চট্টগ্রামের বিপিএল ক্যাম্পে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দলের পেসার আকসার আহমেদ (ডান থেকে তৃতীয়)

বাকশক্তি ও শ্রবণশক্তি দুটোই নেই সিলেটের পেসার আকসার আহমেদের। কিন্তু উইকেটে গতির ঝড় তুলতে পারেন ১৩৮ কিলোমিটার বেগে। বাউন্সের সঙ্গে দুই দিকেই সুইং করিয়ে শক্ত পরীক্ষা নিতে পারেন ব্যাটসম্যানদের। ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি উচ্চতার এই পেসার নিজেকে আরও শানিত করতে প্রতিনিয়তই চোখ রাখেন ক্রিকেট সার্কিটের স্পিডস্টারদের বোলিংয়ে। 

বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী দলের বিশ্বস্ত অস্ত্র আকসার স্বপ্নকে আদিগন্ত বিস্তৃতই করেছেন এবার। লাল-সবুজের জার্সিতে বাজিমাত করতে চান ক্রিকেট বিশ্বকে। তার সে স্বপ্ন পূরণের সারথী হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ফ্র্যাঞ্চাইজি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। আসন্ন বঙ্গবন্ধু বিপিএলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের নেট বোলার হিসেবে দেখা যাবে এই পেসারকে।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএম রিফাতুজ্জামান জানান, ‘আকসার আহমেদ বিস্ময়কর এক প্রতিভা। অমিত সম্ভাবনার এসব প্রতিভা অনেক সময়ই অযত্ন আর অবহেলায় হারিয়ে যায়। সবচেয়ে বড় বাধা হয় পৃষ্ঠপোষকতা। আমরা এমন সম্ভাবনা হারিয়ে যেতে দিতে পারি না। আমাদের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই আকসারের পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

২৯ ডিসেম্বর ২০২১ (বুধবার) আকতার গ্রুপের মালিকানাধীন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের কার্যালয়ে এসে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন আকসার আহমেদ ও তার কোচ। এ পেসারের আগামী এক বছরের ক্রিকেট ও ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সব ধরনের খরচ বহনের ঘোষণা দেন রিফাতুজ্জামান। আপ্লুত আকসার তার কোচের মাধ্যমে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। আকসারের স্বপ্ন পূরণে বড় অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে এ উদ্যোগ জানিয়েছেন তার কোচ। 

সিলেটের গোলাপগঞ্জের বাদেপাশা ইউনিয়নের মোল্লারচকে জন্ম ও বেড়ে উঠা আকসার আহমেদের। মাত্র ২ বছর বয়সে বাবাকে হারান আকসার। বরাবরই ক্রিকেটের প্রতি দারুণ ঝোঁক আকাসারের। স্বপ্নবাজ ছেলেকে ক্রিকেটার বানাতে তাই নিজের সর্বস্ব উজাড় করছেন মা দিলারা বেগম। পরিবারে এক বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে আকসার সবার ছোট। তারা দুই ভাই-ই বাকপ্রতিবন্ধী।

টিআইএস/এনইউ/এটি