বোলার হিসেবে একের পর এক কীর্তিতে নাম আছে সুনীল নারিনের। ৫০০ উইকেটের ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন আরও আগেই।এবার ব্যাট হাতেও নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিচ্ছেন। চলতি আইপিএলে একের পর এক বিধ্বংসী ইনিংস খেলছেন। টেল-এন্ডার থেকে ওপেনার বনে যাওয়া নারিন মুগ্ধ করছেন ক্রিকেটপ্রেমীদের। সর্বশেষ গতকাল রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ১০৯ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলেছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের এই অলরাউন্ডার

স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে প্রায় পাঁচশ ম্যাচ খেলেছেন নারিন। মারকুটে ব্যাটার হিসেবে স্বীকৃতি ছিল বটে, তবে নারিনের কাজটা বোধহয় উড়ন্ত সূচনা এনে দেওয়া পর্যন্তই। উইন্ডিজের এই ক্রিকেটার ব্যাট হাতে বড় ইনিংস খেলবেন, এমনটা তার দলেরও হয়ত প্রত্যাশা থাকে না। ওপেনার হিসেবে তার কাজ সূচনা ভালো করে দিয়ে যাওয়া। 

কিন্তু কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে ঘরের মাঠ ইডেন গার্ডেনে গতকাল একেবারেই ভিন্ন কিছু করে দেখালেন নারিন। দুর্দান্ত সব চার-ছয়ের পসরা সাজিয়ে পেলেন যে কোনো ফরম্যাটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা। ৫৬ বলের ইনিংসটি সাজানো ছিল ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কার মারে। এমন ইনিংসের জন্য দাঁড়িয়ে হাততালিতে তাকে অভিবাদন জানান বলিউড বাদশাহ শাহরুখ। অবশ্য শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি জিততে পারেননি কেকেআর। বাটলারের সেঞ্চুরিতে ম্লান হয়েছে নারিনের শতক।

নারিনের এমন অবিশ্বাস্য ইনিংসের পর তার জাতীয় দলে ফেরার প্রশ্ন আবারও উঠছে। অবশ্য সম্প্রতি তিনি জানিয়েছিলেন, বিশ্বকাপ তিনি ঘরে বসেই দেখবেন। কিন্তু গতকাল সেঞ্চুরির পর কিছুটা সুর বদল করেছেন। যা আশার পালে হাওয়া দিতে পারে ক্যারিবীয় সমর্থকদে। জাতীয় দল থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন করে ভাববেন কি না—এ প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘দেখা যাক ভবিষ্যতে কী হয়।’

এদিকে, রাজস্থান রয়্যালসে খেলা ক্যারিবীয় অধিনায়ক পাওয়েলকে প্রশ্ন করা হয় নারিনকে জাতীয় দলে ফেরানোর পরিকল্পনা তাদের আছে কি না। পাওয়েল সরাসরিই জানান যে তারা নারিনকে ফেরাতে চান। তিনি নিজেও গত এক বছর ধরে নারিনকে বারবার বলেছেন। কিন্তু তাদের ডাকে সাড়া দেননি।

পাওয়েলের ভাষ্যমতে, 'আমার গত ১২ মাস ধরে আমি সুনীল নারিনকে বলেই যাচ্ছি (তাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-টোয়েন্টি দলে ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করছি)। কিন্তু সে সবাইকে ব্লক করে দিয়েছে। আমি তার সেরা বন্ধু পোলার্ড, ব্রাভো এবং পুরানকে জিজ্ঞাসা করেছি এবং আশা করি তারা দল নির্বাচন করার আগে তার পরিকল্পনা জানতে পারবে।'

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে সরব উপস্থিতির কারণে অনিয়মিত হয়েছিলেন জাতীয় দলে। গত বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন ক্যারিবীয় এই তারকা। ২০১৯ সালের আগস্টে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে খেলেছিলেন। এ ছাড়া ২০১৬ সালের ৫ অক্টোবর শেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলেন নারিন। আর শেষ টেস্ট খেলেছিলেন ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে।

উল্লেখ্য, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের গর্বিত সদস্য ছিলেন সুনীল নারিন। সেবার ক্যারিবীয়দের হয়ে ৯ উইকেট নিয়ে বিশ্বজয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন তিনি।

এফআই