দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর ধরে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে ইয়াসির আলী রাব্বি। তবে অদৃশ্য শক্তির কাছে যেন বারবার হেরে যাচ্ছিলেন। সব ঠিক থাকলেও জাতীয় দলের অভিষেক ক্যাপটা মাথায় উঠছিল না। অবশেষে ঘরের মাঠ চট্টগ্রামে স্বপ্নপূরণ। স্বপ্নিল অভিষেক ক্রিকেটের সবচেয়ে কেতাবি সংস্করণ টেস্টে। যদিও সে ম্যাচেই মাথায় বলের আঘাতে চূর্ণ হতে বসেছিল সব। তবে ‘যোদ্ধা’ রাব্বি তো আর সহজে হাল ছাড়ার পাত্র নন।

২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজের দল দিয়ে শুরু। এরপর গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের প্রাথমিক স্কোয়াডেও জায়গা হয় ইয়াসির আলী রাব্বির। করোনা পরবর্তী বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রত্যাবর্তন সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে থেকেও জায়গা মিলেনি চূড়ান্ত স্কোয়াডে। ছিলেন টেস্ট সিরিজেও। তবে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি।

রাব্বির ভাগ্যের শিকে ছেড়েনি এপ্রিলে শ্রীলঙ্কা সফরেও। ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ডাক পেয়েও ব্রাত্য ছিলেন। ছিলেন চলতি বছরের মাঝামাঝি জিম্বাবুয়ে সফরের টেস্ট দলেও। বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ডাক পান। আবার উপেক্ষিত এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তবশেষে পাকিস্তানের বিপক্ষেই টেস্ট অভিষেক। এই দীর্ঘ লড়াইয়ে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে নিজেই নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করেছেন রাব্বি।

বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় রাব্বি বলেন, ‘এটা চ্যালঞ্জিং কারণ অনেকদিন ধরে দলের সঙ্গে থাকা হচ্ছিল কিন্তু ম্যাচ খেলা হচ্ছিল না। আমি আগেও বলেছি আমি যে জায়গায় ছিলাম ওটা স্বপ্নের মতো অনেকের কাছে। ওই জিনিসটা চিন্তা করে মোটিভেট করতাম, যে ইয়াসির তোমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। যখনই সুযোগ আসে সেটা যেন কাজে লাগাতে পারো। টিম মেট, কোচ, বন্ধুরা সবাই আমাকে মোটিভেট করতো যে ইয়াসির তুমি কষ্ট করছো, যখনই সুযোগ পাবা কাজে লাগাবা।’

পাকিস্তানের বিপক্ষে স্বপ্নিল অভিষেকটা রাঙাতে পারেননি রাব্বি। প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪ রান করে আউট হন। যে ১৯টি বল তিনি খেলেন, তা দেখেই স্পষ্ট হলো শর্ট বলে তেমন স্বচ্ছন্দ না এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় ইনিংসে দারুণ ব্যাট করতে থাকা রাব্বি  সেই শর্ট বলেই কুপোকাত। শাহিন শাহ আফ্রিদির করা ইনিংসের ৩০তম ওভারের পঞ্চম বলটি খেলতে গিয়ে হেলমেটে আঘাত পান।

তবে চিকিৎসক দলের তাৎক্ষনিক তৎপরতায় নিশ্চিত হওয়া যায়, খুব বড় কিছু হয়নি তার। সিদ্ধান্ত নেন ব্যাট করে যাওয়ার। তবে নোমান আলীর পরের ওভার খেলার পরই সিদ্ধান্ত বদলালেন তিনি। মাঠ থেকে উঠে সোজা হাসপাতালে যান। এই ঘটনায় ভয় পেয়ে ফেছিলেন রাব্বি নিজেই।

রাব্বির ভাষায়, ‘একটু ভয় পেয়েছিলাম। মাথায় বল লেগেছিল। সত্যি বলতে একটু ভয়ে ছিলাম। আবার কষ্টও পাচ্ছিলাম আমার ডেব্যু ম্যাচ। টিমকে ভালো জায়গায় নিয়ে যাচ্ছিলাম, কিন্তু শেষ করতে পারিনি। মিশ্র অনুভূতি আসলে ভয় ও কষ্টের।’

টিআইএস