‘প্যানিক রুম’ স্টাইলের তালাবদ্ধ কক্ষে নারীদের বন্দি করে ধর্ষণ করতেন ম্যানচেস্টার সিটি ফুটবলার বেঞ্জামিন মেন্ডি। যুক্তরাজ্যের চেশায়ারে নিজের বাড়িতে সাত জন নারীকে ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতন করেছেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলার। বিভিন্ন পার্টি থেকে নারীদের ফুঁসলিয়ে নিজের বিলাসবহুল ম্যানশনে এনে তাদের ওপর হামলে পড়তেন তিনি।

তিনি আর মানুষ থাকতে পারেন নি। রীতিমতো বর্বর হয়ে উঠেন। নিজের বাসায় পুল পার্টির পর জেগে উঠে তার মনের ‘পশু’, এরপর একটি নৈশ ক্লাবেও চলে বর্বরতা। সব মিলিয়ে সেই রাতে মোট তিন নারীকে ধর্ষণ করেন বেঞ্জামিন মেন্দি। সেই ঘটনার খলনায়ক এবার শাস্তি পাচ্ছেন। 

ধর্ষণের অভিযোগে ম্যানচেস্টার সিটি লেফটব্যাক মেন্দিকে গত বছর আগস্টে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। সে বছর নভেম্বরে আরও দুটি ধর্ষণের অভিযোগে পড়েন বিশ্বকাপ জয়ী ফ্রান্সের এই ফুটবলার। এবার চেশায়ারের আদালতে মেন্দির বিচার শুরু হয়েছে।

সোমবার (১৫ আগস্ট) যুক্তরাজ্যের চেস্টার ক্রাউন কোর্টে তার বিরুদ্ধে আটটি ধর্ষণ, একটি যৌন নির্যাতন এবং একটি ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বিচার শুরু হয়। শুনানির প্রথম দিনে আদালতের সামনে মেন্ডির কুকর্মের বৃত্তান্ত উপস্থাপন করেন কৌঁসুলি টিমোথি ক্রে। এসময় তিনি জানান, ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের ঘটনাগুলো ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ঘটেছে।

আরও পড়ুন >> চেলসি কোচকে ল্যাং মেরে ফেলে দিতে চাইলেন কন্তে!

ভুক্তভোগী দু’জন নারীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য আদালতের সামনে তুলে ধরে কৌঁসুলি ক্রে বলেন, মেন্ডির ‘দ্য স্পিনে’ নামের ম্যানশনে তালাবদ্ধ কক্ষে নারীদের ধর্ষণ করা হত। চুরি ঠেকাতে নিজের ম্যানশনে বেশ জটিল ‘লক সিস্টেম’ স্থাপন করেছিলেন মেন্ডি, পরবর্তীতে সেটার সুযোগ নিয়েই নারীদের বন্দি করে নির্যাতন করতেন এই ফুটবলার।

মেন্ডির অপরাধের বর্ণনা দিয়ে ক্রে আদালতকে বলেন, ‘প্রত্যেকটি রুমেই বিশেষ লকিং দরজা ছিল। দু’জন ভুক্তভোগী এসব রুমের ভেতরে বন্দি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মাস্টার বেডরুমে বিশেষ লক সিস্টেম ছিল। চুরির আশঙ্কা থাকলে প্যানিক রুম তৈরির জন্য এসব লক ব্যবহার করা হয়। এই দরজাগুলো বন্ধ করা থাকলে আপনি কোনোভাবেই বাইরে থেকে প্রবেশ করতে পারবেন না, এগুলো শুধু ভেতর থেকেই খোলা যায়। ভুক্তভোগীরা সেই রুমে প্রবেশ করেই বুঝতে পারেন যে তাদের বন্দি করা হয়েছে।’

আরও পড়ুন >> ফুটবলারদের গাড়িতে আগুন দিলেন ‘ক্ষুব্ধ’ আর্জেন্টাইন সমর্থকরা

মেন্ডি অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এসব অপরাধে সহায়তা করায় তার বন্ধু লুইস সাহা ম্যাটুরিকেও অভিযুক্ত করে বিচার শুরু হয়েছে। ২০২১ সালে মেন্ডির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠলে তাকে দল থেকে নিষিদ্ধ করে ম্যানচেস্টার সিটি। ২০১৭ সালে ফরাসি ক্লাব মোনাকো থেকে ৫২ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে ছয় বছরের চুক্তিতে তাকে দলে ভেড়ায় সিটিজেনরা। এখন পর্যন্ত ক্লাবটির হয়ে পাঁচ মৌসুমে ৭৫টি ম্যাচ খেলেছেন মেন্ডি।

এইচএমএ/এটি