আগেই ইউরোপের পাট চুকিয়েছিলেন উরুগুয়ের তারকা ফরোয়ার্ড লুইস সুয়ারেজ। এরপর স্বদেশি ক্লাব ন্যাসিওনালের পর ব্রাজিলিয়ান ক্লাব গ্রেমিওতে তিনি বেশ সুখের সময় কাটাচ্ছিলেন। তবে দীর্ঘদিনের বন্ধু লিওনেল মেসি আমেরিকান ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে যোগদানের পর থেকে সুয়ারেজও সেখানে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন ওঠে। যাতে খুব বেশি সাড়া দেয়নি কোনো পক্ষই। তবে এরই মাঝে গ্রেমিও অধ্যায় শেষ করে ফেলেছেন সুয়ারেজ। ফলে আবারও তার নতুন গন্তব্য হিসেবে আলোচনায় মেসির দল মায়ামি!

সুয়ারেজের সঙ্গে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটির চুক্তি ছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। কিন্তু আকস্মিক এক সিদ্ধান্তে সেই চুক্তি থেকে সরে এসেছেন তিনি। এর আগে স্প্যানিশ গণমাধ্যম মার্কা জানিয়েছিল, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের পরেই ক্লাব ছেড়ে যাচ্ছেন এই স্ট্রাইকার। গুঞ্জন ছিল– মায়ামিতে যোগ দিতে চান এই স্ট্রাইকার। ক্লাবটিতে তার বন্ধু মেসির সঙ্গে জুটিবদ্ধ হতেও নাকি আগ্রহী সুয়ারেজ। তবে, সেসব শেষ পর্যন্ত কতটুকু বাস্তব হিসেবে ধরা দেবে সেটি সময়ই বলে দেবে।

এদিকে, গত রোববার রাতে অ্যারেনা দি গ্রেমিওতে ভাস্কো দা গামার বিপক্ষে গ্রেমিওর হয়ে শেষ ম্যাচ খেলেছেন সুয়ারেজ। সেদিনও দলের হয়ে তিনি গোল করেন। তারই একমাত্র গোলে জয় পায় গ্রেমিও। শেষ বাঁশি বাজার পর কানায় কানায় পূর্ণ গ্যালারির ভক্ত-সমর্থকরা দাঁড়িয়ে সম্ভাষণ জানান তাকে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী সোফিয়া এবং সন্তানরাও। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সুয়ারেজকে বিদায় জানিয়ে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটি লিখেছে, ‘আমাদের ইতিহাসের একটি সুন্দর অধ্যায় তোমাকে নিয়ে লেখা হলো। সেই অধ্যায়ের নায়ক হলে তুমি। যেখানেই থাকো, ভালো থাকো। আনন্দময় হোক তোমার জীবন।’

গ্রেমিও কোচ রেনাতো গোচো সুয়ারেজের ক্লাব ছাড়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। তাকে ক্লাবের অলটাইম গ্রেট উল্লেখ করে রেনাতো চলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই যে আমরা তাকে (সুয়ারেজ) মিস করতে যাচ্ছি, এখানকার সবাই তাকে ভালোবাসে। বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি আনন্দিত। তার মতো এমন যোগ্যতার ও প্রতিভাবান কাউকে পাওয়া মুশকিল। তাকে এখানে আরও কিছু সময় পেতে চায় অনেকে, কিন্তু এটি তার জন্যও কঠিন। সে এমন একজন ফুটবলার, যে নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে পেশাদারিত্বের দৃষ্টান্ত রেখে গেছে।’

ম্যাচ শেষে মায়ামিতে যোগদান প্রসঙ্গ ওঠে আসে উরুগুইয়ান তারকার সামনে। যদিও এ নিয়ে সুয়ারেজ কিছুটা অনিশ্চয়তা রেখে দিয়েছেন, ‘লম্বা ক্যারিয়ারের পর শরীর আমার হয়ে কথা বলছে, আমি ব্যথা অনুভব করছি। আমি সময়টা উপভোগ করতে চাই এবং তারপরই নিজের লম্বা ক্যারিয়ারের শেষটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাই। আমার বিশ্রাম ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো প্রয়োজন। তারপর নিয়তি ঠিক করবে ভবিষ্যৎ কী হবে।’

মেসি, সার্জিও বুসকেটস ও জর্দি আলবার সঙ্গে দীর্ঘদিন বার্সেলোনায় খেলেছেন সুয়ারেজ। আবারও ৩৬ বছর বয়সী এই তারকার সঙ্গে ইন্টার মায়ামিতে তাদের পুনর্মিলন হবে বলেই অনেকে মনে করছেন। তবে বাস্তবতাও কঠিন, ক্যারিয়ারের দীর্ঘ সময় ইনজুরিতে কাটানো সুয়ারেজের শরীর কতটা সময় তাকে খেলার অনুমতি দেবে সেটাই এখন বড় বিষয়।

এএইচএস