ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) সুপার লিগ খেলছেন মুশফিকুর রহিমরা। ঘরোয়া এই টুর্নামেন্টে আজ (বৃহস্পতিবার) ঘটনাবহুল দিন গেছে। একদিনে ভিন্ন তিনটি ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন তিনজন— নাজমুল হোসেন শান্ত, রনি তালুকদার ও ফজলে মাহমুদ রাব্বি। তবে প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে মুশফিকের আউট নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যার রেশ ধরে ম্যাচ শেষে হাত মেলাননি দু’দলের ক্রিকেটাররা।

মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে এদিন মুখোমুখি হয়েছিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডান। আগে ব্যাট করে মোহামেডান রনি তালুকদারের সেঞ্চুরিতে ৩১৭ রানের বড় পুঁজি গড়ে। রানতাড়ায় প্রাইম ব্যাংকও ভালো লড়াই দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা অলআউট হওয়ার আগে ২৮৪ রান তুলতে সক্ষম হয়। ফলে প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে ৩৩ রানে ম্যাচটি জিতে যায় মোহামেডান।

তবে বিপত্তি বাধে ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে প্রাইম ব্যাংকের ব্যাটিংয়ের সময়। স্পিনার নাঈম হাসানের করা ৩৪তম ওভারের চতুর্থ বলে মুশফিক মিড উইকেটে উড়িয়ে মারেন, বাউন্ডারি সীমানার খুব কাছ ঘেঁষে আবু হায়দার রনি ডাইভ দিয়ে অবিশ্বাস্য ক্যাচ লুফে নেন। প্রথমে মুশফিক হতাশ হয়ে মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়তে থাকেন। তবে খানিক পরই বিপত্তি বাধে। মিস্টার ডিফেন্ডেবল মাঠ ছাড়ার আগেই আটকান সতীর্থরা। তাদের দাবি– রনির পা বাউন্ডারি স্পর্শ করেছে।

অধিনায়ক তামিম ও কোচ সালাউদ্দিনরা আউটের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখান, ফলে ম্যাচ বন্ধ থাকে পনেরো মিনিটের মতো

অন্যদিকে, বিসিবি সম্প্রচারিত ইউটিউব চ্যানেলের রিপ্লেতে দেখা যায়, ডাইভ দিয়ে ওঠার সময় বাউন্ডারি সীমানা স্পর্শ করে রনির পা। এরপর ছক্কা নাকি আউট; এই দ্বিধায় পনেরো মিনিটের মতো খেলা বন্ধ থাকে। প্রাইম ব্যাংককের ড্রেসিংরুম থেকে অধিনায়ক তামিম, কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনসহ অনেকেই বেরিয়ে আসেন।  বারবার ভিডিও দেখে আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় তামিমকে। শেষ পর্যন্ত মুশফিককে (১০ রান) আউট দেওয়া হয়। প্রাইম ব্যাংকও সিদ্ধান্ত মেনে নেয়। মূলত ইউটিউবে সীমিত ক্যামেরায় প্রচারিত হলেও টিভি আম্পায়ার নেই। কাজেই আম্পায়ারদের পক্ষে রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব ছিল না।

সেই আউটের সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও, প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেটাররা খেলার পর ড্রেসিংরুম থেকে আর বের হননি। খেলা শেষে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের খেলোয়াড়রা মাঠে থাকলেও সৌজন্য বিনিময় করতে দেখা যায়নি। যা নিয়ে পরে মোহামেডানের হয়ে ক্যারিয়ারসেরা ১৪১ রানের ইনিংস খেলা রনি তালুকদার কথা বলেছেন। তিনি জানান, ‘আমরা মাঠেই ছিলাম। বাকিটা প্রাইম ব্যাংকের ব্যাপার। এটা উনাদের ব্যাপার। এটা নিয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই।’

মুশফিকের বিতর্কিত আউট নিয়ে এই ব্যাটার বলেন, ‘এটা রনিই (আবু হায়দার) ভালো জানে। কারণ সে–ই ক্যাচটা ধরেছে। রনির ওপরেই পুরোটা নির্ভর করবে। ও যেই সিদ্ধান্তটা দেবে সেটার ওপরেই…কারণ এখানে তো ওইভাবে ক্যামেরা ছিল না। থার্ড আম্পায়ার যদি থাকত, তাহলে সেটা ভালোভাবে দেখতে পারত। এখন এটা খেলোয়াড়দের ওপরেই যায়।’

এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মুশফিক কিংবা প্রাইম ব্যাংকের পক্ষে কেউ কোনো মন্তব্য করেননি। তবে নিজেদের ফেসবুক পেজে ম্যাচের হাইলাইটস ভিডিও শেয়ার করে তারা ক্যাপশনে লিখেছে, ‘মি. ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিমের বিতর্কিত আউটে কপাল পোড়ে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের।’

এএইচএস