বাঙালির প্রিয় খেলা ফুটবল। এপার-ওপার দুই বাংলায় ফুটবলের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। এপার বাংলার মানুষ ওপার বাংলা গিয়ে প্রতিষ্টা করেছে ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব। তাই বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের এই ক্লাবের প্রতি ভালোবাসা-আবেগ একটু বেশি। মোনেম মুন্না এই ক্লাবে খেলায় পরবর্তীতে সেই সম্পর্ক আরো জোরদার হয়। 

সেই সম্পর্ক আবার নতুন করে জেগে উঠার উপলক্ষ্য তৈরি হয়েছে। শেখ রাসেল ক্লাব লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও বসুন্ধরা গ্রুপের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর সায়েম সোবহান আনভীরকে তাদের ক্লাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব। সস্ত্রীক সংবর্ধনার পাশাপাশি  আনভীর ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের আজীবন সদস্যপদও পেয়েছেন। আনভীরের সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ও বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান। 

বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা উপমহাদেশের ফুটবলে নতুন এক সংযোজন। একটি ক্লাবের পক্ষ থেকে আলাদা স্টেডিয়াম উপমহাদেশে নেই। কিংস অ্যারেনায় ইস্ট বেঙ্গলকে খেলার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন আনভীর ও ইমরুল। তাদের দাওয়াতৃি ইস্ট বেঙ্গল সাদরে গ্রহণ করেছে জানালেন বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান, ‘তারা বাংলাদেশের ফুটবলের যথেষ্ট খোঁজ খবর রাখেন। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনার বিষয়টিও তাদের জানা৷ তারা আমাদের প্রস্তাব সাদরে গ্রহণ করেছে। সুবিধাজনক সময়ে তারা আসবে।’ 

বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইস্ট বেঙ্গলের কাছে তার দলের জন্য সমর্থনও চেয়েছেন, ‘সামনের মে মাসে কলকাতায় আমরা এএফসি কাপ খেলব। আশা করি ইস্ট বেঙ্গলের সমর্থকদের সমর্থন বসুন্ধরা কিংসের পক্ষেই থাকবে।’ 

ইস্ট বেঙ্গলের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই প্রসঙ্গে পাওয়া গেল নতুন প্রস্তাব। কলকাতার ক্লাব সুত্রে জানা গেল, ইস্ট বেঙ্গল কিংস অ্যারেনায় কলকাতা ও বাংলাদেশের কয়েকটি ক্লাব নিয়ে গঙ্গা পদ্মা কাপের আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবের প্রাসঙ্গিকতা মিলে কলকাতার গণমাধ্যমের খবরে। ইস্ট বেঙ্গলের সঙ্গে পৃষ্ঠপোষকতায় আসতে পারে বসুন্ধরা গ্রুপ। বৃহস্পতিবার রাতে দুই পক্ষের মধ্যে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। কেউই এই ব্যাপারে এখনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য প্রদান করেনি। দুই পক্ষ বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করছে৷ 

আনভীরকে সংবর্ধনা দেয়ার অনুষ্ঠানে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের শীর্ষ কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার তার বক্তব্যে বলেন, ‘এক সময় দুই বাংলা এক ছিল এবং শিল্প, সাহিত্য, খেলাধুলা এবং জীবনাদর্শে সারা পৃথিবীর সামনে উজ্জ্বল হয়েছিল ও কোনো এক অজানা দেওয়ালের কারণে আমাদের মধ্যে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে ও কিন্তু আমাদের হৃদয়ে বাংলাদেশ সেই একই রকম রয়েছে ও আজ সেই হৃদয়ের টানেই দুই বাংলার আবার এক সাথে চলা প্রয়োজন ও সোবহান ভাই এবং ইস্টবেঙ্গল ক্লাব মিলিত ভাবে দুই বাংলার সমন্বয়ের কাজ করতে পারে।’

সায়েম সোবহান ইস্ট বেঙ্গলের আন্তরিকতা ও আথিতেয়তায় মুগ্ধ হয়ে বলেন, ‘ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কে নিজের ক্লাব বলেই সবসময় ভেবেছি ও তাই ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের তরফ থেকে যখন আমন্ত্রণ আসে তখন আর ‘না’ বলিনিও আর আজকের (বৃহস্পতিবার) এই অনুষ্ঠানে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব যেভাবে হৃদয় দিয়ে আমাদের কাছে টেনে নিয়েছেন, আমরাও চাই দুই বাংলার ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ ও সাধারন মানুষ আগামী ভবিষ্যতে আরো কাছাকাছি আসতে পারে ও আমরা আন্তরিক ভাবে এই কাজে সচেষ্ট হব।’ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি আরো হৃদয়গ্রাহী হয়ে ওঠে ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়ের গানে এবং অভিরূপ সেনগুপ্তর নাচের ছোঁয়ায়।

এজেড/এমএইচ/এটি