আইপিএলের একটি ম্যাচে ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন ভারতের সাবেক এক ক্রিকেটার। সেই ছবি পরে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করেন। তাতেই বাধে বিপত্তি। প্রথম দফায় ছবি মুছে ফেলতে বলা হলো। কিন্তু অস্বীকৃতি জানান সেই ক্রিকেটার। পরে বিসিসিআইয়ের তোপের মুখে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ছবি মুছে ফেলতে বাধ্য হন ওই ক্রিকেটার। 

ঘটনা এখানেই শেষ নয়। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ম্যাচের ভিডিও পোস্ট করেছিল একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি। শেষ পর্যন্ত ওই দলকে ৯ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়।

ম্যাচ ডেতে স্টেডিয়াম থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ধারাভাষ্যকার, খেলোয়াড় এবং আইপিএল দলগুলো যাতে ছবি বা ভিডিও আপলোড না করে সে ব্যাপারে আগে থেকেই নির্দেশনা ছিল বিসিসিআইয়ের। এবার সেটি নিশ্চিত করতে আরও সক্রিয় ভূমিকায় দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।

স্পন্সরদের স্বার্থরক্ষায় আইপিএল কমিটি কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। বিষয়টি সামনে এসেছে সাবেক এক ক্রিকেটারের প্রকাশ করা ছবি বিসিসিআইয়ের হস্তক্ষেপে মুছে ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। 

প্রতিবেদন বলছে, প্রথমদিকে বেশ কিছু বিষয়ে ছাড় দিয়েছিল বিসিসিআই। কিন্তু, টুর্নামেন্ট যতই এগোচ্ছে, ততই স্পন্সরদের স্বার্থরক্ষায় আইপিএল কমিটি কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। এমন বিষয় সামনে এসেছে সাবেক এক ক্রিকেটারের প্রকাশ করা ছবি বিসিসিআইয়ের হস্তক্ষেপে মুছে ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ভারতের সাবেক একজন ব্যাটসম্যান (নাম গোপন করা হয়েছে) আইপিএল ম্যাচ চলাকালীন কমেন্ট্রি (ধারাভাষ্য) দেওয়ার সময়ের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন। বিসিসিআইয়ের একজন কর্মী তাকে সেই ছবি মুছে ফেলতে বলেন।

স্পন্সরদের স্বার্থরক্ষায় কঠোর অবস্থানে আইপিএল কমিটি।

ওই কর্মীর কাজই হলো, ধারাভাষ্যকাররা ম্যাচের দিনে স্টেডিয়ামের কোনো অংশ থেকে ছবি যেন পোস্ট না করতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করা। যে সাবেক ব্যাটসম্যান ছবিটি পোস্ট করেছিলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অনুসারীর সংখ্যা মিলিয়নের ঘরে। তিনি প্রথমে ছবিটি ডিলিট করতে রাজি হননি। কিন্তু, সেই বিসিসিআই কর্মীও নাছোড়বান্দা। শেষ পর্যন্ত ওই ক্রিকেটার বাধ্য হন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ছবিটি সরাতে।

আপত্তিটা এসেছে মূলত দুই সম্প্রচার সত্ত্বের প্রাপক স্টার ইন্ডিয়া এবং ভায়াকম ১৮ থেকে। সম্প্রচার সত্ত্ব কিনে নেওয়ায় ‘লাইভ ম্যাচ’ এবং ‘মাঠের ওপর’ তাদের একচেটিয়া অধিকার। তাদের আপত্তিতেই ধারাভাষ্যকার, খেলোয়াড়, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে বিসিসিআই। অবশ্য, দলগুলোকে কিছুটা ছাড়ও দেওয়া হয়েছে।

আইপিএল দলগুলোকে ম্যাচ থেকে ফুটেজ বা ভিডিও নিতে এবং সরাসরি তা সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে পোস্ট করার অনুমতি দেওয়া হয় না। তবে ম্যাচের দিন সীমিত সংখ্যক ছবি পোস্ট করতে পারে দলগুলো। আর, বিসিসিআই বা আইপিএল সোশ্যাল মিডিয়ায় যা প্রকাশ করে, তা পুনরায় পোস্ট করার অনুমতি দেওয়া হয় ধারাভাষ্যকার এবং খেলোয়াড়দের।

বিসিসিআইয়ের একজন কর্মকর্তা এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘সম্প্রচারকারীরা আইপিএল স্বত্বের জন্য অনেক টাকা দিয়েছে। তাই ধারাভাষ্যকাররা সোশ্যাল মিডিয়ায় ম্যাচের দিন ভিডিও বা ছবি পোস্ট করতে পারবেন না। এমন ঘটনাও ঘটেছে যে ধারাভাষ্যকাররা ইনস্টাগ্রাম লাইভ করেছেন বা মাঠ থেকে ছবি পোস্ট করছেন। একটা ভিডিও তো এক মিলিয়ন ভিউও পেয়েছে। কিন্তু, সেটা করা যাবে না। এমনকী আইপিএল দলও খেলার লাইভ ভিডিও পোস্ট করতে পারে না। তারা সীমিত সংখ্যক ফটো পোস্ট করতে পারে। আর, তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে লাইভ ম্যাচ আপডেট দিতে পারে। এক্ষেত্রে দোষী প্রমাণিত হলে ফ্র্যাঞ্চাইজিকেও জরিমানা করা হবে।’

দলগুলোকে ম্যাচ থেকে ফুটেজ বা ভিডিও নিতে এবং সরাসরি তা সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে পোস্ট করার অনুমতি দেওয়া হয় না। তবে ম্যাচের দিন সীমিত সংখ্যক ছবি পোস্ট করতে পারে দলগুলো। আর, বিসিসিআই বা আইপিএল সোশ্যাল মিডিয়ায় যা প্রকাশ করে, তা পুনরায় পোস্ট করার অনুমতি দেওয়া হয় ধারাভাষ্যকার এবং খেলোয়াড়দের।

বিসিসিআই জানিয়েছে, প্রত্যেকে যাতে নিয়ম মেনে চলে, সেদিকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। এক বিসিসিআই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘খেলোয়াড়দের ম্যাচের দিনগুলোতে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট সম্পর্কে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। খেলোয়াড়দের সব পোস্টের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। তাদের নিয়ম সম্পর্কে জানানো হয়েছে। কিন্তু, আমরা দেখতে পেয়েছি যে এরপরও তাদের মধ্যে কেউ কেউ নির্দেশ মানেনি। আমরা, কড়াভাবে বিষয়টা দেখছি।’

এফআই