আর্জেন্টাইন কোচ দিয়েগো সিমিওনের সঙ্গে যেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জাত শত্রুতাই আছে। অবশ্য ‘আছে’ না বলে ‘ছিল’ বললেই বোধ হয় বেশি যৌক্তিক হয়। মাত্রই যে রোনালদোর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে বিদায় করে শেষ আটে পৌঁছে গেছে তার দল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। 

ইতিহাসটা দেখুন, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এ নিয়ে রোনালদো আর সিমিওনের দেখা হলো ৬ বার। এর আগের ৫ বারই শেষ হাসিটা ছিল রোনালদোর মুখে। শেষ দুই লড়াইয়ে তো রীতিমতো হ্যাটট্রিকই করে বসেছিলেন তিনি। তবে এবার হলো না, তাতেই শেষ হাসিটা ফুটল সিমিওনের ঠোঁটে। 

নিজেদের মাঠে ১-১ ড্রয়ের পর কোচ সিমিওনের অ্যাটলেটিকো আজ নেমেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মাঠে। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের থিয়েটার অফ ড্রিমসের আতিথেয়তাটা যে মোটেও সুখকর কিছু হয়নি অ্যাটলেটিকোর, তা আর বলতে! শুরু থেকে দর্শকদের গগনবিদারী চিৎকারে কান পাতা ছিল দায়। ধারাভাষ্যকাররা বলাবলি করছিলেন, এমন কোলাহল পুরো মৌসুমেই নাকি আর শোনা যায়নি ইউনাইটেডের ডেরায়। 

তবে সেসব কোলাহলকে থামিয়ে দিতে অ্যাটলেটিকো সময় নিয়েছে কেবল ৪১ মিনিট। অ্যান্টোয়ান গ্রিজমানের ক্রস থেকে মহামূল্য গোলটা সেই মিনিটেই যে করেন রেনান লোডি। এর আগে অবশ্য প্রথম আঘাতটা ইউনাইটেডই করতে পারতো। ১৩ মিনিটে অ্যান্থনি এলেঙ্গার শটটা লাগে গোলরক্ষক ইয়ান অবলাকের মুখে। তাতে হাফ ছেড়ে বাঁচে সফরকারীরা। 

এর কিছু মুহূর্ত পর আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার রড্রিগো ডি পলও একটা দূরপাল্লার চেষ্টা করেছিলেন। সেটা অবশ্য ভাগ্যের জোরে নয়, নিজ দক্ষতাতেই দারুণভাবে ঠেকিয়েছেন ডেভিড ডি গিয়া। 

৩৩ মিনিটে বল ইউনাইটেডের জালেই জড়িয়েছিল অ্যাটলেটিকো। তবে বিল্ড আপে মার্কোস ইয়োরেন্তে অফসাইডে থাকায় গোল না পাওয়ার আফসোসে পোড়েন জাও ফেলিক্স  তবে সেবার গোলবঞ্চিত থাকার আফসোসটা বেশিক্ষণ থাকেনি অ্যাটলেটিকোর। ৪১ মিনিটে লোডির গোলে হাসিমুখেই বিরতিতে যায় রোহিব্ল্যাঙ্কোরা। 

পরের গল্পটা কেবল ইউনাইটেডের নিষ্ফলা সব আক্রমণের, আর দুই পরতের রক্ষণব্যুহ রচনা করে সিমিওনের রক্ষণাত্মক এক মাস্টারক্লাসের। একের পর এক আক্রমণ এই দেয়ালে আটকেছে ইউনাইটেডের, সমতাসূচক গোলের দেখা আর মেলেনি দলটির। আর তাতেই ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রোনালদোর কোনো দলকে বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নকআউট ম্যাচ জেতে সিমিওনের অ্যাটলেটিকো, চলে যায় শেষ আটে। 

এনইউ/ওএফ