বাংলার বহু প্রাচীন প্রবাদ, ‘শেষ ভালো যার, সব ভালো তার’। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা সেই প্রবাদের সঙ্গী হলো। এই লিগে বসুন্ধরা প্রথম ম্যাচে স্বাধীনতা সংঘের কাছে হেরেছিল। শুরুটা খারাপ হলেও হ্যাটট্রিক শিরোপা এবং আজ লিগের শেষ ম্যাচে জিতে সফল একটা অভিযান শেষ করল ঘরোয়া ফুটবলের নতুন শক্তি।

শনিবারের ম্যাচটি মূলত ছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হোম ম্যাচ। তারা ম্যাচটি নিজেদের হোমে না খেলে কিংস অ্যারেনায় খেলেছে। এই ম্যাচে বসুন্ধরা কিংস ২-১ গোলে শেখ জামাল ধানমন্ডিকে হারিয়েছে। এর ফলে বসুন্ধরা কিংস ২২ ম্যাচে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগ শেষ করল। ৬৬ পয়েন্টের মধ্যে মাত্র নয় পয়েন্ট খুইয়েছে অস্কারের দল।

অন্য দিকে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ছিল প্রথম লেগে একমাত্র অপরাজিত দল। সেই দলটি কোচ বদলে দ্বিতীয় লেগে যেন প্রথম লেগের ছায়া। প্রথম লেগে অপরাজিত দলটি দ্বিতীয় লেগে হেরেছে পাচটি ম্যাচ। এর প্রতিফলন পয়েন্ট টেবিলে। এক পর্যায়ে শিরোপা রেসে থাকা জামাল লিগ শেষ করল চতুর্থ হয়ে। ২২ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৩৫। জামাল হারায় সাইফ স্পোর্টিংয়ের তৃতীয় স্থান সুনিশ্চিত। এক ম্যাচ কম নিয়ে তাদের পয়েন্ট ৩৭।

আজকের ম্যাচে কিংস অ্যারেনায় উৎসবের উপলক্ষ্য ছিল আগেই। সেই উৎসব আরো রঙিন হয়েছে জয়ে। ম্যাচের সাত মিনিটে কিংসকে এগিয়ে নেন মতিন মিয়া। রবসন রবিনহোর বাড়ানো বলে বক্সের মধ্যে দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গোল করেন মতিন। প্রথমার্ধ মতিনের গোলেই লীড নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধের গোলটিও সাত মিনিটে। আগের গোলে ছিলেন যোগানদাতা। এবার নিজেই গোল করেছেন রবসন। বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত গতির শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত হলে কিংসের গ্যালারী আবারো উল্লাসে মাতে।

ম্যাচের ৬৮ মিনিটে শেখ জামাল আতিকুজ্জামানের গোলে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে। ওই গোলে অবশ্য জামালের ফরোয়ার্ডের চেয়ে কিংসের গোলরক্ষকের ভুলই বেশি। এই ম্যাচে নিয়মিত গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো খেলেননি। দ্বিতীয় গোলরক্ষক রিমন বলের ফ্লাইট বুঝতে পারেননি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন প্রতিপক্ষের ফুটবলার।

ইনজুরি সময়ে হঠাৎ উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কিংসের মাহবুবুর রহমান সুফিল বল নিয়ে আক্রমণে যাচ্ছিলেন এমন সময় স্লাইডিং ট্যাকেল করেন জামালের উজবেক ফুটবলার ওতাবেক। রেফারি ফাউলের বাঁশি বাজান ততক্ষণাৎ। এরপর দুই দলের ফুটবলাররা বিবাদে জড়ান। ফাউলের জন্য দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন জামালের ওতাবেক। বাজে ব্যবহারের জন্য লাল কার্ড দেখেন কিংসের ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ। শেষ কয়েক মিনিট দুই দল দশ জন নিয়ে খেলেছে।

দশ জন নিয়ে খেলার বিষাদ মুহুর্তেই উবে গেছে রেফারির শেষ বাঁশিতে। কারণ বাংলাদেশের ফুটবল লিগের ইতিহাসে অভিষেকের পর কোনো দল হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। কিংস সেটি করে দেখিয়েছে। এবং সেই লিগের ট্রফি উদযাপন নিজেদের ভেন্যুতে হচ্ছে। বাংলাদেশের কোনো ক্লাবের নিজস্ব ভেন্যু করার রেকর্ডও কিংসের অধীনে।

এজেড/এইচএমএ/এটি