সাবিনা খাতুনরা গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশকে সাফ শিরোপা এনে দিয়েছিলেন। এরপর থেকে তাদের আর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ মিলছে না। গত মাসে সিঙ্গাপুর সফর বাতিলের পর এবার মিয়ানমারে অলিম্পিক বাছাই টুর্নামেন্টেও খেলা হচ্ছে না সাবিনাদের। এ নিয়ে ফুটবল সংশ্লিষ্টদের মুখে উঠে আসছে নানা সংকটের কথা।

আগামী এপ্রিলে হতে যাওয়া অলিম্পিক বাছাই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ না করার পেছনে আর্থিক সংকটকে কারণ হিসেবে দেখিয়েছে বাফুফে। কিন্তু ফুটবল সংশ্লিষ্ট অনেকেই দক্ষিণ এশিয়ার সেরা দলের এই আর্থিক সংকটের বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না। অর্থনীতির চেয়ে বাফুফের ব্যবস্থাপনার সংকটকেই বড় করে দেখছেন ফেডারেশনের অনেকে।

সাফ জেতার পর দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নারীদের সংবর্ধনা দিয়েছে। সাফজয়ী নারীদের আর্থিকভাবে পুরস্কৃত করার পাশাপাশি দেশের একটি শীর্ষ গণমাধ্যম নারী ফুটবলের উন্নয়নের জন্য বাফুফে’কে এক কোটি বিশ লাখ টাকার চেক দিয়েছিল। এরপর গত চার মাসে কমলাপুরে অনুষ্ঠিত বয়সভিত্তিক সাফ ও এএফসি’র টুর্নামেন্টে অংশ নেয় নারী দল। অর্থাৎ, এ সময়ের মধ্যে তাদের কোনো বিদেশ সফর ছিল না। এমনকি ফুটবলাররা আবাসিক ক্যাম্প করে বাফুফে ভবনেই। এরপরও তাদের জন্য বিশেষ অনুদানপ্রাপ্ত অর্থ ব্যয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, ‘আমাদের কাছে অর্থ থাকলে অবশ্যই দলকে পাঠাতাম। আমরা যে অর্থ (অনুদান) পেয়েছিলাম সেটি ইতোমধ্যে খরচ করেছি।’ 

আরও পড়ুন : হদিস নেই দেশের দুই ঐতিহাসিক ট্রফির!

সাফ জেতার পর দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নারীদের সংবর্ধনা দিয়েছে। সাফজয়ী নারীদের আর্থিকভাবে পুরস্কৃত করার পাশাপাশি দেশের একটি শীর্ষ গণমাধ্যম নারী ফুটবলের উন্নয়নের জন্য বাফুফে’কে এক কোটি বিশ লাখ টাকার চেক দিয়েছিল। এরপর গত চার মাসে কমলাপুরে অনুষ্ঠিত বয়সভিত্তিক সাফ ও এএফসি’র টুর্নামেন্টে অংশ নেয় নারী দল। অর্থাৎ, এ সময়ের মধ্যে তাদের কোনো বিদেশ সফর ছিল না। এমনকি ফুটবলাররা আবাসিক ক্যাম্প করে বাফুফে ভবনেই। এরপরও তাদের জন্য বিশেষ অনুদানপ্রাপ্ত অর্থ ব্যয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ।

দেশের ফুটবলের সিংহভাগই বসুন্ধরা গ্রুপেরই পৃষ্ঠপোষকতায় হয়ে থাকে। বসুন্ধরা গ্রুপের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাফুফেরই সহ-সভাপতি। বাফুফের মার্কেটিং বিভাগের মাধ্যমে পৃষ্ঠপোষকতা সেভাবে পরিলক্ষিত হয় না। আবার পৃষ্ঠপোষক আকৃষ্ট হয় না পুরুষ ফুটবলে ব্যর্থতার কারণে। সাফজয়ী নারী দল আর্থিক কারণে টুর্নামেন্ট খেলতে পারছে না। সেখানে মার্কেটিং বিভাগের স্পন্সর আনার দায় সম্পর্কে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগের বক্তব্য, ‘আমাদের মার্কেটিং বিভাগ কাজ করছে। আমরা ঢাকা ব্যাংক ও বসুন্ধরার সঙ্গে রয়েছি। বিদ্যমান স্পন্সরদের কিছু শর্তও মানতে হয়। এজন্য অনেক আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের স্পন্সর আমরা গ্রহণ করতে পারি না। এরপরও আমাদের চেষ্টা চলমান।’ 

অনেক আগে থেকেই অলিম্পিক বাছাইয়ের এন্ট্রি দেওয়া ছিল। জানুয়ারিতে অলিম্পিক বাছাইয়ের গ্রুপিং হলেও ভেন্যু নির্ধারণ হয়েছে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে। স্বাগতিক না হতে পেরেই মূলত সাবিনাদের অলিম্পিক ভাগ্য ঝুলছে বলে জানান সোহাগ।

অর্থাৎ, স্বাগতিক হতে না পারার বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে রাখেনি দেশের এই ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

আরও পড়ুন : স্টাফ প্রায় একশ, মাঠে এক চান্দু

এদিকে, ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে মিয়ানমারে ভেন্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়। জাতীয় পুরুষ ফুটবল দল সৌদি আরবে অনুশীলন করতে যায় ৫ মার্চ। ১০-১১ দিনের অনুশীলনের জন্য ঢাকা টু মদীনা আসা যাওয়ার টিকিটে ৭০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। প্রীতি ম্যাচের জন্য হুট করে এত ব্যয় করে, বাফুফে এখন নারী টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে পিছু হটছে। বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 

‘আমাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সেই সীমাবদ্ধতা অনুসরণ করেই আমাদের পরিকল্পনা গ্রহণ করা বাঞ্চনীয়।’

তবে বাফুফের নির্বাহী কমিটির অনেকের মতে, জামালদের সৌদি আরবে না পাঠিয়ে সাবিনাদের মিয়ানমার পাঠানো শ্রেয় ছিল। 

চলতি অর্থ বছরে ফুটবলের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য বাফুফে সরকারের কাছে পাঁচ বছর মেয়াদী প্রকল্প জমা দিয়েছিল। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় বাফুফের প্রকল্পে অসম্মতি জানিয়েছে। ফুটবল সংশ্লিষ্টদের অনুমান, মিয়ানমারে সাবিনাদের না পাঠিয়ে সেই প্রকল্প আদায়ের চেষ্টা জোরদার করবে বাফুফে। এই বিষয়ে অবশ্য বাফুফের কেউ আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেননি। তবে সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, ‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যে একটি সংবাদ সম্মেলন করে সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা দেওয়া হবে।’

এজেড/এএইচএস