প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৮৮ রানে গুটিয়ে যাওয়ায় শ্রীলঙ্কাকে বেশ এগিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ! যে কারণে দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকেলে নাহিদ রানা ও শরিফুল ইসলামরা দ্রুত উইকেট নিলেও, স্বাগতিক টাইগাররা পরিপূর্ণ ফায়দা তুলতে পারেনি। দ্বিতীয় দিন শেষে লঙ্কানরা ১১৯ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়েছে, তবে প্রথম ইনিংসে পাওয়া ৯২ রান মিলিয়ে তাদের মোট লিড দাঁড়িয়েছে ২১১–তে।

আজ (শনিবার) দিন শেষেও লঙ্কানদের হয়ে ক্রিজে অপরাজিত ছিলেন গত ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। সে কারণেই মূলত কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছে সফরকারীরা। ডি সিলভা ক্রিজে থাকা মানে তাদের লিড আরও বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকছে। একই কারণে পুরো স্বস্তিতে নেই বাংলাদেশ। কারণ প্রথম ইনিংসে বোলারদের দারুণ পারফরম্যান্সের পরও তারা ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল। তাইজুল ইসলামের প্রায় অর্ধশতক (ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৪৭ রান) ছোঁয়া ইনিংস না পেলে, আরও করুণ অবস্থা হতে পারতো স্বাগতিকদের!

এর আগে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩৬তম ফিফটি পূর্ণ করে ফিরেছেন অভিজ্ঞ লঙ্কান ওপেনার দিমুথ করুণারত্নে। পঞ্চাশ ছুঁতেই তাকে ফেরালেন শরিফুল ইসলাম। আরও আগে লঙ্কানদের দ্বিতীয় ইনিংসের লাগামধরা মুহূর্ত এনে দেন অভিষিক্ত পেসার নাহিদ রানা। এখন পর্যন্ত তার শিকার দুটি, একটি করে উইকেট নিয়েছেন মেহেদী মিরাজ ও তাইজুল।

এদিন দ্বিতীয় ইনিংসে শুরুতে যখন লঙ্কানরা ব্যাট করছিল, ৪ ওভার শেষ হতেই বাংলাদেশ দুটি রিভিউ হারিয়ে ফেলে। সফরকারী ব্যাটাররা যেন সময় ক্ষেপণের জন্য নেমেছিলেন। তবে তাদের সেই উদ্দেশ্য বেশিক্ষণ সফল হয়নি। চা বিরতির আগেই ওপেনার নিশান মাদুশকাকে ফেরান রানা। তার অফ-স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলার চেষ্টায় ব্যাটের কানায় লেগে লঙ্কান ব্যাটার কট বিহাইন্ড হন। ফেরার আগে তিনি ২০ বলে করেন ১০ রান। ১৯ রানেই প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।

বিরতির পর নেমে লঙ্কান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিসও পরাস্ত হন রানার গতির সামনে। নাহিদ রানার লেগ স্টাম্পের ওপর করা বাউন্সার পুল করতে গিয়েও ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে যায় লিটন দাসের গ্লাভসে। ১০ বলে মাত্র ৩ রান করেন মেন্ডিস। চার নম্বরে নেমে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতা পেরোনোর চেষ্টা করছিলেন। কিছুটা বল–রান সমান রেখেই ব্যাট করেন তিনি। তবে তার ইনিংসও বেশি লম্বা হয়নি। তাইজুলের করা অফ স্টাম্পের বাইরে টার্ন ও বাউন্স করা ডেলিভারিতে কট বিহাইন্ড হন ম্যাথিউস। তার আগে ২৪ বলে তিনি ২২ রান করেন।

এরপর অভিজ্ঞ দীনেশ চান্দিমাল টিকতে পারেননি। রানের খাতা খোলার আগেই তিনি মেহেদী মিরাজের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন। তখন ক্রিজে আসেন আগের ইনিংসে দাপট দেখানো জুটি। একপ্রান্ত আগলে রাখা করুণারত্নের সঙ্গে যোগ দেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। এবারও লঙ্কান ইনিংসের বিপর্যয় সামলে তারা ৪৯ রানের জুটি গড়েন। এরপরই শরিফুলের আঘাত। শরীর বরাবর আসা বাউন্সার পুল করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি করুণারত্নে। ডিপ ফাইন লেগে তার ক্যাচ নেন নাহিদ রানা। অভিজ্ঞ ওপেনার ৭ চার ও ১ ছক্কায় ১০১ বলে ৫২ রান করেন।

দিনশেষে ডি সিলভা ২৩ রানে অপরাজিত আছেন। তৃতীয় দিন লিড বড় করতে তার ইনিংসের দিকে তাকিয়ে আছে শ্রীলঙ্কা।

এএইচএস