকে ফ্রি-হিট বলে উল্লেখ করেন মঈন, ‘আমি এটাকে টেস্ট ক্যারিয়ারের অংশ হিসেবে দেখছি না, এটি ফ্রি-হিট। আমি আমার নিজের জায়গায় খেলছি না। সত্যি বলতে এখানে কোনো চাপ নেই। এমন ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ সিরিজ ও ম্যাচের একটা চাপ স্বাভাবিকভাবে থাকে, সেটি নিয়ে কথা বলেছি বাজের (কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম) সঙ্গে। আমি কীভাবে পারফর্ম করব সেটা নিয়ে বিরক্ত হতে নিষেধ করেছেন তিনি, যা খুব দারুণ।’

৬৪ টেস্টের ক্যারিয়ারে ২৯১৪ রান করার পাশাপাশি ১৯৫টি উইকেট নিয়েছেন মঈন। তবে শুধু রান বা উইকেটসংখ্যা নয়, মঈনের খেলার ধরনও স্বাভাবিকভাবেই ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও স্টোকসের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠার কথা। আঁটসাঁট বোলিং বা দীর্ঘ সময় ধরে ব্যাটিং মঈনের সহজাত নয় তেমন, ম্যাককালাম-স্টোকস সেটি চানও না।

এএইচএস