আইপিএল যাত্রায় নিজেদের প্রথম দুই আসরেই ফাইনাল খেলেছিল গুজরাট টাইটান্স। সে দলটিই কিনা চলতি আসরে মুদ্রার অপর পিঠ দেখছে। হার্দিক পান্ডিয়া গুজরাট ছেড়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে যোগ দেওয়ার পর অবনমন হয়েছে দুই দলেরই। শুভমান গিলের নেতৃত্বাধীন গুজরাট তো আজ (বুধবার) নিজেদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন রানে অলআউটের লজ্জায় পড়েছে। পুরো ২০ ওভারও খেলতে পারেনি তারা। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে সর্বসাকুল্যে তাদের সংগ্রহ ৮৯ রান।

ঘরের মাঠ আহমেদাবাদ নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আজ গুজরাটের অবস্থা ছিল ‘ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি’ ঘরানার। অথচ ইনিংসের প্রথম চার ওভারের খেলা শেষে নির্ধারিত ২০ ওভারে গিলদের সম্ভাব্য স্কোর দেখাচ্ছিল ১৬৯ রান। ছয় ওভার শেষে সেটি নেমে আসে ১২০–এ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গুজরাট তিন অঙ্কের ঘরও ছুঁতে পারেনি। শেষদিকে রশিদ খানের সর্বোচ্চ রানের (২৪ বলে ৩১) ইনিংস না এলে আরও বড় লজ্জায় পড়তে পারতো গত আসরের ফাইনালিস্টরা।

গুজরাটের এমন সংগ্রহ চলতি আসরে কোনো দলের সর্বনিম্ন রানের নজির। অথচ এবারের আইপিএলে একের পর এক রানের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে দলগুলো। আসরের অর্ধেক ম্যাচও মাঠে না গড়াতেই আইপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড হয়েছে দু’বার। সেক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বেমানান এক ইনিংসই উপহার দিলো গুজরাট। নির্ধারিত ওভারের ১৬ বল বাকি থাকতেই গুজরাটের ইনিংস শেষ হয়ে গেছে। জয়ের জন্য ঋষভ পান্তের দিল্লি ক্যাপিটালসের লক্ষ্য মাত্র ৯০ রান। ১৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দিল্লির সফলতম বোলার মুকেশ কুমার।

টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই নড়বড়ে ছিল গুজরাটের ইনিংস। ইশান্ত শর্মার বলে দলীয় মাত্র ১১ রানে অধিনায়ক শুভমান গিলকে হারায় তারা (৬ বলে ৮ রান)। অপর ওপেনার ঋদ্ধিমান সাহাও মাত্র ২ রান করলেন ১০ বল খেলে। তিন নম্বরে নামা সাই সুদর্শন করেন ৯ বলে ১২ রান। এরপর নামা ডেভিড মিলারের অবদান ৬ বলে ২ রান। অভিনব মনোহরের ব্যাট থেকে ১৪ বলে ৮ রান আসে। এছাড়া রাহুল তিওয়াতিয়া ১০ রান করেন ১৫ বল খেলে। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে নামা শাহরুখ খান প্রথম বলেই আউট হয়ে যান। একেবারে টি-টোয়েন্টির সঙ্গে বেমানান ইনিংস খেলতে থাকেন গুজরাট ব্যাটাররা!

মাত্র ৪৮ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকরা চাপে পড়ে যায়। সেই চাপ সামলাতে পারেননি নীচের দিকের ব্যাটাররাও। গুজরাটের ইনিংসে ধস নামার নেপথ্যে দিল্লির বোলারদের কৃতিত্ব থাকলেও বেশি ছিল শুভমানদের ব্যাটিং ব্যর্থতা। ভুল শট নির্বাচন করে আউট হন একাধিক ব্যাটার। শেষদিকে কিছুটা লড়াইয়ের চেষ্টা করেন রশিদ খান। যদিও আফগান অলরাউন্ডারের ইনিংস দলকে ভরাডুবি থেকে বাঁচাতে পারেনি। রশিদ করলেন ২৪ বলে ২টি চার এবং ১টি ছক্কায় ৩১। গুজরাটের পক্ষে এদিন একমাত্র ছক্কাটি আসে রশিদের ব্যাটে। আর কেউ দলের হাল ধরতে না পারায় ১৭.৩ ওভারে গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস।

এর আগে গুজরাট নিজেদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ১২৫ রান করেছিল গত আসরে। সেই ম্যাচটির প্রতিপক্ষ এবং ভেন্যুও ছিল একই। দিল্লির বিপক্ষে আহমেদাবাদে করা সেই নজির ভেঙে আজ আরও লজ্জায় পড়েছে গিলের দল। তবে আইপিএলে এরচেয়েও লজ্জার নজির রয়েছে দলগুলোর। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ২০১৭ আসরে টুর্নামেন্টের সর্বনিম্ন ৪৫ রানে অলআউট হয়েছিল। বিব্রতকর এই তালিকায় গুজরাটের অবস্থান ২৮তম।

দিল্লির বোলারদের মধ্যে ইশান্ত ৮ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া ট্রিস্টান স্টাবস ১১ রানে ২ উইকেট, অক্ষর প্যাটেল ও খলিল আহমেদ ১টি করে শিকার ধরেন। 

এএইচএস