ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মালিবাগে একটি ফ্ল্যাটে রুমে গুটিসুটি করে শুয়ে রয়েছেন এক সময়ের দাপুটে গোলরক্ষক মোহাম্মদ মহসিন। বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ফুটবলারের জীর্ণ-শীর্ণতার খবর পেয়ে আজ ছুটি গিয়েছিলেন তার সময়কার ফুটবলার ও সংগঠকরা। নিজের বাসায় এত সতীর্থদের দেখে মহসিনের মুখে ফুটল হাসি। 

সাবেক ক্রীড়াবিদ-সংগঠকদের দুঃখ-দুর্দশায় আব্দুল গাফফার সব সময় এগিয়ে যান। মহসিনের ক্ষেত্রেও তিনি সাবেক ফুটবলারদের নিয়ে হাজির হয়েছেন। অন্য সবার চেয়ে মহসিনের কন্ঠে গাফফারের প্রতি ভালোবাসাই ঝরল বেশি, 'আমার এই ভাই (গাফফার) এসেছে খুব ভালো লাগছে।'

বয়স মাত্র ষাট হলেও অনেক কিছুই স্মৃতিতে নেই। তার অনুজ সৈয়দ রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বিরকে আগে তুই সম্বোধন করলেও আজ বারবারই আপনি করে বলছিলেন। জোসি, বাবলু, রিয়াজ, জনি সহ অনেককেই সঠিকভাবে চিনতে পারেননি। নানা কথার ভিড়ে একটা কথাই বারবার বলছিলেন, 'আপনারা এসেছেন খুব ভালো লাগছে। এই ভাইয়ের (গাফফার) সঙ্গে আমার অনেক ছবি রয়েছে।’ সাব্বির, জোসি, জনি তাদের স্মৃতি তুলে ধরলেও বারবারই বলছিলেন, 'বাংলাদেশে একমাত্র আমারই আবাহনী, মোহামেডান ও মুক্তিযোদ্ধায় অধিনায়ক হওয়ার রেকর্ড রয়েছে।'

সাবেক ফুটবলারদের বিদায় নেয়ার মুহূর্তে হাজির হয়েছিলেন বাফুফের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন কর্তৃক মহসিনের জন্য ঘোষণাকৃত অর্থ হস্তান্তর করতেই তিনি এসেছিলেন। কাজী সালাউদ্দিনের নাম শুনেই পুলকিত হয়ে মহসিন বলেন 'বাহ! সালাউদ্দিন আমার জন্য টাকা ও লোক পাঠিয়েছে।' ৮২ সালে সালাউদ্দিনের পেনাল্টি ঠেকিয়ে মহসিন হওয়ার যাত্রা শুরু হয়েছিল।

সাবেক ফুটবলাররা অনেক সময় বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সমালোচনা করলেও মহসিনের জন্য তার তাৎক্ষণিক এই ব্যবস্থায় ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন। আব্দুল গাফফার বলেন, 'সালাউদ্দিন ভাই তাৎক্ষণিক অর্থ প্রদান ছাড়াও মাসিক ভিত্তিতে সাহায্যের কথা বলেছেন আমরা এটি সাধুবাদ জানাই। পাশাপাশি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতিকেও ধন্যবাদ। আগামীকাল বেক্সিমকোর মেডিক্যাল টিম সকালে এসে মহসীনকে হাসপাতালে ভর্তি করবে। তারা চিকিৎসার বিষয় দেখভাল করবে। 

হাসপাতাল থেকে সুস্থ ও স্বাভাবিক হয়ে ফেরার পর মহসিন কানাডায় ফিরে যেতে চাইলে সাবেক ফুটবলাররা সহায়তা করবে। মহসিন কানাডা থেকে দেশে ফিরেছেন মায়ের পাশে থাকতে। প্রায় নব্বই ছুই ছুই মহসিনের মায়ের পায়ে ব্যথা। মহসিনের পাশাপাশি তার মায়ের চিকিৎসার ব্যাপারেও সাবেক ফুটবলাররা পাশে থাকবেন বলে জানান।

এজেড/এইচজেএস