ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত সূচি ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনা। ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে গত বুধবার দেখা হয়েছিল দুই প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীর। যেখানে ৬৯ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মত ব্রাজিলকে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে হার উপহার দেয় আর্জেন্টিনা। তবে এমন ম্যাচের দিনেও দেখা মিলেছিল সহিংস ঘটনার। ম্যাচ মাঠে গড়ানোর আগেই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন দুই দেশের সমর্থকরা। 

নিকোলাস ওতামেন্ডির একমাত্র গোলে জয় পাওয়ার পর থেকেই এই ম্যাচ কেন্দ্রিক যাবতীয় আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে গ্যালারির সেই ঘটনা। দুই দেশের দুই তারকা লিওনেল মেসি আর নেইমার জুনিয়র তো বটেই এমন কাণ্ডে মুখ খুলেছেন স্বয়ং ফিফা প্রেসিডেন্ট জিওভান্নি ইনফান্তিনো। এই ইস্যুতে স্বাধীন তদন্ত হওয়ার কথাও রয়েছে। 

মাঠ ছেড়ে যাচ্ছেন মেসিরা

তবে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য ব্রাজিল ভক্তদের খুব একটা স্বস্তি দিবেনা। স্প্যানিশ গণমাধ্যম ডিয়ারো এএস এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাছাইপর্বের ম্যাচে পুলিশের হস্তক্ষেপ এবং ব্রাজিল সমর্থকদের এমন চড়াও হওয়ার ঘটনায় বেশ বড় রকমের শান্তিই পেতে যাচ্ছে সিবিএফ। পূর্বের রেকর্ড অনুযায়ী, মারাকানা কাণ্ডের পর তিন ধরনের শাস্তি হতে পারে ব্রাজিলের। 

২০২৩ সালে নতুন করে সংশোধন আনা ফিফার শৃঙ্খলা নীতিমালার ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী— হোম ক্লাব এবং ফেডারেশন ম্যাচের আগের মুহূর্ত, খেলা চলাকালীন সময় ও ম্যাচ শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময় পরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ওই সময়ের মধ্যে যেকোনো ধরনের ঘটনার দায় স্বাগতিক বোর্ডকে নিতে হবে। অর্থাৎ, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচে নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়ে পুরো দায় নিতে হবে ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনকে (সিবিএফ)। সে হিসেবে তাদের কোনো খুঁত থাকলে সিবিএফকে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। 

এক্ষেত্রে আগামী কয়েকটি হোম ম্যাচ নিরেপেক্ষ ভেন্যুতে কিংবা দর্শকশুন্য অবস্থায় খেলতে হতে পারে ব্রাজিলকে। একইসঙ্গে আছে আর্থিক জরিমানার বিধান। তবে এসবের চেয়ে বড় শাস্তি হতে পারে বাছাইপর্বের পয়েন্ট কর্তন। কোন কারণে পয়েন্ট কাটার সিদ্ধান্ত এলে বেশ বিপাকেই পড়তে হবে ব্রাজিলকে। ৬ ম্যাচ থেকে মাত্র ৭ পয়েন্ট অর্জন করেছে নেইমাররা। কোন কারণে পয়েন্ট কাটা গেলে তা দেশটির বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বড় বাঁধা হয়ে দেখা দিবে। 

এদিকে মাঠে এমন কাণ্ডের পর নিজস্ব ব্যাখ্যাও হাজির করেছে ব্রাজিলের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিবিএফ। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা দরকার যে ম্যাচ আয়োজন ও পরিকল্পনার অত্যন্ত সতর্কতা এবং কৌশলের আশ্রয় নিয়েছিল সিবিএফ। মাঠে থাকা দুই দলের প্রতিনিধি সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল, এমনকি রিও ডি জেনেইরোর সামরিক পুলিশের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। পুরো ম্যাচের আয়োজন— বিশেষ করে নিরাপত্তার বিষয়টি ঠিক রাখতে আমরা প্রশাসন ও নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সভায় নির্ধারণ করেছিলাম।’

জেএ