এবার আম্পায়ারিং নিয়ে ক্ষুব্ধ সাব্বির-শাহাদাত
সাকিব আল হাসান কাণ্ডের পর এমনিতেই টালমাটাল বাংলাদেশ ক্রিকেট। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন তো সরাসরিই জানিয়েছেন, এ নিয়ে বেশ চাপের মুখে আছেন তিনি ও তার বোর্ড। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ নিয়ে অভিযোগের কমতি নেই। সাকিবের স্টাম্পে লাথি মারা ও উপড়ে ফেলার পর সেটি নতুন করে আলোচনায়।
ঢাকা লিগের আম্পায়ারিং ইস্যু নিয়ে যখন ক্রিকেট মহলে বিতর্ক, আলোচনা চারিদিকে, তখন আবার ঘটল অপ্রীতিকর ঘটনা। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পেরে মাঠেই প্রতিবাদ করলেন লিজেন্ড অব রূপগঞ্জের ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান ও পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের পেসার শাহাদাত হোসেন। তবে এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ ম্যাচ অফিসিয়ালরা।
বিজ্ঞাপন
ঘটনা ১- ভেন্যু সভারের বিকেএসপি
সাভারের বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিপিএলে সপ্তম রাউন্ডের ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুই দল লিজেন্ড অব রূপগঞ্জ ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। এই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে রূপগঞ্জ। ঘটনা তখনকার। রূপগঞ্জের ইনিংসের তখন ১৫তম ওভারের খেলা চলছিল। বোলার সালাহউদ্দিন শাকিল ওভারের পঞ্চম বলটি করলেন অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে। সেটি খেলার চেষ্টা করলেন সাব্বির।
বিজ্ঞাপন
তবে যেখানে খেলতে চেয়েছেন সাব্বির, সেটি হলো না। বল গিয়ে আটকালো উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে। বোলার-কিপার দুজনই আউটের আবেদন করলেন, ফিল্ড আম্পায়ার সঙ্গে সঙ্গেই সাড়া দিলেন তাতে। তবে এমন সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ সাব্বির। উইকেটও ছাড়তে চাইলেন না। আম্পায়ারকে হাতের ইশারায় বোঝালেন এটি কোনোভাবেই তার ব্যাট স্পর্শ করেনি।
তবে সিদ্ধান্ত অনড় ফিল্ড আম্পায়ার। সাব্বিরও তার জায়গা ছাড়তে নারাজ। এরপর তার জাতীয় দলের সতীর্থ সোহানকে দেখা গেল সাব্বিরের সঙ্গে কথা বলতে। ভিডিও ফুটেজ দেখেও বোঝা গেল, শাকিলের করা বলটি সাব্বিরের ব্যাটের বেশ বাইরে দিয়ে গিছে। পরে একরাশ হতাশা নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান সাব্বির। এতে থামে তার ৩১ বলে ৪১ রানের ইনিংসটি। শেষপর্যন্ত বৃষ্টি আইনে শেখ জামাল জয় পায় ৭ রানে।
ঘটনা ২- ভেন্যু মিরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম
এখানে সকাল ৯টায় শুরু হয়ে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব ও প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ম্যাচ। এ ম্যাচে আগে ব্যাট করে দোলেশ্বরকে ১৩৫ রানের লক্ষ্য দেয় পারটেক্স। লড়াইটা হচ্ছিল বেশ জমজামাটপূর্ণ। ঘটনা দোলেশ্বরের ইনিংসের ১৯তম ওভারে। শেষ ২ ওভারে তখন দোলেশ্বরের জয়ের জন্য প্রয়োজন ১৩ রান। ব্যাট করছিলেন দুই সেট ব্যাটসম্যান ফজলে মাহমুদ ও শামীম পাটোয়ারি।
বল করতে আসেন পেসার শাহাদাত হোসেন। তার করা প্রথম বলে এক রান তোলেন ব্যাটসম্যান শামীম। এরপর প্রান্ত বদল করে স্ট্রাক প্রান্তে যান ফজলে মাহমুদ। শাহাদাতের করা দ্বিতীয় বলটি তার পায়ে লাগলে জোড়ালো আবেদন করেন পারটেক্সের খেলোয়াড়রা। তাতে সাড়া দেননি মাঠে থাকা ফিল্ড আম্পায়ার। এতে ক্ষিপ্ত হতে দেখা যায় শাহাদাতকে।
নিজের তৃতীয় বলে ৭১ রানে থাকা ফজলে মাহমুদকে মেহরাব হোসেনের তালুবন্দি করান শাহাদাত। তখনও তাকে বেশ উত্তেজিত দেখা যায়। পাগলাটে উদযাপনে জানান দেন, আম্পায়ারের আগের সিদ্ধান্তে কতটা অসন্তুষ্ট ছিলেন তিনি।
এই ঘটনার পর ম্যাচ অফিশিয়ালি রকিবুল হাসানকে ফোন দিলে এ নিয়ে কথা বলতে চাননি তিনি। জানালেন, এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলা নিয়মবহির্ভূত।
তবে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট যে নিয়মে চলছে, সাকিব আল হাসানের ঘটনার পর তার পুরোটাই এখন সামনে। আম্পায়ারিং ইস্যুতে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটিও করে দিয়েছেন খোদ বোর্ড সভাপতি। এখন দেখার বিষয়, ঠিক কোন পথে হাঁটে বিসিবি।
টিআইএস/এনইউ