ছবি: সংগৃহীত

দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ব্রাদার্স ইউনিয়ন। গোপীবাগ ক্লাব প্রাঙ্গনের পাশেই রয়েছে সুবিশাল মাঠ। সারা দেশজুড়ে এটি ব্রাদার্স ক্লাবের মাঠ হিসেবে পরিচিতি পেলেও এর মালিকানা মূলত বাংলাদেশ ব্যাংকের। গতকাল এই মাঠে ইট,বালু নিয়ে কাজ শুরু হওয়ায় ক্লাব কতৃপক্ষ এবং এলাকাবাসী খানিকটা সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন। 

ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেডের ডিরেক্টর ইনচার্জ মহিউদ্দিন আহমেদ মহী বলেন, 'মাঠের মালিকানা বাংলাদেশ ব্যাংকের কিন্তু আমরাই এই ক্লাব মূলত ব্যবহার করি। বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো অনুষ্ঠান বা খেলাধূলা আয়োজন করলে আমাদের চিঠি দিয়ে অবহিত করে। মাঠে কাজ শুরু করছে কিন্তু আমাদের অবহিত করেনি।’

ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের শঙ্কা ওয়াকওয়ে নির্মাণের মাধ্যমে মাঠের পরিধি কমবে এবং সামনে আরো কিছু নির্মাণ করলে এই মাঠ আর খেলার উপযোগী থাকবে না। তবে ক্লাবের এই শঙ্কা অনেকটাই দূর করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো: মেজবাউল হক।

তিনি বলেন, 'খেলার মাঠ সুরক্ষিত থাকবে। এই মাঠে আমরাও নানা খেলাধূলার আয়োজন করি। পাশেই আমাদের ব্যাংক ক্লাবও রয়েছে। মাঠের পরিবেশ সুন্দর করতে এবং মাঠের সৌন্দর্যবধনের কাজে ওয়াকওয়ে নির্মিত হচ্ছে, মাঠের কোনো ক্ষতিসাধন হবে না।’

বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো খেলাধূলা বা অনুষ্ঠান আয়োজন করতে ক্লাবকে অবহিত করে। চলমান কাজের ব্যাপারে ক্লাব অবহিত নয়। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্রের বক্তব্য, 'খেলাধূলা বা অনুষ্টান আয়োজনের ক্ষেত্রে আমরা অবহিত করি কারণ সেই সময় তাদের অনুশীলন বা কর্মকান্ড যেন না রাখে বা সেভাবে সমন্বয় করতে পারে এজন্য। আর এখন যে কাজ চলছে এতে খেলাধূলা ও অনুশীলনে কোনো ব্যঘাত ঘটবে না। মাঠের মালিকানা ব্যাংকের ফলে এখানে ক্লাবকে অবহিত করা আবশ্যকীয় নয়।’

ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির সাবেক অনেক ফুটবলার ও বর্তমান পরিচালকবৃন্দের বক্তব্য, 'মাঠ বাংলাদেশ ব্যাংকের মালিকানা হলেও বঙ্গবন্ধু মৌখিক আদেশে ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবকে দিয়েছেন এবং পরবর্তী সরকার প্রধানরাও এমন স্বীকৃতি দিয়ে এসেছেন।’

মাঠের মালিকানা এবং ব্যবহার সম্পর্কে ব্যাংকের মুখপাত্রের বক্তব্য, 'মাঠের মালিকানা ও কাগজপত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মৌখিক আদেশকে সম্মান প্রদর্শন করেই ব্যাংক ক্লাবকে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে আসছে। ২০০৫ সালে ব্যাংক ও ক্লাব দুই পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর হয়। সেই ভিত্তিতেই চলছে এখন।'

২০০৫ সালের ফেব্রয়ারি মাসে সেই সমঝোতা স্বারকে ব্রাদার্সের পক্ষে সাইফুদ্দিন মানিক, চাষী নজরুল ইসলাম স্বাক্ষর করেছেন। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে করেছেন ব্যাংকের নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান। চুক্তির অন্যতম শর্ত হচ্ছে, ক্লাব শুধু খেলাধূলার ক্ষেত্রেই মাঠ ব্যবহার করতে পারবে। ক্লাব এই মাঠে কিছু নির্মাণ বা স্থাপন করলে ব্যাংকের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে এবং ব্যাংকও এই মাঠে খেলাধূলা,অনুষ্ঠান আয়োজন করলে ক্লাবকে অবহিত করবে।

এজেড/এইচজেএস