কোচের জন্যই সেমিফাইনাল খেলেছিল কোরিয়া
বিশ্বকাপে এশিয়ার সেরা সাফল্য এশিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপেই। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে যৌথভাবে অনুষ্ঠিত আয়োজনে স্বাগতিক কোরিয়া সেমিফাইনালে খেলেছিল। বিশ্বকাপ ইতিহাসে এশিয়ার সেরা সাফল্য সেটাই। সেই স্কোয়াডে অন্যতম ফুটবলার ডু রি চা। তিনি এখন ফিফার টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য।
এই বিশ্বকাপে দক্ষিণ কোরিয়া খুব সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। দুই ম্যাচে মাত্র এক পয়েন্ট। আগামীকাল শেষ ম্যাচে কোরিয়ার প্রতিপক্ষ রোনালদোর পর্তুগাল। পরের পর্বে যেতে হলে এশিয়ার পরাশক্তিদের রোনালদোর হারানোর পাশাপাশি অন্য ম্যাচেও তাকিয়ে থাকতে হবে।
বিজ্ঞাপন
এশিয়ায় বিশ্বকাপ হলেও এবার আর এশিয়ার দলের সেমিতে খেলার সম্ভাবনা দেখছেন না কোরিয়ার এই সাবেক ফুটবলার,‘২০০২ বিশ্বকাপটা ব্যতিক্রম। এটা আর সম্ভব না। কারণ সেই বিশ্বকাপে কোচ গাস হিডিঙ্কের অধীনে ছয় মাসের বেশি সময় কাজ হয়েছে। সেই সময় আর এশিয়ায় সহসাই আসবে না। এশিয়ার দলগুলোর জন্য এই বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়াটাই হবে অনেককিছু।’
কাতার বিশ্বকাপের শুরুটা হয়েছিল এশিয়ার দল সৌদির চমক দিয়ে। আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে দুর্দান্ত শুরু করা সৌদি পরের পর্বের টিকিটই পেল না। এর কারণ সম্পর্কে এই কোরিয়ান ফুটবলার বলেন, ‘আসলে আমাদের এশিয়ান দলের সমস্যা ধারাবাহিকতা। গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচ। এক ম্যাচ ভালো খেললে পরের ম্যাচে আর সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারি না। কোরিয়া, সৌদি, ইরান সব দলের জন্যই এটা প্রযোজ্য।’
বিজ্ঞাপন
সেই ধারাবাহিকতা না থাকার কারণও খুজে বের করেছেন এখন ফিফার ট্যাকনিক্যাল স্টাডি কমিটির গ্রুপে কাজ করা এই ফুটবলার, ‘এশিয়ার টপ কোয়ালিটি ফুটবলারের সংখ্যা কম। টপ কোয়ালিটি ফুটবলারের সংখ্যা না থাকায় ইউরোপ ও লাতিন দলগুলোর সঙ্গে বরাবরই পিছিয়ে পড়তে হয়।’
কোরিয়ার সাবেক ফুটবলার জি সুং পার্ক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলতেন। এরপর কোরিয়ার অন্য কোনো ফুটবলার ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবের অন্যতম খেলোয়াড় হতে পারেননি। এটাকে উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘জাপানের কয়েকজন খেলোয়াড় ইউরোপে খেলে তবে সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে নয়। পার্কের মতো খেলোয়াড় সব সময় আসে না।’
ইউরোপ, আমেরিকার চেয়ে এশিয়ার পিছিয়ে থাকার কারণ সম্পর্কে তার ধারণা, ‘সিস্টেমের জন্যই এশিয়া পিছিয়ে। এখানে টেকনিক-ট্যাকটিসের কাজ হয় ১৫-১৬ বছর বয়সে। ঐ বয়সে ইউরোপ, লাতিনের ফুটবলাররা অনেক পরিপক্ব।’ এবারের বিশ্বকাপে আফ্রিকার দেশগুলোর কোচ আফ্রিকানই। এশিয়ায় বিদেশি কোচ কাজ করছেন বেশি। এই প্রসঙ্গে তার মত, ‘এশিয়ায় অভিজ্ঞ কোচের সংখ্যা কম। এটাও ঠিক কোচদের উপর আস্থা না রাখলে তারাও অভিজ্ঞ হবে না। এশিয়ান ফেডারেশনগুলোর নিজস্ব কোচের দিকে নজর দেওয়া উচিত।’
কোরিয়া, জাপান বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশ। ইউরোপ, আমেরিকার অনেক দেশের চেয়ে ফুটবলে পিছিয়ে। এই বিষয়ে তার ব্যাখ্যা, ‘ফুটবলে অনেক অর্থের প্রয়োজন। তবে এর আগে দরকার মেধা। অর্থ দিয়ে মেধা তৈরি করা যায় না। মেধাবী ফুটবলারের সংখ্যা আমরা পিছিয়ে।’
২০ বছর আগে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছিল এশিয়ান দেশ। ২০ বছর পর এশিয়ান দল ফাইনালের স্বপ্ন না দেখতে পারার কারণ সম্পর্কে তার মত, ‘ইউরোপ এগিয়েছে অনেক। আমরা সেভাবে এগুতে পারেনি। ফলে ব্যবধানটা ক্রমেই বেড়েছে।’
এজেড/এটি/এনইআর