অস্ট্রেলিয়া যেন টেস্ট হারতেই ভুলে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। শেষবার তারা হেরেছিল ২০ বছর আগে। আর নিজেদের মাটিতে ক্যারিবিয়ানদের কাছে অজিরা টেস্ট হেরেছিল ২৭ বছর আগে। দুই দেশের মধ্যেকার ফ্রাংক-ওরেল সিরিজের ট্রফিটা নিজেদের সম্পত্তিই করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। এবার অবশ্য সেসব ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটেনি। এক শামার জোসেফেই পুড়লো অজিরা। 

ব্রিসবেনে অজিদের সামনে লক্ষ্যটা খুব একটা বড় ছিল না। তবে সহজ সেই লক্ষ্যটাও কঠিন করে তুলেছিলেন শামার জোসেফ। আগের দিন পায়ের আঙ্গুলে রক্ত ঝরেছিল। সকালেও নিশ্চিত ছিলেন না খেলার ব্যাপারে। কিন্তু সেখান থেকে এসেই করলেন টানা ১১ ওভার। ৬৮ রানের খরচায় তুলে নিলেন ৭ উইকেট। মাত্র বছরখানেক আগেও যিনি ছিলেন নাইটগার্ড, তিনিই শেষ পর্যন্ত হয়ে গেলেন উইন্ডিজ ক্রিকেটের নায়ক। 

এমন ইনিংসের পর শামার জোসেফকে নিয়ে রীতিমত হইচই পড়ে গিয়েছে ক্রিকেট দুনিয়াতে। সবারই মুখে মুখে এখন এই ক্যারিবিয়ান পেসারের নাম। যে তালিকায় আছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সও। শামারের কারণে ম্যাচ হারতে হলেও এমন বোলিংকে খাটো করে দেখলেন না অজি অধিনায়ক। 

ম্যাচ শেষে নিজের ইন্সটাগ্রামে শামারকে নিয়ে ছবি প্রকাশ করেছেন কামিন্স। ২০২৩ সালের বর্ষসেরা ক্রিকেটারকে শামারকে সম্বোধন করলেন সুপারস্টার হিসেবে, ‘অসাধারণ অভিষেক টেস্ট সিরিজ। এখনই একজন তারকা। দারুণ খেললে।’

শামারকে নিয়ে বন্দনায় মেতেছেন ক্রিকেটের ঈশ্বর হিসেবে খ্যাতি পাওয়া শচীন টেন্ডুলকারও। টুইটারে শামারের ৭ উইকেটের কথা উল্লেখ করে টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন ভারতের ক্রিকেট কিংবদন্তি। 

আগের দিন মিচেল স্টার্কের বিধ্বংসী এক ইয়র্কার শামার জোসেফের আঙুল থেকে রক্ত ঝরিয়েছিল। ফলে ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে রিটায়ার্ড হার্ট হন এই পেসার। ধারণা করা হচ্ছিল– হয়তো তার বোলিং সার্ভিস মিস করতে যাচ্ছে উইন্ডিজরা। তৃতীয় দিন তিনি শেষদিকে ফিল্ডিংয়েও নামেননি। তবে চতুর্থ দিন যা করে দেখালেন, তা অবিশ্বাস্য। টানা ১০ ওভারের স্পেলে বল করেছেন। আগুনঝরা বোলিংয়ে ৬৮ রানে নিয়েছেন ৭ উইকেট। তাতেই ব্রিসবেনে ঐতিহাসিক এক জয় পেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। 

জেএ