রেফারির শেষ বাঁশি। লুসাইল স্টেডিয়ামে সৌদি আরবের ডাগ আউট যেন উল্লাসে ফেটে পড়ল। খেলোয়াড়রা ছুটলেন দর্শকদের অভিবাদন নিতে। কোচিং স্টাফরাও উল্লাসিত। হবেন না কেন? দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে যে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই (২-১ গোলে) হারিয়ে দিয়েছে সৌদি আরব!

৮০ হাজার ধারণ ক্ষমতার লুসাইল স্টেডিয়ামের আর্জেন্টাইন গ্যালারিতে নেমে এল শ্মশানের নীরবতা। প্রায় হাজার পঞ্চাশেক দর্শক স্টেডিয়াম ছেড়েছেন নিশ্চুপ হয়েই। অন্যদিকে সৌদি আরবের সমর্থকরা উল্লাস করছিলেন বিশ্বকাপ জয়ের মতোই। দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারানো তাদের কাছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নেরই শামিল।

পাঁচ মিনিটের এক ঝড়ে ম্যাচটি আর্জেন্টিনার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় সৌদি আরব। প্রথমার্ধে মেসির আর্জেন্টিনা ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে সেই আর্জেন্টিনা যেন উধাও। ৪৮-৫৩ মিনিটের মধ্যে ঝড়ে লন্ডভন্ড দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

৪৮ মিনিটে মাঝমাঠে আর্জেন্টিনার কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে আক্রমণে যায় সৌদি আরব। আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে গোল করেন আল শাহিরি।

স্কিলে এশিয়ার দলটিও যে উন্নতি করেছে এরপর সেটার প্রমাণ দেন সালেম আল দাওসারি। বক্সের মধ্যে দারুণভাবে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডিফেন্ডারদের মাঝে কোনাকুনি শট নিয়ে গোলরক্ষক মার্টিনেজকে পরাস্ত করেন।  

পাঁচ মিনিটের এই ঝড়ে আর্জেন্টিনা ভড়কে যায়। এরপর খানিকটা ছন্দহীন ফুটবল খেলে। নিজেদের গুছিয়ে উঠতে খানিকটা সময় নেয় মেসির দল। গুছিয়ে উঠে যখন আবার আক্রমণ শুরু করে তখন তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান সৌদি আরবের গোলরক্ষক। সৌদি গোলরক্ষক যেন আর্জেন্টিনার কাছে চীনের প্রাচীর হয়ে ওঠেন!

মেসি এই ম্যাচে কড়া মার্কিংয়ে থাকলেও দারুণ কিছু বল বের করেছেন। মেসির সতীর্থরা সেই বলগুলো কাজে লাগাতে পারেননি। একবার অবশ্য সৌদি ডিফেন্ডার গোললাইন সেভও করেছেন। ম্যাচের শেষের দিকে আর্জেন্টিনা ডি বক্সের সামনে দুটি ফ্রি কিক পেয়েছিল। মেসির নেয়া সেই কিক থেকে গোল আসেনি।

ম্যাচের প্রথমার্ধটা ছিল একেবারে ভিন্ন রকম। শুরুতেই আর্জেন্টাইন প্রাধান্য। দশ মিনিটে পেনাল্টি থেকে মেসি গোল করে লিড এনে দেন। প্রথমার্ধে সৌদি আরব আক্রমণ করেছিল শুধু একটি। অন্যদিকে মেসির আর্জেন্টিনা সৌদির জালে বল পাঠিয়েছিল তিনবার। অফ সাইডের জন্য গোলগুলো বাতিল হয়েছে।

সৌদি আরব ম্যাচ জিতলেও বল পজেশন, আক্রমণ, শট অন টার্গেট সব কিছুতেই আর্জেন্টিনার চেয়ে পিছিয়ে ছিল। সৌদি আরব মূলত জিতেছে ৪৮-৫৩ মিনিটের একটি ঝড় আর গোলরক্ষকের দৃঢ়তায়।

এজেড/এটি/এনইউ/জেএস