২০২১ বিশ্বকাপের ব্যর্থতার পর রবি শাস্ত্রীকে সরিয়ে ভারতের কোচ হয়েছিলেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার রাহুল দ্রাবিড়। লক্ষ্য ছিল একটাই, ঘরের মাটিতে বিশ্বকাপ শিরোপা চাই। মাঝে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেও শিরোপা স্পর্শ করা হয়নি ভারতের। ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ছিল ব্যর্থতা। তবু দ্রাবিড়ে আস্থা ছিল বোর্ডের। স্বপ্ন ছিল বিশ্বকাপ ঘিরে। 

২০২৩ সালের এই বিশ্বকাপটা দারুণ শুরু করেছিল ভারত। টুর্নামেন্টের লিগ পর্বের ৯ ম্যাচের প্রতিটিতেই জয় এসেছে খুব সহজে। ব্যাটে বলে একেবারেই অপ্রতিরোধ্য এক দল ছিল স্বাগতিকরা। জয়ের জন্য কষ্ট করতে হয়নি কোথাও। তবে ফাইনালের দিনেই কিনা খেই হারিয়ে ফেলল দলটা। অস্ট্রেলিয়ার কাছে সাবধানী ক্রিকেট খেলতে গিয়ে ভারত হেরেছে ৬ উইকেটের ব্যবধানে। 

সাম্প্রতিক সময়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকেই কি আজকের ভারতের সাবধানী খেলার চেষ্টা? নাকি অতি প্রত্যাশার চাপে ভয়ে ছিলেন ক্রিকেটাররা? ম্যাচ শেষে প্রেস কনফারেন্সে এই প্রশ্নই করা হয়েছিল ভারতের কোচের কাছে।  উত্তরে দ্রাবিড় বলেন, ‘আমি এটা বিশ্বাস করি না যে এই টুর্নামেন্টে ভয় নিয়ে খেলেছি। এই ফাইনাল ম্যাচেও ১০ ওভারে ৮০ রান ছিল আমাদের। এরপর আমরা উইকেট হারিয়েছি। যখন আপনি উইকেট হারাবেন, আপনার কৌশল ও টেকটিকস বদলাতে হবে। আমরা এই টুর্নামেন্টে ওটাই করেছি।’ 

তবে ম্যাচ হারলেও অস্ট্রেলিয়াকে যোগ্য আর ভালো খেলার বাহবা দিতে কার্পণ্য করেননি দ্রাবিড়, ‘আমরা ফেভারিট ছিলাম কারণ আমরা ভালো খেলেছি কিন্তু আপনাকে এটাও মানতে হবে অস্ট্রেলিয়া খুব ভালো দল। তারাও ফাইনাল খেলতে এসেছিল টানা আট ম্যাচ জিতে। আমাদের এ নিয়ে কোনো সংশয় ছিল না কঠিন ম্যাচ হবে। এমনিতে আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল যদি ভালো খেলি তাহলে সঠিক ফলটা পাবো। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, নির্দিষ্ট দিনে তারা আমাদের চেয়ে ভালো খেলেছে। ’ 

                                                   

আহমেদাবাদে ভারত ভুগেছে প্রথম ইনিংসের পরপরই। রান হয়েছে প্রত্যাশার চেয়ে কম। কোচ দ্রাবিড়ের মুখেও ছিল কম রানের আক্ষেপ, ‘আমরা ৩০-৪০ রান কম করেছি। ২৮০-২৯০ রান করতে পারলে লড়াই হত। অস্ট্রেলিয়া খুব ভাল বল করেছে। আমাদের বাউন্ডারি মারতে দেয়নি। রোহিত আউট হওয়ার পর বিরাট কোহলি এবং লোকেশ রাহুল ইনিংস গড়ার চেষ্টা করছিল।

রাহুল আরও বলেন, ‘আমরা খুবই ভয়হীন ক্রিকেট খেলেছি এ বারের বিশ্বকাপে। বিরাট-রাহুলের ওই ইনিংসটাই খেলা প্রয়োজন ছিল। আমাদের দুর্ভাগ্য যে বিরাট-রাহুল আউট হয়ে যায়। ট্রেভিস হেড এবং মার্নাস লাবুশেনের মতো শেষ পর্যন্ত থাকতে পারলে আমরাও বড় রান তুলতে পারতাম।’

কোচ রাহুলের বড় অ্যাসাইনমেন্ট ছিল এবারের বিশ্বকাপ নিয়ে। কিন্তু তাতে সফল হননি ‘দ্য ওয়াল’ খ্যাত সাবেক এই ক্রিকেটার বলেন, ‘সত্যি বলতে আমি এটা (টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ) নিয়ে ভাবিনি। আমার মনে হয় আমাদের সব আয়োজন, এনার্জি, ফোকাস এই ম্যাচ ও টুর্নামেন্টে ছিল। এখন অবধিও তাই। আমি এখন ওসব নিয়ে ভাবিনি, ভবিষ্যতে কী হবে এ নিয়ে কোনো পরিকল্পনাও নেই।’

জেএ