স্টেডিয়াম এলাকায় খুবই পরিচিত মুখ চান মিয়া। প্রকৃত নাম চান মিয়া হলেও ক্রীড়াঙ্গনে চান্দু নামেই চেনেন সবাই। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের গ্রাউন্ডসম্যান চান্দু। গত এক যুগের বেশি সময় বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত জাতীয়-আন্তর্জাতিক সকল ম্যাচের মাঠই প্রস্তুত হয়েছে তার হাতে। ফুটবলের সেই চান্দু আজ হ্যান্ডবল খেলোয়াড় হিসেবে অবসর নিলেন। 

ক্রীড়াঙ্গনের নিবেদিতপ্রাণ সংগঠক ছিলেন মনসুর আলী। যার একাধারে ফুটবল, হ্যান্ডবল, কাবাডি, ভলিবল ও টেবিল টেনিস দল ছিল। মনসুরের হ্যান্ডবল দলে নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন চান্দু। গত প্রায় দুই দশক মনসুর স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে প্রথম বিভাগ হ্যান্ডবল লিগ খেলেছেন। ৪৯ বছরে এসে হ্যান্ডবলে জার্সি খুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। 

আজ মনসুর আলী স্টেডিয়ামে পূর্বাচলের বিপক্ষে যখন শেষ ম্যাচটিও খেলতে নামেন চাপের মধ্যে, ‘কমলাপুর স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ চলছে। মাঠ তৈরি করে আমি খেলতে এসেছি। মাঠে কোনো সমস্যা হলে আমাকে খুঁজবে সবাই। এমন চাপ নিয়েই গত দুই দশক খেলে গিয়েছি।’ নিজের শেষ ম্যাচে একটি গোলও করেছেন চান্দু।

প্রথম বিভাগ হ্যান্ডবল লিগ এক-দুই সপ্তাহের মধ্যেই শেষ হয়। এই লিগ অনেক সময় ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ফুটবল সূচির মধ্যে পড়ে যায় আবার কখনও ফুটবলের অফ সিজনে পড়ে। ফুটবলের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই হ্যান্ডবল খেলে গেছেন চান্দু, ‘২০১০ সাল থেকে ফুটবল ফেডারেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রাউন্ডসম্যান হিসেবে কাজ করছি। এর আগে চুক্তিভিত্তিক ছিলাম। ফুটবলের কাজের ফাঁকে ফাঁকে হ্যান্ডবল অনুশীলন ও ম্যাচ খেলেছি।’ 

হ্যান্ডবল ক্যারিয়ারের ১৮ বছরই মনসুরে কাটিয়ে দেয়ার কারণ সম্পর্কে চান্দু বলেন, ‘মনসুর ভাই আমার অত্যন্ত প্রিয় মানুষ। আমি হ্যান্ডবল পছন্দ করি। তিনি খেলার সুযোগ দিয়েছেন এজন্য খেলি। এখানে টাকা-পয়সার কোনো বিষয় নেই।’

চান্দুর পরিচিতি এখন ফুটবলের হলেও তার ক্রীড়াঙ্গনে আর্বিভাব টেবিল টেনিসের মাধ্যমে। হ্যান্ডবলে জার্সি-বুট তুলে রাখার দিনে স্মরণ করলেন সেই মুহূর্তও, ‘টেবিল টেনিসের টিপু স্যার (সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম টিপু) আমাকে ক্রীড়াঙ্গনে এনেছেন। প্রথমে টেবিল টেনিসে কাজ করতাম। এরপর ডানা আপা ব্যাডমিন্টনে কাজ দিয়েছেন। পরবর্তীতে ফুটবলের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি। এখন ফুটবলের চান্দু হলেও হ্যান্ডবল আমার প্রাণ। দিনের একটা সময় হ্যান্ডবলে আমি আসিই এবং হ্যান্ডবলের স্টাফরা জানে আমি কোথায়, কখন কি করি।’

হ্যান্ডবলকে ভালোবাসা চান্দুর বিদায়টাও সুন্দর করে দিয়েছে হ্যান্ডবল ফেডারেশন। খেলা শেষে হ্যান্ডবল ফেডারেশনের সকল কর্মকর্তারা ফুলের মালা দিয়ে চান্দুকে বিদায় দেন। খেলোয়াড় হিসেবে বিদায় নিলেও কর্মকর্তা হিসেবে হ্যান্ডবলের সঙ্গেই থাকতে চান চান্দু।

এজেড/এনইআর