বর্তমানে ভারত জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য পেসার মোহাম্মদ সিরাজ। যদিও এই তারকার ফর্মের উত্থান-পতন এখনও হয়। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ব্রাত্য হয়ে পড়লেও, ভারতের ওয়ানডে ও টেস্ট দলে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তবে ফর্মের বিচারে ‘হিরো’ হওয়ার পরের ম্যাচেই সিরাজের ‘জিরো’তে পরিণত হওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। যখন শুনতে হয় নানা কটু বাক্য, সমালোচনা এবং সামাজিক মাধ্যম সয়লাব হয় ট্রলে।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানান সিরাজ। ৩১ বছর বয়সী এই ডানহাতি পেসার বলেন, ‘খুব বাজেভাবে ট্রল করা হয়। যখন আপনি পারফর্ম করবেন, ভক্ত এবং পুরো বিশ্ব আপনার সঙ্গে থাকবে। তখন বলা হবে “সিরাজের মতো কোনো বোলার নেই”। পরের ম্যাচে যদি আপনি সেরকম পারফর্ম করতে না পারেন, তারা বলবে “আরে, এ কোন ধরনের বোলার! গিয়ে বাবার সঙ্গে অটো চালাও।” এমন কথার কী মানে দাঁড়ায়? এক ম্যাচে আপনি হিরো, পরের ম্যাচেই ফের জিরো।’

সিরাজের প্রয়াত দাদা একসময় রিকশা চালাতেন, সেই বিষয়টা টেনে এনেই মূলত খোঁচানো হয় বলে উল্লেখ করেন ভারতীয় এই ক্রিকেটার। তাই নিজের মনোবল ঠিক রাখতে বাইরে আলাপে মাথা ঘামানো বন্ধ করে দেন সিরাজ, ‘মানুষ কত দ্রুত বদলে যায়! আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাইরের কোনো মতামত বা মূল্যায়ন আমার প্রয়োজন নেই। আমার সতীর্থ ও পরিবার আমার সম্পর্কে কী ভাবে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। তারাই আমার কাছে বিবেচ্য। বাইরে লোক কী ভাবে তা পরোয়া করি না।’

এক্ষেত্রে অবশ্য সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির একটি পরামর্শ মেনে চলেন সিরাজ। ধোনি কী বলেছিলেন তা জানিয়ে এই পেসার উল্লেখ করেন, ‘আমি যখন ভারতীয় দলে যোগ দিই, সেই সময়ের কথা মনে আছে। এমএস ধোনি আমাকে বলেছিলেন, “অন্যরা কী বলে তাতে মনোযোগ দেবে না। যখন তুমি ভালো পারফর্ম করবে পুরো বিশ্বই তোমার সঙ্গে থাকবে, আর বিপরীত কিছু ঘটলে সবাই মিলে তোমাকে গালি দেবে। আঘাত করবে বাজেভাবে।”’

সম্প্রতি টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। যেখানে স্কোয়াডে জায়গা হয়নি সিরাজের। এর আগে ওয়ানডে ফরম্যাটের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তিনি খেলার সুযোগ পাননি। সিরাজ কী টেস্টের জন্য কেবল বিশেষজ্ঞ পরিণত হয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নে তার জবাব, ‘আমি সুযোগ পেলে তিন ফরম্যাটেই ভালো করার ব্যাপারে ২০০ ভাগ আত্মবিশ্বাসী। আমরা দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলেছি, যেখানে অনেক গরম এবং স্পিনারদেরই বেশি প্রয়োজন ছিল। ফলে আমাকে নেওয়া হয়নি। রোহিত (শর্মা) ভাইও আমাকে বলেছিলেন যে, সেখানে বেশিরভাগ বল স্পিনারদের দিয়ে করানো হবে। তাই সেখানে নিয়ে আমাকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখতে চাননি।’

সিরাজ আরও বলেন, ‘তিনি আমাকে বলেছিলেন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে, মাঝেমধ্যে যেন প্র্যাকটিস ও ফিটনেস নিয়েও কাজ করি। একইভাবে এশিয়া কাপের আগে ইংল্যান্ড থেকে ৫ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলে এসেছি। ফলে এটাই ছিল বিশ্রামের সুযোগ।’

এএইচএস