মাঠের বাইরের কাজটা বার্সেলোনা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা আর ক্রীড়া ব্যবস্থাপক মাতেও আলেমানি মিলে করেছিলেন ভালোই। কোচ জাভি যাকে দলে চাচ্ছিলেন, ক্লাবের অর্থনৈতিক দীনতাকে পেছনে ফেলে তাকেই এনে দিচ্ছিলেন দলে, গড়ে দিয়েছেন 'নতুন বার্সেলোনা'। তবে মাঠের কাজটা জাভির দল করতে পারেনি ঠিকঠাক। আগের মৌসুমে যাদের কাছে দুই ম্যাচেই হেরেছিল বার্সা, সেই রায়ো ভায়েকানোর বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র যে করেছে দল! 

গ্রীষ্মকালীন দলবদলে অনেক বড় নামই দলে চিড়িয়েছে বার্সা। তাদের মধ্যে রবার্ট লেভান্ডভস্কি, রাফিনিয়া আর আন্দ্রেস ক্রিশ্চেনসেনের অভিষেক হয়েছিল গতকাল। 

লেভান্ডভস্কি ১২ মিনিটে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েই দিয়েছিলেন। তবে বার্সার উদযাপনে বাগড়া দেন রেফারি, অফসাইডে কাটা পড়ে গোলটা আলোর মুখ দেখেনি আর। 

এর একটু পরেই উসমান দেম্বেলের বাড়ানো বল  রাফিনিয়াকে খুঁজে পায়। তবে বক্সের বাইরে থেকে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের শট বেরিয়ে যায় বারের একটু ওপর দিয়ে। এর কিছুক্ষণ পর পেদ্রি গনজালেসের শটও বেরিয়ে যায় লক্ষ্যের বাইরে দিয়ে৷ 

তবে প্রথমার্ধের সবচেয়ে বড় সুযোগটা এসেছিল সফরকারী রায়োর কাছেই। বিরতির আগে আলভারো গার্সিয়া বাম পাশ দিয়ে উঠে আসেন বার্সার বিপদসীমায়, দারুণ ড্রিবলে রোনালদ আরাউহোকে দেন ছিটকে। তবে মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন দেয়াল তুলে দাঁড়ান তার সামনে, ফলে বার্সা রক্ষা পায় গোলের হাত থেকে।  

বিরতির পর আবারও রায়ো বড় সুযোগ তৈরি করে। সার্জিও কামেলো গোলমুখে একা পেয়ে গিয়েছিলেন স্টেগেনকে। তবে তার সব অ্যাঙ্গেলই রুখে দেন বার্সা গোলরক্ষক, ফলে বলটা চিপ করে জালে জড়ানোর চেষ্টা করেন কামেলো, তবে সে চেষ্টায় সফল হননি তিনি, বল বেরিয়ে যায় বারের ওপর দিয়ে। 

দূরপাল্লার শটে আনসু ফাতি বার্সেলোনার হয়ে জবাবটা দিতে চেয়েছিলেন। তবে রায়োর গোলরক্ষক দিমিত্রিয়েভস্কি দারুণ এক সেভে তা বিপদমুক্ত করেন। এখানেই শেষ নয়, দিমিত্রিয়েভস্কি এরপর ঠেকিয়েছেন পিয়েরে এমেরিক অবামেয়াংয়ের শটও। ফলে বার্সার অপেক্ষাটা শেষই হচ্ছিল না। 

৮৮ মিনিটে ফ্র‍্যাঙ্ক কেসির শটটা দিমিত্রিয়েভস্কিকে ফাঁকি দিয়ে জড়ায় জালে, ন্যু ক্যাম্পের উল্লাস তখন বাঁধ ভেঙে দিচ্ছিল রীতিমতো। তবে বেরসিক ভিএআর বাগড়া দেয় তাতে। রিপ্লেতে দেখা যায়, বিল্ডআপে অফসাইডে ছিলেন তিনি। 

এরপর যোগ করা সময়ে ড্র যখন প্রায় নিশ্চিত, তখন  অধিনায়ক সার্জিও বুসকেটস মাঠ ছাড়েন দ্বিতীয় হলুদ কার্ডটা দেখে। তাতে ন্যু ক্যাম্পে হাজির ৮০ হাজারেরও বার্সেলোনা সমর্থকের পাংশুটে মুখগুলো আরও ফ্যাকাসেই হয়েছে কেবল৷ 

বার্সা ম্যাচটা শেষ করেছে গোলহীন ড্র নিয়ে। চলতি দলবদল মৌসুমে অর্থনৈতিকভাবে যে অসাধ্যটা সাধন করেছে দলটা, তার ছাপটা মাঠে ফেলতে পারল না কাতালানরা, অন্তত প্রথম ম্যাচে তো বটেই!