মনোনয়ন বাতিল, ফারুক কি সভাপতি আছেন!
ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ফারুক আহমেদ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনীত পরিচালক ছিলেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে এক অফিস আদেশে ফারুক আহমেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছে। ফলে তিনি আর বিসিবির পরিচালক নন। বিসিবির পরিচালক না থাকলে তিনি সভাপতি থাকতে পারেন কি না সেটি যেমন প্রশ্ন, তেমনি তিনি মনোনীত পরিচালক হলেও সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত। তাছাড়া পরিচালক মনোনয়ন প্রত্যাহার হলেও নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে বৈধতা এখনো থাকে কি না এ প্রশ্নও উঠেছে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম এনডিসি বলেন, ‘আটজন পরিচালকের ফারুক আহমেদের প্রতি অনাস্থা চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিসিবির কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফারুক আহমেদের পরিচালক মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছে। ফারুক আহমেদ সংক্রান্ত অন্য বিষয়াদি বিসিবির ওপর নির্ভরশীল। বিসিবির গঠনতন্ত্র মোতাবেক বিসিবির পরিচালকরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।’
বিজ্ঞাপন
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের বিসিবিতে পরিচালক মনোনয়ন ও প্রত্যাহার করার এখতিয়ার রয়েছে। বিধিমোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সেটাই করেছে। সভাপতি, সহ সভাপতি সংক্রান্ত বিষয়ে বিসিবিতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে না বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী। তবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন ২০১৮ অনুসারে যেকোনো ফেডারেশনে যেকোনো রদবদলের চূড়ান্ত এখতিয়ার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের রয়েছে। আইসিসি ও ফিফার নিষেধাজ্ঞার জন্য দুই শীর্ষ ফেডারেশনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ গঠনতন্ত্র বহির্ভূত পদক্ষেপ সাম্প্রতিক সময়ে নেয়নি।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
বিসিবি সভাপতি প্রসঙ্গে সুস্পষ্ট নিয়ম রয়েছে গঠনতন্ত্রে, তাকে অবশ্যই পরিচালক হতে হবে। পরিচালক থেকে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর পদত্যাগ না করলে সভাপতির অপসারণ প্রক্রিয়া নিয়ে গঠনতন্ত্রে সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেই। আবার পরিচালক পদে না থাকলে সভাপতি থাকতে পারবে না, সেটাও স্পষ্টভাবে নেই। ২০২৪ সালের গঠনতন্ত্রের ৮ম অধ্যায়ে গঠনতন্ত্র সংক্রান্ত ব্যাখ্যার ভার পরিচালনা পর্ষদের ওপরই দেওয়া হয়েছে। বিসিবির পরিচালকদের ওপর বিষয়টি ছাড়লেও উদ্ভূত সংকটে প্রয়োজনে সহায়তা করার আশ্বাস জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সচিবের, ‘আইসিসির গাইডলাইনের সঙ্গে সংগতি রেখে বিসিবি যদি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বা সরকারের কাছে কোনো সহায়তা বা পরামর্শ চায় দেশের ক্রিকেটের স্বার্থে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অবশ্যই কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।’
আমিনুল ইসলাম বুলবুলের কাউন্সিলর মনোনয়ন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ দিলেও বিসিবি গঠনতন্ত্রের ১২.৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সেটার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি বা বৈধতা আসবে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদে গৃহীত হলে। এ বিষয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সচিবের মন্তব্য, ‘গঠনতন্ত্র মোতাবেক বিষয়টি এরকমই।’ পরিচালনা পর্ষদের সভা ডাকেন মূলত সভাপতি। এখন সভাপতির বৈধতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকায় সভা আহ্বান একটি সংকট। এক্ষেত্রে বিসিবির রেফারেন্স ২০২৪ সালের আগস্টে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভা। নাজমুল হাসান পাপনের অর্বতমানেও সভা হয়েছিল।
বিসিবির মোট পরিচালক সংখ্যা ২৫ জন। ফারুক আহমেদের পরিচালক পদ প্রত্যাহার হওয়ায় এখন সেই সংখ্যা মাত্র ৯ জন। পরিচালনা পর্ষদের সভায় কোরামের জন্য প্রয়োজন এক তৃতীয়াংশ উপস্থিতি। সেই সংখ্যক পরিচালক অবশ্য এখনো বিদ্যমান রয়েছে।
এজেড/এসএসএইচ