বছরটা খারাপই যাচ্ছে সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক রে ইলিংওয়ার্থের। চলতি বছরের শুরুতে তিনি হারিয়েছেন প্রিয়তমা স্ত্রীকে। এবার নিজের শরীরেই ধরা পড়েছে দুরারোগ্য ক্যান্সার। এর আগে স্ত্রী শার্লির মৃত্যুর বিভীষিকা দেখেছিলেন নিজের চোখে, যার কারণে এখন তিনি নিজেই বেঁচে থাকার ইচ্ছেশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন, চেয়েছেন স্বেচ্ছামৃত্যু। কিন্তু ইংল্যান্ডের আইনসিদ্ধ নয় সে বিষয়টা, যে কারণে বেশ আক্ষেপ ঝরে পড়েছে তার কণ্ঠে। 

৮৯ বছর বয়সী সাবেক এই ইংলিশ অধিনায়কের ক্যান্সার ধরা পড়েছে তার খাদ্যনালীতে। এখন সেটা সারিয়ে তোলার জন্য চলছে রেডিওথেরাপি। তবে স্ত্রীর জীবনের শেষ এক বছর যেভাবে কেটেছে, তা দেখেই আর বাঁচার ইচ্ছে নেই তার। সম্প্রতি টেলিগ্রাফকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী তার জীবনের শেষ ১২ মাস যেভাবে কাটিয়েছে, আমি তেমনটা মোটেও চাই না। যন্ত্রণা নিয়ে এই হাসপাতাল থেকে ওই হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতে সে কঠিন একটা সময়ই কাটিয়েছে। আমি স্বেচ্ছামৃত্যুতে বিশ্বাসী। আমার স্ত্রী শেষ এক বছর যেমন কোনো আনন্দ ছাড়া বেঁচে ছিল, সত্যি বলতে এভাবে বেঁচে থাকার কোনো অর্থ দেখি না আমি।’

বর্তমানে কানাডা, বেলজিয়াম, স্পেন, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, আর অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রদেশে স্বেচ্ছামৃত্যুর বৈধতা আছে। অস্ট্রিয়া, কলম্বিয়া, জার্মানি ও ইতালিতেও বৈধতা আছে, তবে এই আইনের ব্যবহার এখনো শুরু হয়নি। পর্তুগালে এর বৈধতার বিষয়টি আছে সুপ্রিম কোর্টের বিবেচনায়।

তবে এ তালিকায় নেই ইলিংওয়ার্থের ইংল্যান্ডের নাম। তবে তিনি মনে করেন, শিগগিরই সেখানে এমন বিধান প্রবর্তন করা হবে। তিনি বলেন, ‘কিন্তু ইংল্যান্ডে আমরা স্বেচ্ছামৃত্যুকে এখনো বৈধতা দেইনি। আর তাই এ বিকল্পটা পাচ্ছেন না আপনি। তারা এ নিয়ে আলোচনা করছে, তবে আমি মনে করি এটা শিগগিরই আসবে।’

ইংল্যান্ডে স্বেচ্ছামৃত্যুর বৈধতা দিতে চান না যারা, তাদের নিয়ে ইলিংওয়ার্থ বলেন, ‘অনেক ডাক্তার এর বিরোধিতা করেন। তবে যদি তারা আমার স্ত্রী শেষ ১২ মাসে যেমন জীবন কাটিয়েছে, তেমন পরিস্থিতিতে পড়তেন, তাহলে হয়তো তাদের মত বদলে ফেলতেন।’

তবে এ পরিস্থিতির মুখোমুখি পুরোপুরি না-ও হতে পারেন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক। বর্তমানে কেমোথেরাপি চলছে তার। এজন্যে কিছুটা ভাগ্যের সহায়তাও চাইলেন তিনি, ‘অতিরিক্ত কেমো দিয়ে শেষ টিউমারটা বের করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। দেখি তাতে কাজ দেয় কি না। আশা করি, ভাগ্য আমার সঙ্গে থাকে কি না।’

এনইউ