কি ঝড়টাই না শুরু করেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান! চেন্নাই সুপার কিংসের জার্সিতে প্রথমবার আইপিএলে খেলতে নেমে শুরুর দুই ওভারে মাত্র ৭ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন। যদিও শেষ ওভারে ছিলেন কিছুটা খরুচে। ফিজ ভালো করেননি মানেই চেন্নাইও বিপদে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে তাদের অন্য কোনো বোলার সেভাবে চোখ রাঙাতে পারেননি। ফলে শেষদিকের ঝড়ে তারা নির্ধারিত ওভার শেষে ১৭৩ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেয়েছে।

ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৯৭ রানের দুর্দান্ত এক জুটিতে বেঙ্গালুরুর বিপর্যয় সামলেছেন দীনেশ কার্তিক ও অনুজ রাওয়াত। যার জন্য তারা মাত্র ৫০ বল মোকাবিলা করেছেন। শেষ বলে রানআউট হওয়ার আগে রাওয়াত ৪৮ রান করেন। মাত্র ২৫ বলের ইনিংসে তরুণ এই ব্যাটসম্যান ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় হাঁকিয়েছেন। আরেক প্রান্তে অপরাজিত থাকা অভিজ্ঞ কার্তিক ২৬ বলে ৩টি চার ও ২ ছক্কায় ৩৮ রান করেন।

চেন্নাইয়ের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার মুস্তাফিজ। তবে শেষ ওভারে ১৭ রান খরচ না করলে, তার বোলিং ফিগারটা অন্যরকম হতে পারত। তবে বারবারই মহেন্দ্র সিং ধোনিদের ব্রেকথ্রু এনে দেওয়া এই টাইগার পেসার নিজের ৪ ওভারের বোলিং কোটা শেষে ৪ উইকেট নিয়ে ৩০ রান দেন। এরপর একটি উইকেট নিয়েছেন দীপক চাহার। তবে রবীন্দ্র জাদেজা বাদে তিনিসহ বাকি বোলাররা ছিলেন বেশ খরুচে।

ইনিংসের শুরুতে বেঙ্গালুরু যখন উড়ন্ত শুরু করেছিল, তখন একটি ব্রেকথ্রুর অপেক্ষায় ছিল চেন্নাই। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আক্রমণে এসেই হলুদ শিবিরে প্রথম সেই আনন্দের উপলক্ষ্য এনে দেন ফিজ। প্রথম ওভারে মাত্র ৪ রানে তিনি জোড়া শিকার ধরেন। আগ্রাসী ব্যাট করতে থাকা ফাফ ডু প্লেসিকে (২৩ বলে ৩৫ রান) দিয়ে শুরু, এরপর ওই ওভারের শেষ ডেলিভারিতে ফেরান রজত পাতিদারকে। 

মাঝে আর ফিজকে বোলিংয়ে আনেননি মহেন্দ্র সিং ধোনি। চেন্নাইয়ের অধিনায়কত্ব ছাড়লেও যে মূল পরিকল্পনা তার সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মাঝে কেবল একটি উইকেট পতন হয়েছিল বেঙ্গালুরুর। পরবর্তীতে দ্বাদশ ওভারে ফের আক্রমণে আসেন এই বাংলাদেশি পেসার। ওই ওভারের দ্বিতীয় ডেলিভারিতেই তিনি ফিরিয়েছেন বেঙ্গালুরুর বড় ভরসা বিরাট কোহলিকে। ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টায় নিজের উইকেট ছুঁড়ে দিয়েছেন তিনি। বাউন্ডারি লাইনে বল ধরে রবীন্দ্র জাদেজার দিকে ছুঁড়ে দেন অজিঙ্কা রাহানে। রবীন্দ্র বল লুফে নিতেই শেষ হয় কোহলির ইনিংস। ফেরার আগে তিনি ২০ বলে ২১ রান করেন।

দুই বল পর আবারও ফিজের ঝলক। এবার দারুণ স্লোয়ারে বোকা বানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিনকে। ২২ বলে ১৮ রান করা এই তারকাকে ফিজ বোল্ড করে ফেরান। নিজের তৃতীয় ওভারে মুস্তাফিজ উইকেটশূন্য থেকে দেন ৬ রান। তবে শেষ ওভারে বেঙ্গালুরুকে বড় পুঁজি এনে দেওয়া কার্তিক-রাওয়াতের কাছে ছাড় পাননি ফিজও। সেই ওভারে তিনি খরচ করেন ১৭ রান। ফিজ ছাড়া অন্য কেউ চেন্নাইকে সেভাবে পথ দেখাতে পারেননি। 

ফলে কার্তিক-রাওয়াত মিলে মাঝের বিপর্যয় সামলে কোহলি-ডু প্লেসিদের দলকে এনে দেন লড়াকু পুঁজি। ২০ ওভার শেষে বেঙ্গালুরু ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রান সংগ্রহ করে।

এএইচএস