বিশ্বকাপের আর খুব বেশি দিন বাকি নেই। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শেষ কিস্তি চলছে এখন। তা শেষ হলে দেওয়া হবে বিশ্বকাপের গ্রুপিং, নকআউটের পথ। ফুটবলের বিশ্ব আসরের আর বাকি মাত্র ৬ মাস। আগামী ২১ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া এই আসরে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনাকে অন্যতম ফেভারিট হিসেবে দেখছেন সাবেক আর্জেন্টাইন ফুটবলার মারিও কেম্পেস। আর্জেন্টিনাকে অন্তত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দেখছেন তিনি। 

শেষ চার বিশ্বকাপের দল থেকে এবার বিশ্বকাপের আগের কয়েক বছরের পারফর্ম্যান্সে দারুণ পরিবর্তন এসেছে আর্জেন্টিনার। আগের মেসিনির্ভর দলটা এখন আর নেই। মেসিকে ছাড়াও এখন বেশ শক্তপোক্ত দল আলবিসেলেস্তেদের। সেটাই মুগ্ধ করেছে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের নায়ককে। 

আগের আর্জেন্টিনায় আক্রমণ গড়ে দেওয়া থেকে গোল করা... দায়িত্বটা কম ছিল না মেসির। কেম্পেসের ভাষায়, ‘এর আগ পর্যন্ত মেসিকে কেবল গোলরক্ষকের দায়িত্বটাই পালন করতে হয়নি, এটা ছাড়া বাকি সবই করতে হতো ওর।’

বর্তমান আর্জেন্টিনায় পরিবর্তনটা প্রভাব ফেলেছে মেসির মানসিকতাতেও। সম্প্রতি টিওয়াইসি স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আর্জেন্টিনার প্রথম বিশ্বজয়ের নায়ক বলেন, ‘তবে এই দলটা পুরোপুরি ভিন্ন। আমি জানি না, এই দলের খেলোয়াড়দের ব্যক্তিত্বটাই এমন নাকি এরা ভিন্ন মাপের খেলোয়াড়। তবে একটা বিষয় ওরা দেখাচ্ছে, যে মেসিকে নিয়ে কিংবা মেসিকে ছাড়াও তারা একইভাবে খেলতে পারে। মেসিকে একটা সময় মনে হতো সে বাধ্য হয়ে আর্জেন্টিনায় আসছে, এখন মনে হচ্ছে সে এখানে আসলেই খুশি।’

তবে মেসির পিএসজিতে যাওয়ার সিদ্ধান্তটা ভালো হয়নি, অভিমত কেম্পেসের। তার কথা, ‘আমার মতে সে পিএসজিতে গিয়ে ভালো করেনি। সে দুঃখী, অনেকটা বাধ্য হয়েই হাসে। সে প্রচণ্ড স্নায়ুচাপে ভুগছে, কারণ সে সেখানে মোটেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে না। লিগে যে কোনো দলকেই তারা হারাতে পারে কিন্তু তারা সেখানে কাকে দুয়ো দিলো? তাকে, কারণ সে বিশ্বসেরা খেলোয়াড়, তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতাতে, কিন্তু সে শেষ ষোলোর গণ্ডিই পার করতে পারেনি।’

তিনি আরও যোগ করলেন, ‘মেসি সেখানে আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলছে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমি একে ভালো চোখে দেখতে পারছি না। খারাপও বলছি না। কারণ অনেক ম্যাচে সে ভালো শুরু করেছিল। তবে ফলটা হয়েছে ভিন্ন।’

আর্জেন্টিনার পরিস্থিতিটা অবশ্য ভিন্ন। কেম্পেসের মতে এই দল বিশ্বের যে কোনো দলকেই হারিয়ে দিতে পারে। 

তিনি বলেন, ‘এই আর্জেন্টিনা দল যে কারো বিপক্ষে ঠাণ্ডা মাথায় খেলতে পারে। আজ দলটা র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে নেই বটে, কিন্তু বিশ্বের যে কোনো দলকে হারানোর রসদ আছে এদের। আমি এর চেয়ে ভালো কোনো জাতীয় দল দেখছি না, এমনকি বেলজিয়ামও না। ফ্রান্স যে কারো পথে কাঁটা হতে পারে, কিন্তু এই আর্জেন্টিনা বেশ মনোযোগী, শুধু মাত্র মেসির ওপর নির্ভর করে না। এই বিষয়টাই আমাকে সবচেয়ে বেশি চমকে দিয়েছে।’
কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি অভিজ্ঞতার সঙ্গে তারুণ্যের মিশেল ঘটিয়েছেন এখানে। সে কারণেই এই দলকে তিনি দেখছেন বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে।

কেম্পেসের ভাষ্য, ‘লিওনেল স্ক্যালোনি তার হাতে যারা ছিল, তাদের সবাইকে বাদ দিয়েছে। শুধুমাত্র মেসি, ডি মারিয়া, আর অটামেন্ডি ছাড়া। সে দলে তারুণ্য নিয়ে এসেছে, নতুনত্ব এনেছে। যদি সেমিফাইনালিস্ট কারা হবে এ কথা জিজ্ঞেস করা হয় আমাকে, তাহলে আমি বলব আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ফ্রান্স, জার্মানি।’

এনইউ