আর্জেন্টিনার অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে খুব সাধারণ ধারণা থাকলেও জানার কথা বর্তমানে দেশটির অবস্থান কতটা নাজুক। মূল্যস্ফীতির চাপে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের। বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে এমন অবস্থা। আর্থিক অবস্থা এতটাই সঙ্গীন, বিশ্বকাপের পর প্রায় ১১ মাস পেরিয়ে গেলেও কোচ লিওনেল স্কালোনিসহ বাকি কোচিং স্টাফকে বোনাসও দিতে পারেনি আর্জেন্টাইন ফুটবল ফেডারেশন। 

তবে এমন নাজুক অবস্থানেও মাঝেও ২০২২ সালের ফিফা বিশ্বকাপে কমতি ছিল আর্জেন্টাইন দর্শকদের। ভিন্ন এক মহাদেশে গ্যালারি পুরোপুরি মাতিয়ে রেখেছিলেন আকাশী নীল-সাদা জার্সির সমর্থকরা। খেলোয়াড়রাও এর প্রতিদান দিয়েছেন দুহাত উজাড় করে। দুর্দান্ত পারফর্ম দেখিয়ে ৩৬ বছর পর আলবিসেলেস্তেরা জয় করেছে বিশ্বকাপের আরাধ্য শিরোপা। 

তবে, এমন সমর্থনের পেছনেও আছে অন্যরকম এক গল্প। কাতারে নিজের দেশকে সমর্থন জানাতে নাকি নিজেদের বাড়ি বন্ধক রেখে কিংবা গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছিলেন অনেক সমর্থক। বিশ্বজয়ের বছর পূর্তিতে তেমন তথ্যই জানিয়েছেন দলের গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক জানিয়েছেন, গ্যালারিতে বসে তাদের সমর্থন জানাতে অনেক আর্জেন্টাইনই নিজেদের বাড়ি বন্ধক আর গাড়ি বিক্রি করে কাতারে গিয়েছিলেন।

কাতারের মাটিতে ২২তম বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার বর্ষপূর্তিতে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রকাশ করেছে ফিফা। ‘এ নেশনস স্টোরি: আর্জেন্টিনা’ নামের এই প্রামাণ্যচিত্রে সেমিফাইনালে খেলা চার দলের গল্প তুলে ধরা হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার পর্বে এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ও লিওনেল স্কালোনির সাক্ষাৎকার। 

আর্জেন্টাইন সমর্থকদের প্রতি এসময় কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি এমিলিয়ানো, ‘এই বিশ্বকাপটা ছিল উন্মাদনার। কাতারে যাওয়ার টিকিট কিনতে এবং আমাদের খেলা দেখার জন্য অনেক মানুষ তাদের বাড়ি বন্ধক দিয়েছে, গাড়ি বিক্রি করেছে। আমি টিভিতে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। স্টেডিয়ামে মানুষের ভিড় যত বড় হতে দেখেছি, আমাদের মুখে তত হাসি ফুটেছে।’

সমর্থনের কথা ফুটে উঠেছে কোচ লিওনেল স্কালোনির মুখেও, ‘আমাদের অর্জনের বড় একটি অংশ এসেছে সেখানে থাকা সমর্থকদের কারণে। যারা আর্জেন্টিনায় ছিল, টিভির সামনে উল্লসিত হয়েছে, তাদেরও অবদান আছে। তাদের সমর্থন আমাদের উৎসাহিত করেছে।’

জেএ