দারুণ এক জয় দিয়ে ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ শুরু করেছে ইংল্যান্ড। শেষ সময়ের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ভারতের স্পিন-পিচকে তারা তিন স্পিনার দিয়ে ভালোভাবে সামাল দিয়েছে। যেখানে নেতৃত্ব দিয়েছেন অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা টম হার্টলি। এরপর থেকে তিনি কোচ ও সতীর্থ থেকে শুরু করে সব মহলেই বেশ প্রশংসা পাচ্ছেন। পরের টেস্টে তাদের সঙ্গে আরও এক স্পিনার যোগ হতে পারে সফরকারীদের একাদশে। ভারতকে হারাতে পরোক্ষভাবে সে ঘোষণাই দিয়ে রাখলেন ইংলিশ কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম।

আহমেদাবাদে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে ভারতকে তার শিষ্যরা হারিয়েছে ২৮ রানে। যেখানে প্রথম ইনিংসে টম হার্টলি অনেক খরুচে থাকলেও, দ্বিতীয় ইনিংসে তাকেই প্রধান অস্ত্র বানান অধিনায়ক বেন স্টোকস। যা নিয়ে কোচ ম্যাককালাম দুজনেরই বন্দনা করেছেন। দু’দলের দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি, বিশাখাপত্তমে। ওই ম্যাচের আগে সংবাদমাধ্যম এসইএনজেড রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারের শিষ্যদের পারফরম্যান্স ও দ্বিতীয় ম্যাচ নিয়ে কথা বলেছেন ইংলিশ কোচ।

ম্যাককালাম বলেন, ‘প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে হাতে গোনা কয়েকটা ম্যাচ খেলা টম হার্টলিকে খেলানো ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। তবে সেটা কাজে এসেছে। ওর মধ্যে আমরা এমন কিছু দেখেছিলাম, যাতে মনে হয়েছিল ও এখানে সফল হতে পারবে। সে কঠিন চরিত্রের একজন ক্রিকেটার। যেভাবে ওকে অধিনায়ক ব্যবহার করল, সেটাও দেখার মতো। বলতে দ্বিধা নেই সে–ই বল হাতে আমাদের টেস্ট জিতিয়েছে। হায়দরাবাদের জয় দলের সবাইকে অনেক আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। তবে এটা একটা লম্বা সিরিজ, সকলেই সেটা জানেন। ভারত দারুণভাবেই ফিরবে। তবে জয়ের রাতটি আমরা ব্যাপক উপভোগ করেছি।’

হার্টলিকে খেলানো অনেকটা বাজির মতো ছিল বলেও মনে করেন বাজ’খ্যাত এই কোচ। এজন্য অনেকে তাদের সিদ্ধান্তকে কাঠগড়ায়ও তুলেছিল বলে তিনি জানান, ‘আমরা যখন হার্টলিকে নির্বাচন করি, অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। ভুললে চলবে না, অস্ট্রেলিয়াও নাথান লায়নকে যখন সুযোগ দেয়, সেই সময় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও বেশি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ছিল না ওর। গড় ছিল ৪০-এর ওপর।’

বাঁ-হাতি এই তরুণ স্পিনারকে উপযুক্ত ব্যবহারের জন্য ম্যাককালাম অধিনায়ক স্টোকসকে কৃতিত্ব দেন, ‘যখন এমন কেউ থাকে, যে নির্দিষ্ট কোনো পরিস্থিতির জন্য উপযুক্ত, তখন সেটা খাপে খাপ হয়ে যায়। এই সমস্ত বিষয়ে নিজের যুক্তির ওপর আস্থা রাখতে হয়। সেই ক্রিকেটারের চরিত্র, স্কিল তো বটেই; নির্বাচনের ক্ষেত্রেও সাহসী হতে হয়। ভারতের ব্যাটাররা প্রথমে ওকে চাপে রাখলেও যেভাবে ক্যাপ্টেন বেন তাকে লম্বা স্পেলে বোলিং করিয়েছে, সেটা প্রশংসনীয়। এতে ওর তুখোড় নেতৃত্বগুণই ধরা পড়ে। এটা দলের বাকিদের কাছেও স্পষ্ট বার্তা যে প্রাথমিকভাবে বিপর্যয় ঘটলেও কাউকে ছুঁড়ে ফেলা হবে না।’

সিরিজ শুরুর আগে ভারতের ভিসা পাওয়া নিয়ে জটিলতায় পড়েছিলেন ইংলিশদের হয়ে এখনও অভিষেক না হওয়া স্পিনার শোয়েব বশির। দ্বিতীয় টেস্ট থেকে তাকে নিয়ে চারজন স্পিনার খেলানোর আভাস দিয়েছেন ম্যাককালাম। সেক্ষেত্রে সফরকারীদের একাদশে নিশ্চিতভাবেই পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে, ‘আবুধাবির ক্যাম্পে ও ছিল। তার স্কিলে দলের সবাইকে প্রভাবিতও করেছে। দলের কন্ডিশনে দারুণভাবে ও খাপ খাইয়ে নেবে। হার্টলির মতই তারও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খুব বেশি অভিজ্ঞতা নেই। তবে ওর স্কিল আমাদের সাহায্য করবে।’

প্রথম টেস্ট চলাকালেই স্কোয়াডে যোগ দেন বশির। নাটকীয়তার পর তিনি একটু দেরিতেই ভারতীয় ভিসা হাতে পেয়েছিলেন। তাকেও বিশাখাপত্তম টেস্টে দেখা যেতে পারে বলে উল্লেখ করেন ম্যাককালাম, ‘একদম ঠিক সময়ে ও দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। স্ট্যান্ড থেকে দলের জয় দেখেছে সে। পরের ম্যাচের ভাবনাতেও আছে বশির। পিচ যদি ঘূর্ণি হয়, তাহলে চার স্পিনার নামিয়ে দিতে আমরা ভয় পাব না!’

এএইচএস