খেলার মাঠেও ধর্মবিশ্বাসকে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখা ক্রিকেটার ইংল্যান্ডের মঈন আলী। জন্মসূত্রে তিনি পাকিস্তানি ও ইংরেজ বংশোদ্ভূত। এছাড়া মঈনের শ্বশুরালয় বাংলাদেশের সিলেটে। ইসলামী মনোভাব নিয়ে বিশ্বক্রিকেটে তিনি বেশ পরিচিত। তবে তার দাড়ি রাখা নিয়েও এক সময় শঙ্কায় থাকতে হয়েছিল। আশপাশের মানুষ এমনকি পরিবারের লোকজনও উগ্রবাদী ভাবতে পারে এমন ভয় নিয়ে-ই মঈন দাড়ি রাখা শুরু করেন বলে এক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই স্পোর্টসকে এ বিষয়ে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মঈন আলী। যেখানে তিনি জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ওপেনার হাশিম আমলাকে দেখে ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি দাড়ি রাখার সিদ্ধান্ত নেন। পাকিস্তানের প্রতি আলাদা অনুভূতি থাকলেও সবার আগে নিজেকে ইংল্যান্ডের বলে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন মঈন।

দাড়ি রাখার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘মোহাম্মদ আলী আমার জন্য বিশাল অনুপ্রেরণা ছিলেন। কারণ যেভাবে তিনি বেড়ে উঠেছিলেন এবং একজন মুসলিম ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটার হাশিম আমলারও বড় দাড়ি ছিল। তিনি রাখতে পারলে, আমি কেন পারব না? আমি এটাই (দাড়ি রাখা) করতে চেয়েছিলাম, তবে একটু ভয়ও ছিল। তখন বয়সে তরুণ ছিলাম। আমি চাইনি লোকে, এমনকি আমার পরিবারও আমাকে উগ্রবাদী ভেবে নিক। সে সময় লোকে বলাবলি করত—মুসলিম মানেই উগ্রবাদী।’

৯ বছর ধরে ক্রিকেটে ইংলিশদের প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং নিজেকে তারকা হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করেছেন মঈন। অন্যদিকে মায়ের দিক থেকে পাকিস্তানের প্রতিও তার আলাদা টান কাজ করে। কতটা ইংলিশ হয়ে উঠতে পেরেছেন— এমন প্রশ্নে মঈনের উত্তর, ‘ভালো প্রশ্ন। আমি সব সময়ই ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে চেয়েছি।’ 

এরপর পাকিস্তানের হয়ে খেলার প্রসঙ্গও ওঠে আসে তার কথায়, ‘ইংল্যান্ডের প্রতি আলাদা টান অনুভব করি। মায়ের কারণে পাকিস্তানের প্রতিও একই অনুভূতি হয়। ছোটবেলায় পাকিস্তানকে যে সমর্থন করেছি, সেটা বলব না। তবে পাকিস্তান দলের ওপর চোখ রাখতে হতো, কারণ পরিবার তা করত। কিন্তু আমি ভেতর থেকেই বুঝতাম, ইংল্যান্ডের সমর্থন করি এবং দলটা ভালো করুক, সেটাই সব সময় চেয়েছি। সেটা ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে চাওয়ার ইচ্ছার কারণে কি না, তা জানি না।’

২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল ৩৬ বছর বয়সী মঈনের। তার দাদি বেটি বক্স একজন শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ। মঈন জানিয়েছেন, বেটি কক্সের কারণেই তাকে মিশ্র বর্ণের হিসেবে মনে করা হয়। জাতীয় দলে মঈন একজন নির্ভরযোগ্য অলরাউন্ডার। কিছুদিন আগেও তাকে টেস্ট ফরম্যাটের অবসর ভেঙে অ্যাশেজ সিরিজে ফিরিয়েছিল ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। ২০১৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের শিরোপা জয়ের মঞ্চেও তিনি ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।

এএইচএস