আগেই জার্মানির কাছে হেরে বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভেঙেছিল আর্জেন্টাইন যুবাদের। তবুও তাদের সামনে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের তৃতীয় হওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু সান্ত্বনার সেই জয়ও পাওয়া হলো না ‘জুনিয়র মেসিখ্যাত’ ক্লদিও এচেভেরিদের। কাতার বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় চমকের নাম ছিল আফ্রিকান দেশ মরক্কো। এবার অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে তেমনই চমক দেখাচ্ছিল মালি। যদিও তাদের ফাইনালে ওঠা হয়নি। তবে বাড়ির পথ ধরার আগে তারা তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে ৩-০ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার মানাহান স্টেডিয়ামে আজ (শুক্রবার) মুখোমুখি হয়েছিল এই যুব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পরাজিত হওয়া দু’দল। যেখানে বল দখল থেকে শুরু করে সবদিক থেকেই আধিপত্য ছিল মালির। আফ্রিকান এই দেশটির কাছে লিওনেল মেসির উত্তরসূরিরা কোনো পাত্তাও পায়নি। প্রথমার্ধেই আর্জেন্টাইন যুবারা দুই গোল হজম করে। পরে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নেয় মালি। তাদের হয়ে ইব্রাহিম দিয়ারা, মামাদো ডোম্বিয়া ও হামিদো মাকালো একটি করে গোল করেছেন।

এদিন ম্যাচের শুরুর দিকেই লিড নেয় আফ্রিকান ‍যুবারা। মাত্র ৯ মিনিটেই দারুণ এক শটে মালিকে এগিয়ে দেন ইব্রাহিম। শুরুতেই গোল খেয়ে আকাশী-সাদা জার্সিধারীরা কিছুটা ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়। মালি সেমিফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ২-১ গোলে হেরেছিল। বিপরীতে জার্মানির কাছে টাইব্রেকার খেলে হারের তিক্ত স্বাদ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। ম্যাচ শেষে আবেগতাড়িত আর্জেন্টাইন যুবারা আজ সেই শোক ভুলতে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল। কিন্তু তারা গোল তো পায়ইনি, উল্টো বিরতিতে যাওয়ার আগে দ্বিতীয়বার তাদের জাল কাঁপান মালির ফুটবলার ডোম্বিয়া।

দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনার খোলস ছেড়ে বের হওয়ার আগে তৃতীয় গোল হজম করতে হয়। ৪৭তম মিনিটে দারুণ ড্রিবলিংয়ে বল নিয়ন্ত্রণে রেখে গোল করেন মাকালো।  এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি আর্জেন্টিনা। ব্যবধান কমানোর চেষ্টায় সফল হননি এচেভেরি-রুবের্তোরা। যদিও শেষ পর্যন্ত উভয় দলই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মালির রক্ষণ ও গোলরক্ষকের দেয়ালে বারবার পরাস্ত হয়েছেন আলবিসেলেস্তে ফরোয়ার্ডরা। রেফারির শেষ বাঁশি বাজতেই মালির যুবারা বড় জয়ের আনন্দে মাতে।

এর আগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে কোয়ার্টার ফাইনালে ৩-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে বিদায় করিয়েছিল আর্জেন্টিনা। এক এচেভেরিতেই সেদিন সাম্বা বালকরা খেই হারিয়েছিল। এচেভেরি সেদিন হ্যাটট্রিক করেছিলেন। পরে সেমিফাইনালে তাদের বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় জার্মানি। রুদ্ধশ্বাস সেই ম্যাচটি নির্ধারিত সময় পর্যন্ত স্কোরবোর্ডে ৩-৩ সমতা দেখেছিল। এরপর ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ালে আর্জেন্টিনার দুটি শট ঠেকিয়ে দেন জার্মান কিপার। বিপরীতে পাঁচ শটের চারটিই জালে জড়িয়ে ফাইনালে ওঠে যায় জার্মানি।

এর আগে বয়সভিত্তিক ফুটবল আসরে কখনও শিরোপা জেতা হয়নি আলবিসেলেস্তেদের। এবার তারা সেই খরা ঘুচানোর স্বপ্ন দেখলেও, শেষ পর্যন্ত চতুর্থ অবস্থান নিয়ে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ আসর শেষ করেছে। 

এএইচএস