দারুণ তিনটি জয়ের পর ড্র। হতাশায় যেন ডুবেই গেলেন লুকা মদ্রিচ/ম্যানেজিং মাদ্রিদ

খেলাটা দেখে আপনি একটু নড়েচড়ে বসতে পারেন। যে দলটা এল ক্ল্যাসিকোয় গেল সপ্তাহেই ধরাশায়ী করেছিল বার্সাকে, সেই দলটাই কিনা ব্যতিব্যস্ত গেটাফের দারুণ সব আক্রমণ রুখতে! তবে শেষমেশ কোচ জিনেদিন জিদানের রিয়াল মাদ্রিদ অবশ্য গেটাফেকে রুখেছেও। তবে তাতে নিজেদের হয়ে গেছে এক অপূরণীয় ক্ষতি, গোলশূন্য ড্র করে লিগের নিয়ন্ত্রণটা তুলে দিয়েছে বার্সেলোনা আর অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে। 

অথচ গেল সপ্তাহটা কি স্বপ্নের মতোই না কেটেছিল কারিম বেনজেমাদের! চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার বিপক্ষে ২-১ গোলের দারুণ এক জয়, তার আগে-পরে লিভারপুলকে দুই লেগেই হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চার নিশ্চিত করা... তারপরই কিনা এল এই ধাক্কা!

মাঠের ফুটবলে যেমনটা হয়েছে, তাতে তো রিয়াল মাদ্রিদের একটা পয়েন্ট নিয়েই খুশি থাকার কথা। পেছন থেকে খেলা গড়ে আক্রমণে উঠেছে স্বাগতিক গেটাফে, সে আক্রমণ রুখতেই রীতিমতো হিমশিম খেয়েছে দলটি। নিজেরা যা কিছু প্রতি-আক্রমণে উঠছিল, কারিম বেনজেমা না থাকায় সামনে অভিজ্ঞতার অভাবে সেগুলোকেও গোলে রূপ দিতে পারছিল না রিয়াল। একটা পরিসংখ্যানই দৃশ্যটাকে তুলে ধরার জন্য যথেষ্ট, বলের দখলে পিছিয়ে থাকলেও প্রতিপক্ষ গোলের উদ্দেশে গেটাফের শট ছিল ১৯টি, ছয়টি ছিল লক্ষ্যে। অন্য দিকে রিয়াল মাদ্রিদের দশ শটের মাত্র দুটো ছিল গোল বরাবর!

কারণও ছিল বৈকি! চোট আর করোনাভাইরাসের কারণে দলে ছিলেন না ৮ জন খেলোয়াড়, যে কারণে রীতিমতো দল মাঠে নামানোই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদের জন্য। সামনে ২৯ দিনে দলকে খেলতে হবে আরও নয়টা ম্যাচ। ভবিষ্যতের কথা ভেবে এদিন তাই কোচ জিদান বিশ্রাম দিয়েছিলেন দলের এল ক্ল্যাসিকো জয়ের দুই নায়ক কারিম বেনজেমা ও টনি ক্রুসকে। সব মিলিয়ে বার্সেলোনার বিপক্ষে ম্যাচ থেকে দলে পরিবর্তন এসেছিল সাতটি। 

খর্বশক্তির দল নিয়ে শুরু থেকেই কোনঠাসা ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। রক্ষণে ছিলেন না সার্জিও রামোস আর রাফায়েল ভারানের মতো অভিজ্ঞ দুইজন, শুরু থেকেই তাই জিদানের শিষ্যদের মনোযোগের সিংহভাগ ছিল রক্ষণে। যার খেসারতটাও ভালভাবেই দিয়েছে রিয়াল। প্রথমার্ধে প্রতিপক্ষের তিনটে অন টার্গেট শটের বিপরীতে নিজেরা নিতে পেরেছিল কেবল একটি।

গেটাফে তিনটি অন টার্গেট শটের প্রথমটা পেয়েছে একেবারে শুরুর দিকেই। হাইমে মাতার শটটা শেষ মুহূর্তে রুখে দলকে বিপদমুক্ত রাখেন একাদশে প্রথমবারের মতো সুযোগ পাওয়া ভিক্তর চুস্ত। এরপরেই রিয়ালের একটা চেষ্টা বাতিল হয়েছে ভিএআরের কাঁটায়। মারিয়ানো ডিয়াজ বল জালে জড়ালেও রেফারি রিভিউতে দেখেন পাস রিসিভ করার সময় হাতের কিছু অংশ ছিল অফসাইডে। 

২৩ মিনিটে আবারও আক্রমণে উঠে আসে স্বাগতিকরা। তবে এবারও মাতা রয়ে যান গোলবঞ্চিত। এর কিছু পরে ডিয়াজের হেডার গোলরক্ষককে ফাঁকি দিলেও শেষ মুহূর্তে দাভিদ তিমোরের ক্লিয়ারেন্সে রক্ষা পায় গেটাফে। 

বিরতির পর আরও দুটো জোরালো আক্রমণ থেকে রিয়াল রক্ষা পেয়েছে গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার কল্যাণে। ৫৯ মিনিটে এনেস উনালের শটটা ঠেকান বেলজিয়ান গোলরক্ষক, এরপর ৭৮ মিনিটে আরও এক দফা নৈপুণ্যে রিয়ালকে বিপদমুক্ত রাখেন কোর্তোয়া। ফলে কোনোক্রমে গোলশূন্য ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল মাদ্রিদ। এর ফলে ৩১ ম্যাচ শেষে ৬৭ পয়েন্ট নিয়ে দলটি শীর্ষে থাকা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ থেকে পিছিয়ে পড়ল ৩ পয়েন্টে। এক ম্যাচ কম খেলা বার্সেলোনা ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে আছে তালিকার তৃতীয় স্থানে।

এনইউ