জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নের চরদাদনা গ্রাম। এই গ্রামে বাড়ি করেছেন আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি আর ব্রাজিল তারকা নেইমার দ্য সিলভা সান্তোস জুনিয়র। 

বিষয়টি অবাক হওয়ার মতো ঘটনা হলেও এই বাড়ি দুটি দেখতে প্রতিনিয়ত ভিড় জমাচ্ছেন শত শত মানুষ। বাড়ি দুটিকে ঘিরে এলাকাবাসীর মধ্যে রীতিমতো উন্মাদনাই সৃষ্টি হয়েছে। ছোট্ট গ্রামটিতে তৈরি হয়েছে আসন্ন কাতার বিশ্বকাপের আমেজ। আর এসব নিয়ে মেসি আর নেইমারের ভক্তরা রাত-দিন খুনসুটি চালিয়ে যাচ্ছেন পাড়ার অলি-গলি থেকে চায়ের দোকানে।

আরও পড়ুন>> ‘মেসিকে চোট দিলে তোমাকে মেরেই ফেলব’ আর্জেন্টাইনকে আগুয়েরোর হুমকি

শখের কবুতর বিক্রি করে আর্জেন্টিনার পতাকার আদলে টিনের দোচালা ঘর রং করেছেন লিওনেল মেসির অন্ধভক্ত শামীম হাসান নামে এক যুবক।

ইসলামপুর ডিগ্রী কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শামীম হাসানের সঙ্গে কথা ঢাকা পোস্টের। শামীম হাসান বলেন, ‘আমার শখের কবুতর বিক্রি করে ১০ হাজার টাকা খরচ করে আমার ঘর আর্জেন্টিনার পতাকার মতো রং করি। এই কাজটি শেষ করতে আমার তিন মাস পরিশ্রম দিতে হয়েছে। আমরা বন্ধুরা মিলে রংয়ের কাজ করি।’

আরও পড়ুন>> মেসি-এমবাপেকে ম্লান করে দিয়ে কথা রাখছেন নেইমার

শামীম হাসান আরও বলেন, ‘আমার প্রিয় দল আর্জেন্টিনা। আর আমি মেসির অন্ধ ভক্ত। এইবার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা কাপ নিবে। আমার এই ভালোবাসা থেকেই এই বাড়িটা বানাইছি। শুধু আর্জেন্টিনার পতাকা নই। এখানে আমার দেশ বাংলাদেশের পতাকার ছবি আছে। আমার প্রিয় তারকা মেসির ছবি আছে। অনেক লোক এটা দেখতে আসে। এটাই আমার শান্তি।’

শামীম হাসানের বাড়ির কয়েক বাড়ি পরেই তার প্রতিবেশী মিনহাজ ইসলাম তার বাড়ি রং করেছেন ব্রাজিলের পতাকার আদলে। ইসলামপুর সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মিনহাজ ইসলাম বলেন, ‘আমার প্রতিবেশী শামীম হাসান তার বাড়িকে আর্জেন্টিনার পতাকার আদলে রং করেছেন। আমিও ব্রাজিলের ভক্ত। তাহলে আমি কেনো পারবো না। আমিও আমার বাড়িকে ব্রাজিলের পতাকার আদলে সাজিয়েছি।’

আরও পড়ুন>> মেসিকে ফেরানোর প্রথম পদক্ষেপ সেরে ফেলেছে বার্সা

মিনহাজ ইসলাম আরও বলেন, ‘বাড়িটিতে ব্রাজিলের পতাকার আদলে সাজাতে আমার খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। আমার বাবা এই টাকা দিয়েছে। ব্রাজিলের পতাকার মাঝে আমি আমার দেশের পতাকা একেছি। এর সাথে রয়েছে নেইমার আর পেলের ছবি। এই কাতার বিশ্বকাপে ব্রাজিল কাপ নিবে বলে আমি আশা করছি।’

শামীম হাসান ও মিনহাজ ইসলামের বাড়ি ঘিরে পুরো গ্রামে চলছে উন্মাদনা। সেই গ্রামের বাসিন্দা নয়ন ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমাদের গ্রামটি জেলা সদর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে। কেউ আমাদের গ্রামটি চিনতো না। মেসি আর নেইমারের বাড়ি হবার পর পুরো নেট দুনিয়ায় আমাদের গ্রামটি ভাইরাল হয়ে যায়। এখন অনেকেই আমাদের গ্রামটি চিনে। এই বিষয়টি আমাদের ভালো লাগে।’

আরও পড়ুন>> বিশ্বকাপে খেল দেখাবেন ‘চাপমুক্ত’ মেসি

একই গ্রামের বাসিন্দা ইমান আলী বলেন, ‘ছেলে দুইটা অনেক সুন্দর কাজ করেছে। তারা তাদের প্রিয় দলের প্রতি ভালোবেসে এমন কাজ করে। আমরা চাই সবাই তার প্রিয় দলের সম্মান রেখে কাতার বিশ্বকাপ উপভোগ করে। আমরা কোথায় কোনো সহিংসতা চাই না।’

এটি/এনইউ