‘এশিয়া কাপ’ এর বাকি আর ৯ দিন। ক্রিকেটের শক্তিশালী এই বলয়ের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের সুযোগ এশিয়া কাপ। বিশ্বকাপের আগে এই টুর্নামেন্টকে ড্রেস রিহার্সাল হিসেবেই দেখছে সবকটি দেশ। ওয়ানডে ফরম্যাটের এবারের আসরে বড় দল হিসেবেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। 

এশিয়ান এই আসরে বাংলাদেশের অভিষেক ১৯৮৬ সালে। সেরা সাফল্য তিন আসরের রানারআপ। মহাদেশীয় এই টুর্নামেন্টের আগে ক্রিকেটের বাইবেলখ্যাত উইজডেন প্রকাশ করেছে এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সেরা একাদশ। যে তালিকায় বাদ পড়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা, আশরাফুল কিংবা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের মত নাম। 

উইজডেনের চোখে বাংলাদেশের এশিয়া কাপ একাদশ 

তামিম ইকবাল - ইমরুল কায়েস 

লম্বা সময় ধরে বাংলাদেশকে সার্ভিস দিয়েছেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং ইমরুল কায়েস। বাংলাদেশের সেরা একাদশের জন্য এই দুজনকেই বেছে নিয়েছে উইজডেন। এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত ১৩ ইনিংসে ব্যাট করেছেন তামিম। তাতে ৪৩ গড়ে রান করেছেন ৫১৯। নামের পাশে আছে ৬ ফিফটি। তবে ২০১৮ সালের ভাঙা আঙুলের তামিমই হয়ত এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বড় এক পোস্টার। 

তামিমের সঙ্গী ইমরুল এশিয়া কাপে খেলেছেন ৭ ম্যাচ। ৪১ এর বেশি গড়ে করেছেন ২৪৮ রান। তিন ফিফটি আছে তার অর্জনে। ২০১২ সালের এশিয়া কাপটাই মনে রাখার মত। 

এনামুল বিজয়-আতাহার আলী খান-মুশফিকুর রহিম

তামিম-ইমরুলের পর ওয়ানডাউনে রাখা হয়েছে এনামুল হক বিজয়কে। এই একাদশে ৫০ এর উপর গড় নিয়ে রান করা একমাত্র ব্যাটার তিনি। ৪ ম্যাচে ৫৬ দশমিক ৭৫ গড়ে করেছেন ২২৭ রান। ২০১৪ আসরেই কেবল দেখা গিয়েছে তাকে। স্বপ্নের মত টুর্নামেন্ট পার করেছেন সেবার। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০০ আর ভারতের বিপক্ষে ছিল ৭৭ রানের ঝকঝকে ইনিংস।  

তালিকার পরের নামটা আতাহার আলী খান। বাংলাদেশের আইসিসির পূর্ণ সদস্য হবার আগেই নিজের এশিয়া কাপ পর্ব শেষ করেছেন। প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রথম ম্যান অভ দ্য ম্যাচও হয়েছিলেন আতাহার। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭৮, পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮২ রানের ইনিংসগুলো বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেসময়ের বড় প্রাপ্তি। ১১ ম্যাচে তার গড় সাকিব আল হাসান কিংবা মুশফিকুর রহিমের চেয়েও বেশি। ৩৬ দশমিক ৮০ গড়ে আতাহার আলী খানের সংগ্রহ ৩৬৮ রান।    

আরও পড়ুন: মিরপুরে টাইগারদের প্রস্তুতি, দোকান উদ্বোধনে দুবাইয়ে সাকিব

উইজডেনের বাংলাদেশ স্কোয়াডে অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমকে। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান এবং সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহণের কীর্তি তারই। টুর্নামেন্টে নিজের শেষ দশ ম্যাচে তার গড় ৫৪ এর বেশি। যদিও সবমিলিয়ে গড় নেমে এসেছে ৩৭ এর নিচে। ২০১২ সালে ভারতের বিপক্ষে তার ২৫ বলে ৪৬ বাংলাদেশকে নিয়ে গিয়েছিল ফাইনালের মঞ্চে। এছাড়া ভারতের বিপক্ষে ১১৭ রানের সেঞ্চুরি আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৪৪ রানের ইনিংস বাংলাদেশ মনে রাখবে অনেকদিন। 

নাসির হোসেন-সাকিব আল হাসান

বাংলাদেশের ক্রিকেটে ফিনিশার হিসেবে এসেছিলেন নাসির হোসেন। শুরুর দিকে হয়ে উঠেছিলেন দলের নির্ভরযোগ্য খেলোয়ার। ২০১২ এশিয়া কাপের নাসির বাংলাদেশের ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ফিনিশার।  

সাকিব আল হাসানকে রাখা হয়েছে দলের সাত নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের বর্তমান অধিনায়ক সাকিব এশিয়া কাপেও নিজের কৃতিত্বের ছাপ রেখেছেন। ১৩ ম্যাচে করেছেন ৪০২ রান। বল হাতে পেয়েছেন ১৯ উইকেট। দলে ১০০ এর উপর স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা একমাত্র ব্যাটার তিনিই। ২০১২ আসরে হয়েছিলেন সিরিজসেরা খেলোয়াড়।  

মোহাম্মদ রফিক-আব্দুর রাজ্জাক 

বাংলাদেশের সেরা দুই স্পিনারই জায়গা পেয়েছেন উইজডেনের এই একাদশে। বাংলাদেশ বড় দল হয়ে উঠবার আগেই বড় তারকা হয়ে উঠেছিলেন মোহাম্মদ রফিক। এশিয়া কাপে নিজের ৮ ম্যাচে পেয়েছেন ৮ উইকেট। ইকোনমি রেট মাত্র ৪ দশমিক ৫৩। 

এশিয়া কাপের আসরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর নাম আব্দুর রাজ্জাক। ১৮ ম্যাচে নিয়েছেন ২২ উইকেট। ২০১২ আসরে দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন এই স্পিনার। 

রুবেল হোসেন-মুস্তাফিজুর রহমান 

জাতীয় দলে আগ্রাসী একজন পেসার হিসেবেই রুবেল হোসেনকে মনে রাখবে বাংলাদেশ। দলের বহু ঐতিহাসিক জয় এসেছিল তার বোলিং নৈপুণ্যে। সেই রুবেলই আছেন এশিয়া কাপের সেরা বাংলাদেশির তালিকায়। ৮ ম্যাচে পেয়েছেন ৮ উইকেট। ২০১৮ ফাইনালে তার বোলিংটাই ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিল বাংলাদেশকে। 

কাটার মাস্টার নামে পরিচিত মুস্তাফিজ জায়গা পেয়েছেন কেবল এক আসর খেলেই। ২০১৮ এশিয়া কাপে ৫ ম্যাচে নিয়েছেন ১০ উইকেট। ফাইনালে ওঠার আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ে বল হাতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই পেসার। মাত্র ১৮ গড়ে সেবারের টুর্নামেন্ট শেষ করেন মুস্তাফিজ।  

জেএ