রেফারি নয়নের শেষ বাঁশি! মুন্সিগন্জে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ লে.মতিউর স্টেডিয়ামে বসুন্ধরা কিংসের উল্লাস। ফুটবলার কোচিং স্টাফ সবাই আনন্দে দিশেহারা। সোমবার সাইফ স্পোর্টিংকে ২-০ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশের ফুটবলে বিশেষ ইতিহাসে বসুন্ধরা কিংস৷ শীর্ষ পর্যায়ে অভিষেকের পর কোনো ক্লাবের হ্যাটট্রিক লিগ শিরোপার রেকর্ড নেই। বসুন্ধরা সেই কীর্তি গড়েছে। 

ঘরোয়া ফুটবল লিগে হ্যাটট্রিক শিরোপার রেকর্ড রয়েছে দুই ঐতিহ্যবাহী দল আবাহনী ও মোহামেডানের। ১৯৮৩-৮৫ আবাহনী ও ১৯৮৬-৮৮ মোহামেডান হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয়েছে৷ ২০০৭ সাল থেকে পেশাদার লিগ শুরু হওয়ার পর একমাত্র আবাহনীর হ্যাটট্রিক শিরোপা আছে। ২০১০ সালে অভিষেক হওয়া শেখ জামাল টানা দুই বার জিতলেও হ্যাটট্রিক করা হয়নি৷ ২০১৮ সালে প্রিমিয়ারে অভিষেক হওয়া বসুন্ধরা কিংস হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতে অনন্য এক ইতিহাস করেছে৷ 

বসুন্ধরা সেই কীর্তি গড়তে আজ সাইফ স্পোর্টিংকে হারাতে হতো৷ জামাল ভূঁইয়ার দল বসুন্ধরা কিংসকে যথেষ্ট বেগ দিয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচটি বেশ উত্তপ্ত ছিল। দুই দলের ফুটবলাররাই মেজাজ হারিয়েছেন বারবার। কিংসের গাম্বিয়ান নুহা মারং প্রথম কার্ড দেখেন। এরপর বেশ কয়েকবারই কার্ড বের করতে হয়েছে রেফারিকে। ৩৭ মিনিটে বসুন্ধরার ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাত লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন প্রথমার্ধে। 

দুই দলের খেলোয়াড়দের মতো উত্তপ্ত ছিল ডাগ আউটও। সাইফের কোচিং স্টাফ রেফারিংয়ের উপর খানিকটা ক্ষুব্ধ ভুমিকায়। তাদের অভিব্যক্তি ছিল বসুন্ধরার আরো কার্ড পাওয়ার। একই রকম অভিব্যক্তি ছিল কিংসের ফুটবলারদের৷ 

দশ জনের দল হওয়ার আগেই ম্যাচে লিড নেয় কিংস। ২৮ মিনিটে মতিন মিয়া বক্সের মধ্যে দারুণ এক শটে গোল করেন। কিংস ম্যাচে লিড নিতে পারতো আগেই। সেক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাড়ায় ক্রসবার৷ ব্রাজিলিয়ান মিগুয়েল ফেরেইরার নেয়া শট ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে।

দ্বিতীয়ার্ধে কিংস দশ জন কিছুটা ভিন্ন কৌশলে। রক্ষণে মনোযোগ দিয়ে কাউন্টার আক্রমণ ছিল তাদের কৌশল৷ ক্রুসিয়ানীর সাইফ দ্বিতীয়ার্ধে বল পজেশনে এগিয়ে ছিল। মাঝমাঠে প্রাধান্য বিস্তার করে দারুণ কয়েকটি আক্রমণ করে সাইফ। বসুন্ধরার গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোকে কয়েকবার পরীক্ষায় পড়তে হয়েছে। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক শট দারুণ সেভ করেন জিকো। 

সাইফ যখন ম্যাচে সমতা আনার অপেক্ষায় তখন উল্টো ম্যাচের ব্যবধান দ্বিগুণ করে শিরোপা নিশ্চিত করে৷ বদলি ফুটবলার বিপলু আহমেদ এক ফিনিশিংয়ে স্কোরলাইন ২-০ করেন। মুন্সিগন্জের স্টেডিয়ামে কিংসের আনন্দ। ম্যাচের শেষ দিকে সাইফের দুটি আক্রমণ গোল বঞ্চিত করেন কিংসের গোলরক্ষক জিকো ও নুহা মারং। নুহা গোললাইন থেকে হেড করে দলকে গোল থেকে বাঁচান। 

এজেড/এটি